সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

যা-কিছু হবে সংবিধান ও আইনের মধ্যেই হতে হবে: আইনমন্ত্রী

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০৯:৫৫ পিএম, ৪ নভেম্বর, ২০২৩

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বঙ্গবন্ধু তাঁর দেওয়া সংবিধানে জনগণকে প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক বানিয়েছেন। এই সংবিধানের ২৬-৪৭ অনুচ্ছেদে মৌলিক অধিকারের বিধান সন্নিবেশ করা হয়েছে। সেখানে সকল নাগরিকের সুযোগের সমতা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সংসদ কীভাবে গঠিত হবে, সরকার কীভাবে গঠিত হবে, নির্বাচন কীভাবে অনুষ্ঠিত হবে তার সকল বিধান সংবিধানে সুষ্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি বলেন, আগামীতে যা-কিছু হবে, সংবিধান ও আইনের মধ্য থেকেই হতে হবে। এর ব্যত্যয় হলে দেশ আবারও পিছিয়ে পড়বে।

 

‘জাতীয় সংবিধান দিবস ২০২৩’ উদ্‌যাপন উপলক্ষ্যে আজ শনিবার রাজধানীর র‌্যাডিসন হোটেলে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত এক সেমিনারে সভাপতির বক্তৃতায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

 

আইনমন্ত্রী বলেন, বিগত অর্ধশত বছরের অভিজ্ঞতা বলে, যখনই বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু প্রবর্তিত সাংবিধানিক শাসন থেকে বিচ্যুত হয়েছে, তখনই দেশে আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার ব্যাহত হয়েছে। দেশে অরাজক ও নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে এবং মৌলিক মানবাধিকার ভূলুণ্ঠিত হয়েছে। সর্বোপরি দেশের উন্নয়ন ব্যাহত হয়েছে। তাই অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। আগামীতে যা-কিছু হবে, সংবিধান ও আইনের মধ্যে থেকেই হতে হবে। এর ব্যত্যয় হলে আবারও জাতি পিছিয়ে পড়বে।

 

মন্ত্রী আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের অভিজ্ঞতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়ন করেছিলেন। বাঙালি জাতি স্বাধীনতার মাত্র ১০ মাসের মাথায় একটি গণমুখী ও বিশ্বমানের সংবিধান পেলেও এর পেছনের ইতিহাস অনেক বিস্তৃত ও কণ্টকিত। একটি গণমুখী সংবিধান পাওয়ার জন্য তৎকালীন পাকিস্তান আমলে সামরিক ও স্বৈরশাসকদের বিরুদ্ধে অনেক আন্দোলন করতে হয়েছে, অনেক রক্ত দিতে হয়েছে।

 

তবে বঙ্গবন্ধু তাঁর সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে সবসময় নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করেছিলেন। দাবি আদায়ে জনগণকে সম্পৃক্ত করেছিলেন। ছয় দফার সমর্থনে জনমত তৈরিতে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া এবং বেনাপোল থেকে তামাবিল পর্যন্ত দিন-রাত গণসংযোগ করেছিলেন। তিনি কখনোই জ্বালাও পোড়াও কিংবা সন্ত্রাসী কায়দায় দাবি আদায়ের রাজনীতি করেননি। পাকিস্তানি সামরিক শাসকরা তাকে বারবার মিথ্যা মামলায় কারাগারে পাঠালেও তিনি কখনোই সহিংস পন্থা অবলম্বন করেননি। অধিকার আদায়ে তিনি অহিংস আন্দোলনের পাশাপাশি আদালতের আশ্রয় নিয়েছিলেন, বলেন আনিসুল হক।

 

তিনি ইচ্ছে করলে একাত্তরের ৭ মার্চেই স্বাধীনতার চূড়ান্ত ঘোষণা দিতে পারতেন কিন্তু তা দেননি। তিনি সেদিন বাঙালি জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। কারণ বঙ্গবন্ধু ছিলেন একজন দূরদর্শী নেতা। তিনি নিজেকে কখনোই বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা হিসেবে পরিচিত হওয়ার সুযোগ দেননি। তিনি তাঁর-প্রগাঢ় রাজনৈতিক প্রজ্ঞার মাধ্যমে ধাপে ধাপে আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের ভিত্তিকে মজবুত করেছিলেন। ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ কালরাতে যখন পাকিস্তান হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র-নিরপরাধ বাঙালির ওপর অস্ত্র চালিয়েছিল ঠিক তখনই তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন এবং তা বিশ্বব্যাপী গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছিল, যোগ করেন মি. হক।

 

একুশে সংবাদ/প.আই.প্র/জাহা

জাতীয় বিভাগের আরো খবর