সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

গুজব প্রতিরোধ জেলা প্রশাসকদের চার কৌশল জানালেন প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০২:৪১ পিএম, ৫ মার্চ, ২০২৪

সাইবার নিরাপত্তা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব প্রতিরোধ জেলা প্রশাসকদের চারটি কৌশলের কথা জানিয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, গুজব প্রতিরোধের জন্য ডিসিদের সচেতনভাবে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

মঙ্গলবার (৫ মার্চ) ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক সম্মেলনের তৃতীয় দিনের তৃতীয় অধিবেশনে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডাক- টেলিযোগাযোগ বিভাগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের কার্য অধিবেশন শেষে  তিনি এ কথা জানান।

তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক বলেন, আমরা মনে করি, সরকার এবং জনগণের মধ্যে মাঠ পর্যায়ে সেতুবন্ধনের ভূমিকা পালন করে জেলা প্রশাসকরা। একদিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা, অন্যদিকে উন্নয়ন কার্যক্রম তদারকি করা। উন্নয়ন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসকদের যে দায়িত্ব রয়েছে, সেই বিষয়গুলো নিয়েই আমাদের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আমরা কি কি করতে পারি এবং তাদের কি প্রত্যাশা আমাদের কাছে, তাদের কি প্রয়োজন আছে ও তাদের কাছে আমাদের কি প্রত্যাশা এই বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

তিনি বলেন, ডিসিরা বলেছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব প্রতিরোধ করা, যখন পরীক্ষা হয়, তখন প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়া, না হওয়া অথবা ছাত্র-ছাত্রীদের বিরুদ্ধে যখন সাইবার বুলিং ও সাইবার ক্রাইম হয় সেই বিষয়ে তাদের (ডিসি) উদ্যোগ কি হতে পারে, সেই বিষয়ে জানতে চেয়েছেন। তারা কি ধরনের সহযোগিতা পেতে পারেন সেই বিষয়ে জানতে চেয়েছেন৷ আমরা বলেছি, আমাদের সাইবার নিরাপত্তা ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব প্রতিরোধ করার জন্য আমরা তাদের চারটি কৌশলগত বিষয়ে সচেতনভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছি।

কৌশলগুলো সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রথমত, ডিজিটাল ও এআই (আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স) লিটারেসি সচেতনতা তৈরি করা। দ্বিতীয়ত, প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করা। তৃতীয়ত, যেসব আইন রয়েছে, সেগুলোর শক্ত প্রয়োগ করা। চতুর্থ, পুলিশ প্রশাসন যাতে একাডেমিয়া, মিডিয়া এবং প্রাইভেট সেক্টরের সাথে সমন্বয় করে কাজ করে। এই চারটি কৌশল আমরা বলেছি, সাইবার সিকিউরিটি এবং স্যোশাল মিডিয়াতে গুজব প্রতিরোধের জন্য।

পলক বলেন, ডিসিদের আরেকটি চাহিদা ছিল, জেলা পর্যায়ে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ এবং প্রযুক্তিগত উন্নয়নের জন্য সেল স্থাপন করা। সেটা আমরা বিটিসিএল এবং ডিপার্টমেন্ট অব টেলিকম থেকে আমরা বিভাগ এবং জেলক পর্যায়ে আইসিটি সেল স্থাপনের ব্যাপারে আমরা আশ্বস্ত করেছি। পাশাপাশি আমাদের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে যে আইসিটি ও আইসিটি কমিটি আছে, তারা যেনো মাসে মাসে মিটিং করে বিভিন্ন ধরনের সাইবার ও ক্রিমিনাল এক্টিভিটিস প্রতিরোধের বিষয়ে আমাদের কাছে অভিযোগগুলো পাঠায়। যাতে আমরা সেসব অপরাধমূলক কার্যক্রমগুলো প্রতিরোধ করতে পারি।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ রয়েছে, ঢাকার বাইরে বিভাগ-জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে স্টার্টআপ কালচারটা ছড়িয়ে দেয়ার। আমরা জেলা প্রশাসকদের বলেছি, আপনারা জেলা পর্যায়ে একটা স্টার্টআপ চ্যালেঞ্জ আহবান করবেন। যেখানে আমরা আইসিটি বিভাগ থেকে আমাদের স্টার্টআপ ও নারী উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করার জন্য ফান্ডিং ও মেন্টরিং কোচিং সাপোর্ট দিব। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে আরো স্মার্ট কর্মসংস্থান তৈরি করা। এর পাশাপাশি আমার আরেকটা আহ্বান করেছি, বিভাগ-জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ১৮ হাজার দপ্তর রয়েছে তারা যাতে আমাদের বিটিসিএলের উচ্চগতির ইন্টারনেট জিপন রয়েছে সেটা যাতে ব্যবহার করেন। আমাদের ৪ লাখ উচ্চগতির ইন্টারনেট দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। অথচ আমরা মাত্র ৫৯ হাজার সংযোগ আমরা দিয়েছি। খুব স্বল্পমূল্যে উচ্চগতির ইন্টারনেট যদি তারা নেয় আমরা কোয়ালিটি নিশ্চিত করবো। তাতে আমাদের বিটিসিএল যে লসে আছে তা খুব সহজে লাভে নিতে পারব।  এ ধরনের বেশ কিছু প্রত্যাশা আমরা তাদের কাছে জানিয়েছি। আমার বিশ্বাস আমরা যদি তা বাস্তবায়ন করতে পারি তাহলে আগামী পাঁচ বছরে ৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশের যে চূড়ান্ত লক্ষ্য সেটি বাস্তবায়নে আজকের সভা খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

এবারের জেলা প্রশাসক সম্মেলনের আলোচ্যসূচিতে থাকছে ৩৫৬ প্রস্তাব। প্রস্তাবগুলোর জনসেবা বৃদ্ধি, জনদুর্ভোগ হ্রাস করা, রাস্তাঘাট ও ব্রিজ নির্মাণ, পর্যটনেন বিকাশ, আইন- কানুন বা বিধিমালা সংশোধন, জনস্বার্থ সংক্ষণের বিষয়গুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করা হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ২২টি প্রস্তাব পড়েছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ থেকে। সম্মেলনে সর্বমোট অধিবেশন ৩০টি। এর মধ্যে কার্য-অধিবেশন ২৫টি (১টি উদ্বোধন অনুষ্ঠান, ১টি স্পীকারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ এবং মতবিনিময় এবং ১টি প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ এবং সদয় নির্দেশনা গ্রহণ এবং অন্যান্য অনুষ্ঠানিকতা ২টি। এছাড়া অংশগ্রহণকারী কার্যালয়: ১টি (প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়)।


একুশে সংবাদ/আ.জ.প্র/জাহা
 

জাতীয় বিভাগের আরো খবর