সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

মির্জাগঞ্জে ইটভাটার গাড়িতে ক্ষত-বিক্ষত গ্রামীন সড়ক

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০৪:৪৮ পিএম, ১০ এপ্রিল, ২০২১

পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে ইটভাটার ট্রাক-টলিতে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে পড়েছে গ্রামীন সড়কগুলো। মহাসড়কও এর কবল থেকে রেহাই পাচ্ছে না । ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি মাটি ও ইটবোঝাই করে ট্রাক-টলি  পরিবহনের কারণে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে পড়ছে উপজেলার অধিকাংশ গ্রামীণ সড়ক। ফলে কোটি কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত সড়কগুলো প্রায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে গেছে।

উপজেলার বটতলা থেকে  সিকদার বাড়ি হয়ে পশ্চিম সুবিদখালী পর্যন্ত ২ কিঃ মিঃ , ব্র্যাক অফিস পর দক্ষিন দিকে কাশিনাথ খালের গোড়া পর্যন্ত ১ কিঃ এবং বেগমপুর থেকে ডোনরাবাদ পর্যন্ত ২কিঃমিঃ মোট ৫ কিলোমিটার পাকা গ্রামীণ  সড়কের পাশে গড়ে উঠেছে ৩ টি ইটভাটা। পাকা সড়কে দশ টনের বেশি ওজনের মালবাহী ট্রাক চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকলেও এসব ভাটায় ৩০-৪০  টনের ট্রাক দিয়ে প্রতিদিন মাটি ও ইট পরিবহন করা হয়। ফলে নির্মাণের কিছু মাসের  মধ্যেই এই সড়কগুলো সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। 

সড়কটি শুস্ক মৌসুমে ধূলোময় ও বর্ষার মৌসুমে কর্দমাক্ত হয়ে পড়ে। এই এলাকার  শিক্ষার্থীরাসহ সাধারণ মানুষ  ঝুঁকি নিয়ে  যাতায়াত করছে। ভারি ট্রাক পরিবহনের কারণে এসব সড়কের  সেতুগুলো মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে ।অন্যদিকে  ফসলি জমি ও সরকারি খালের মাটি কাটার অভিযোগ রয়েছে এসব ভাটার বিরুদ্ধে। ফসলি জমির টপ সয়েল যাচ্ছে ইটভাটায়।ফলে হুমকিতে রয়েছে আবাদি জমি। এসব ইটভাটর মাটির চাহিদা পূরন করতে নিয়মনীতি উপেক্ষা করে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ফসলি জমির মাটি কেটে ইটভাটায় সরবরাহ করছে।দিনে দিনে কমছে জমির পরিমান ও মাটির উর্বরতা শক্তি।  দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গ ও প্রশাসনের নাকের ডগায় বছরের পর বছর ধরে ফসলি জমি বিনষ্ট অব্যাহত রয়েছে। 

উপজেলার সুবিদখালী  এলাকার রিকশাচালক  মনির  বলেন, পাকা সড়ক কইরা লাভ কী? ইটভাটার মাটি ও ইট টানার ট্রাকে সড়কটা শেষ কইরা দিছে। ধুলায় আর ভাঙ্গার কারণে গাড়ি  চালানো যায় না।

উপজেলার পশ্চিম সুবিদখালী গ্রামের সরোয়ার বলেন, ফসলি জমির মাটিগুলো এভাবে ইটভাটায় নিতে থাকলে ফসল ফলানোর মতো কোন জমি থাকবে না।

ইউনাইটেড ব্রিকফিল্ড এর শেয়ার হোল্ডার মোঃ সেলিম খান বলেন, আমাদের গাড়ি হাইওয়েতে চলে, গ্রামীন সড়কে যায় না।আমারা শুধু যেখানে গের কাটে তারই মাটি আনি।

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ আরাফাত হোসেন বলেন, ফসিল জমি কেটে যদি সেখানে বালু দিয়ে ভরাট করে তাহলে জমির উর্বরতা শক্তি কমে যায়। এতে ফসলের ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। 

উপজেলা প্রকৌশলী  (দায়িত্বরত) আজিজুর রহমান   বলেন, গ্রামীন সড়কে  অতিরিক্ত লোড নিয়ে গাড়ি চালানোর নিয়ম নাই। এতে সড়ক ক্ষতিগ্রস্থ হবে।এজন্য স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও সচেতন লোকদের ভূমিকা রাখতে হবে।না হলে গ্রামীণ সড়ক টেকানো যাবে না।

এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোসাঃ তানিয়া ফেরদৌস জানান, এসমস্ত গাড়ি ক্ষেত খামারে থাকার কথা।এসব  গাড়ি সড়কে অতিরিক্ত লোড নিয়ে চলাচল করলে রাস্তা-ঘাট ক্ষতিগ্রস্থ হবেই।কেউ যদি তার ব্যক্তিগত জমির মাটি বিক্রি করে সেক্ষত্রে আমাদের কিছু করনীয় নাই। তবে সরকারি জমির মাটি কেটে নিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

একুশে সংবাদ/র/আ

সারাবাংলা বিভাগের আরো খবর