সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

পদ্মা রেল করিডোর সম্পূর্ণ খুলছে জুলাইয়ে

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ১১:১০ এএম, ১ মে, ২০২৪

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক উদ্বোধনের ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও পূর্ণাঙ্গ সেবা চালু হয়নি পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পের। গত বছরের ১০ অক্টোবর উদ্বোধন হলেও ২১ দিন পরে ১ নভেম্বর থেকে চালু হয় বাণিজ্যিক ট্রেন।

 

এরপর থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা থেকে চলছে তিনটি আন্তঃনগর ট্রেন খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস, বেনাপোলগামী বেনাপোল এক্সপ্রেস ও রাজশাহীগামী মধুমতী এক্সপ্রেস। পদ্মা সেতু দিয়ে আরও একটি কমিউটার খুলনাগামী নকশীকাঁথা এক্সপ্রেস ঢাকা থেকে যায়।

রেলসূত্র নিশ্চিত করেছে, ঢাকা-যশোর-খুলনা রুটে ট্রেন বর্তমানে ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ফরিদপুর-কুষ্টিয়া-দর্শনা হয়ে যায়। এত ঘুরে যশোর-খুলনা পৌঁছানোয় দূরত্ব বেড়ে হয়ে যায় ৩৬৭ কিলোমিটার, আর সময়ও লাগে কমপক্ষে সাড়ে ৭ ঘণ্টা। কিন্তু তিন মাস পরে জুলাই থেকে সোজা রুটে ট্রেন ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু-ভাঙ্গা-মধুমতি সেতু হয়ে যশোর যাবে। ফলে এ রুটের দূরত্ব ৩৬৭ কিলোমিটার থেকে ১৯৫ কিলোমিটার কমে দাঁড়াবে মাত্র ১৭২ কিলোমিটারে।  

ফলে এ রুটের যাতায়াতের সময় কমবে কমপক্ষে তিন ঘণ্টা। পরিবর্তিত সময়ে ঢাকা থেকে যশোর যেতে লাগবে সোয়া তিন ঘণ্টা এবং ঢাকা থেকে খুলনা ও ঢাকা থেকে বেনাপোল পর্যন্ত যেতে চার ঘণ্টা সময় লাগবে।  

পদ্মা সেতু দিয়ে যাবে নতুন আট জোড়া আন্তঃনগর

বর্তমানে ৪০ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পে মাত্র চার ট্রেন চালিয়ে এ রুটকে লাভজনক করতে পারছে না রেলওয়ে। এজন্য পদ্মা সেতু দিয়ে চলাচলকারী চার রুটে চলতি বছরে নতুন আট জোড়া ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা নিয়েছে রেলওয়ে। এ চার রুট হচ্ছে- ঢাকা-যশোর-খুলনা, ঢাকা-যশোর-বেনাপোল, ঢাকা-ভাঙ্গা-গোপালগঞ্জ, ঢাকা-ফরিদপুর-দর্শনা।  

রেলওয়ে সূত্র জানায়, এর মধ্যে খুলনা-ঢাকা রুটের দুটি আন্তঃনগর ট্রেন সুন্দরবন এক্সপ্রেস এক জোড়া চললেও সময় ও দূরত্ব কমে যাওয়ায় একটা রেক(ট্রেন সেট) দিয়েই দুই জোড়া ট্রেন চালানো হবে। সুন্দরবন প্রভাতী-গোধুলী নামে চলতে পারে এ দুইটি ট্রেন। অন্যদিকে ঢাকা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে চলাচলকারী চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেনটিও পদ্মা সেতু দিয়ে চলবে। এ ট্রেনের এক রেক(ট্রেন সেট) দিয়েই দুই জোড়া ট্রেন প্রভাতী-গোধুলী নামে চলতে পারে।  

আর ঢাকা-বেনাপোল রুটে পদ্মা সেতু চলা বেনাপোল এক্সপ্রেসও বর্তমান রুট পরিবর্তন করে ভাঙ্গা থেকে মধুমতী সেতু- যশোর হয়ে বেনাপোলের উদ্দেশ্যে যাতায়াত করবে। বর্তমানে বেনাপোল এক্সপ্রেসের এক রেক(ট্রেন সেট) দিয়েই দুই জোড়া ট্রেন প্রভাতী-গোধুলী নামে চলতে পারে। অন্যদিকে ঢাকা থেকে গোপালগঞ্জ পর্যন্ত রেলরুট চালু থাকলেও এখন পর্যন্ত কোন ট্রেন চলাচল করে না। এ রুটেও এক জোড়া ট্রেন চালানোর চিন্তা করছে রেলওয়ে।  

অন্যদিকে সুন্দরবন এক্সপ্রেস ও চিত্রা এক্সপ্রেস রুট পরিবর্তন করলে ঢাকা থেকে ফরিদপুর-কুষ্টিয়া-দর্শনা রুটে কোনো ট্রেন থাকছে না। এজন্য এ রুটে নতুন একটি রেক দিয়ে এক জোড়া ট্রেন চালাতে পদক্ষেপ নিচ্ছে রেলওয়ে।

এদিকে ঢাকা-কলকাতা রুটের আন্তর্জাতিক ট্রেন মৈত্রী এক্সপ্রেসও রুট পরিবর্তন করে পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকায় চলাচল করবে। বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী গনমাধ্যমকে বলেন, পদ্মা সেতু দিয়ে অতিরিক্ত ট্রেন চালুর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। খুলনা রুটে ট্রেন বাড়বে।

এ বিষয়ে রেল সচিব হুমায়ুন কবির গনমাধ্যমকে বলেছেন, পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্প পূর্ণাঙ্গভাবে চালু করে ঢাকা-খুলনা রুটে চিত্রা ও সুন্দরবন এক্সপ্রেস দ্বিগুণ করে চারটি ট্রেন চলবে। ঢাকা-বেনাপোল রুটেও বর্তমান সক্ষমতা (রেক) দিয়ে দুইটি ট্রেন চালানো সম্ভব। এ রুটের কাজ শেষের পথে, জুলাই মাসের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পুরোদমে চালুর জন্যে সময় চাওয়া হবে।  

রেল সচিব আরও বলেন, ঢাকা-দর্শনা ও ঢাকা-গোপালগঞ্জ রুটে এক জোড়া ট্রেন ইঞ্জিন ও বগি পাওয়া সাপেক্ষে চালু করা হবে। সব মিলিয়ে পদ্মা সেতু দিয়ে নতুন আট জোড়া ট্রেন  চালু করা হবে। আগামী দুই বছরের মধ্যে আরও ২০০টি ব্রডগেজ ট্রেন এলে এ রুটে সেবার মান ও ট্রেন সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে বলে জানিয়েছেন রেলসচিব।  

এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে এই রুটের দূরত্ব কমবে ১৯৫ কিলোমিটার এবং সময় কমবে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা। এর ফলে যাত্রীদের অর্থ ও সময় সাশ্রয় হবে।  

 

একুশে সংবাদ/এনএস

আন্তর্জাতিক বিভাগের আরো খবর