সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

কুকি-চিন আতঙ্কে ঘরছাড়া ৯৭টি পরিবারের ফিরে আসা

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ১০:২৭ এএম, ২২ নভেম্বর, ২০২৩

বাড়ি-ঘর, চাষাবাদ ফেলে প্রাণ হাতে পালিয়ে গিয়েছিলেন ৯৭টি পরিবার। কেন? পাহাড়ে যখন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সন্ত্রাসী তৎপরতা শুরু হয়, তখন আতঙ্কে বাড়ি-ঘর ফেলে পাণ রক্ষায় পালিয়ে গিয়েছিলেন তারা। সময়টা চলতি বছরের মার্চ-এপ্রিল নাগাদ। 

এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক। তাই পরিবারগুলোর নিজ ঘরে ফিরে আসা।  তবে মৌসুমে চাষ করতে না পারায় অধিকাংশ পরিবারে খাদ্য সংকট। অনেকে ধারদেনা করে, কেউ স্বজনদের সহযোগিতায় কোনো রকমে দিন কাটাচ্ছেন।

বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলার রোয়াংছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের পাইংক্ষ্যং পাড়ায় এমন তথ্য পাওয়া যায়। তাদের ভাষায় পাহাড়ে জুম চাষই তাদের একমাত্র অবলম্বন।

কিন্তু চলতি বছরের এপ্রিল মাসে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের সমস্যা বেড়ে যাওয়ায় জীবন বাঁচাতে বাড়ি-ঘর ছেড়ে প্রথমে জঙ্গলে, পরে আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নেন পাড়ার অধিকাংশ বাসিন্দা। এ কারণে এবার জুম চাষ করতে পারেননি তারা।

যারা পাড়ায় ফিরে এসেছে সবাই খাদ্য সংকটে আছে। কেএনএফ আতঙ্কে তারা বিভিন্ন এলাকায় চলে যাওয়ায় কেউ জুম চাষ করতে পারেনি।

কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সঙ্গে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির প্রথমবারের মতো স্বশরীরে বৈঠক হয় গত ৫ নভেম্বর। বান্দরবানের রুমায় মুনলাই পাড়ার কমিউনিটি সেন্টারে এ বৈঠক হয়। এরপর থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করে।

এমন পরিস্থিতিতে পাড়া ছেড়ে যাওয়া ৯৭ পরিবারের মধ্যে ৫৭টি পরিবার নিজ বাড়িতে ফেরেন শনিবার। বাড়িফেরা পরিবারগুলোর অধিকাংশই জুম চাষ করতে পারেনি। ফলে পরিবারগুলোতে দেখা দিয়েছে চরম খাদ্য সংকট।

পাইক্ষ্যং পাড়ার কারবারি (পাড়াপ্রধান) পিতর বম জানান, গত এপ্রিল থেকে পাড়াবাসী যে যার মতো এলাকা ছেড়ে পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছিল বিভিন্ন স্থানে। সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় গত শনিবার (১৮ নভেম্বর) ৫৭ পরিবার নিজ গ্রামে ফিরে এসেছে।

রোয়াংছড়ি সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেহ্লা অং মারমা জানান, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় পাইংক্ষ্যং পাড়া থেকে পালিয়ে যাওয়া অনেক পরিবার এখন নিজ এলাকায় ফিরে এসেছে। খাদ্য সংকটের বিষয়ে বান্দরবান জেলা পরিষদ, রোয়াংছড়ি উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে মৌলিক চাহিদাগুলোর বিষয়ে সহায়তা দেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বান্দরবান সদর জোন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহমুদুল হাসান জানান, দীর্ঘ নয় মাস পর পাইংক্ষ্যং পাড়ায় এসে পাড়াবাসীকে চিকিৎসা সহায়তা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি পাড়াবাসীর জন্য সার্বিক সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
 

একুশে সংবাদ/এএইচবি/এস কে 

আন্তর্জাতিক বিভাগের আরো খবর