সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

রবিউল ইসলাম নয়নসহ বিএনপির ৭৩ জনের সাজা

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০৭:১১ পিএম, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৩

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়নসহ বিএনপির ৭৩ নেতাকর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রাজধানীর কলাবাগান, বংশাল ও কোতয়ালী থানার তিনটি মামলায় ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট এ কারাদণ্ড দেন। এসব মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এসব মামলায় ৩৮ জন আসামিকে খালাস দেয়া হয়। 

তন্মধ্যে কলাবাগান থানার মামলায় রবিউল ইসলাম নয়নসহ ৪০ জনকে পৃথক তিন ধারায় দেড় বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও দুই হাজার ৭ শত টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা অনাদায়ে তাদের আরও ১৭ দিন বিনাশ্রম কারাভোগ করতে হবে। মামলার তিন ধারার সাজা একসাথে চলবে বলে রায়ে উল্লেখ করেছেন বিচারক। ফলে তাদের একবছর কারাভোগ করতে হবে। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়া এ মামলার চার্জশিটভুক্ত অপর ২৬ আসামিকে খালাস দেয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী আবু আব্দুল্লাহ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

এ মামলায় কারাদণ্ডপ্রাপ্ত অন্যান্য আসামিরা হলেন- মোঃ সিরাজুল ইসলাম, মোঃ শাহ আলম সৈকত, মোঃ জাকির হোসেন, মোঃ নোমান, মোঃ এলিন, মোঃ ওয়াসিউল হাসিব আনিক, পলাশ হাওলাদার, মোঃ আমিরুল বেপারী চৌধুরী, মোঃ শফিকুল ইসলাম, মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন, মোঃ আলমগীর হোসেন, মোঃ রিপন আহম্মেদ, মোঃ আশরাফুল ইসলাম, শাহ পরান, মোঃ মাহমুদুল হাসান রুম্মান, মোঃ কামাল, মোঃ ফারুক, মোঃ ফরহাদ, মোঃ ইসমাইল শেখ, মোঃ জুয়েল, মোঃ শফিকুল ইসলাম, মোঃ বাচ্চু মিয়া, মোঃ রবিউল ইসলাম, মোঃ মোস্তফা, মোঃ রুবেল, মোঃ রুবেল হোসেন, সোহেল, মোঃ সিদ্দিক, মোঃ ফয়সাল, মোঃ শহিদুল, মোঃ রাসেল, আঃ লতিফ, মোঃ রুবেল, মোঃ মনির হোসেন, মোঃ রিয়াজুল হাসান রাসেল, মোঃ রাজিব হাসান শিবলু, মোঃ মাহফুজ (চঞ্চল), জসিম রানা জসিম, জোবায়ের হোসেন ও অনুপ চন্দ্র রায়। 

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০১৩ সালের ১৩ নভেম্বর পুলিশের কাজে বাধা ও ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগে এ মামলাটি করে পুলিশ। মামলাটি তদন্ত শেষে ২০১৪ সালের ৩০ নভেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। মামলার বিচার চলাকালে ৬ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন। 

বংশাল থানার মামলায় বিএনপির ২৫ জনের কারাদণ্ড, এদিকে ২০১৮ সালে ঢাকার বংশাল থানায় দায়ের করা নাশকতার আরেক মামলায় বিএনপির ২৫ নেতাকর্মীকে পৃথক দুই ধারায় তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। কারাদণ্ডের পাশাপাশি তাদের প্রত্যেককে দুই ধারায় চারহাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১৪ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। 

এ মামলাকারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- সোহেল, মোঃ রাজু, বল্লম বাজু, সিরাজ, মামুন, মোঃ রনি, মোঃ মঈন, আজিম, মোঃ ওমর ফারুক, ইমরানুল হক ওয়াহিদ, মোঃ মামুনুর রশিদ মামুন, মাসুদ রানা, তাইজুদ্দিন, নাজিবুল্লাহ, মোঃ শাহজাহান খান, বিল্লাল হোসেন, আমির হোসেন বিপু, স্বপন, সৈয়দ মঞ্জুরুল হক, আরিফুর রহমান, রাজিয়া আলম, মোঃ জুবায়ের আলম, তাইজু, সাঈদ ও হাজী মোঃ মাছুম। 

রবিবার (১০ ডিসেম্বর) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শেখ সাদী এ রায় ঘোষণা করেন। 

মামলার সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর বংশাল থানা এলাকায় বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে মিছিল বের করে বিএনপি। মিছিল চলাকালে নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় বংশাল থানার এসআই মো. আজাহার হোসেন বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় পেনাল কোড ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে অভিযোগ আনা হয়। 

মামলাটি তদন্ত শেষে ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে ২০১৯ সালের ৩০ জুন বংশাল থানার এসআই মো. আবু সাঈদ চৌধুরী আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. হাসিবুল হকের আদালত মামলার চার্জগঠনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক বিচারকাজ শুরু করেন। বিচার চলাকালে চার্জশিটভুক্ত ১৫ জন সাক্ষীর মধ্যে ৩ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন। 

কোতয়ালী থানার মামলায় ৮ জনের কারাদণ্ড, অবরোধে নাশকতার অভিযোগে রাজধানীর কোতয়ালী থানার আরেক মামলায় বিএনপির ৮ নেতাকর্মীকে দেড় বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। কারাদণ্ডের পাশাপাশি তাদের প্রত্যেককে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও একমাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। 

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- আনোয়ারুল আজিম, হায়দার আলী বাবলা, সুমন হোসেন, শাহিন, আলাউদ্দিন, হীরা, রজ্জব আলী পিন্টু ও সেন্টু। এছাড়াও অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলার চার্জশিটভুক্ত ১২ আসামিকে খালাস দেয়া হয়েছে। 

রবিবার (১০ ডিসেম্বর) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরী এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে এ মামলায় আসামিদের কারাভোগকাল মূল দণ্ড থেকে বাদ যাবে বলেও উল্লেখ করেন বিচারক। 

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ১ অক্টোবর  বিএনপি-জামায়াতের অবরোধ চলাকালে পুরান ঢাকার বাবুবাজারে গাড়ী ভাংচুর ও যানবাহনে অগ্নিসংযোগের অভিযোগে মামলা দায়ের করে পুলিশ। কোতয়ালী থানার এসআই মো. আব্দুল হাকিম বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলা দায়েরের পর তদন্ত শেষে একই বছরের ২০ অক্টোবর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। 

মামলার বিচার চলাকালে মোট আটজন সাক্ষ্য আদালতে সাক্ষ্য দেন।

একুশে সংবাদ/এস কে

রাজনীতি বিভাগের আরো খবর