সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

জাতিসংঘের প্রতিবেদনে জলবায়ু পরিবর্তন মানবতার জন্য লাল সংকেত

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০৫:৩১ পিএম, ৯ আগস্ট, ২০২১

সারা বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তনের ওপর মানুষের নেতিবাচক প্রভাবের ধারণা কোন অংশে মিথ্যা নয়। মানুষের হাতে বিশ্ব উত্তপ্তকারী বিপজ্জনক গ্যাস নির্গমন অব্যাহত থাকলে চলতি শতাব্দীর শেষ দিকেই সামুদ্রিক পানির উচ্চতা দুই মিটার পর্যন্ত বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান জাতিসংঘ। সোমবার জাতিসংঘের বিজ্ঞানীদের একটি মাইলফলক গবেষণা প্রতিবেদনে এই সব কথা বলা হয়েছে। খবর বিবিসির।

জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক আন্তঃসরকার প্যানেল (আইপিসিসি) ‘সামারি ফর পলিসিমেকার’ নামে ৪২ পৃষ্ঠার একটি মূল্যায়নপত্র তৈরি করেছে এবং এরই ধারাবাহিকতায় আগামী মাসগুলোতে আরও কয়েকটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে বলে জানান তারা। ২০১৩ সালের পর এই প্রথম জলবায়ু পরিবর্তন পর্যালোচনা সংক্রান্ত অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন হচ্ছে এই প্রতিবেদন, যা গ্লাসগো জলবায়ু সম্মেলনের (সিওপি২৬) মাত্র তিন মাস বাকি থাকতে সামনে আনা হলো।

এই বিষয়ে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, আজকের আইপিসিসি ওয়ার্কিং গ্রুপ ১ প্রতিবেদন মানবতার জন্য একটি লাল সংকেত। আমরা যদি এখনই সব শক্তি একত্রিত করি, তাহলে জলবায়ু বিপর্যয় এড়ানো সম্ভব। আজকের প্রতিবেদন এটি পরিষ্কার করে দিয়েছে যে, দেরি করার মতো সময় নেই আর। কোনো অজুহাতেরও জায়গা নেই আমাদের। আমি সিওপি২৬ সফল করার জন্য সব সরকারের নেতা ও অংশীদারের ভরসায় রয়েছি।

এই প্রতিবেদনের অন্যতম লেখক ও যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব রিডিংয়ের প্রফেসর এড হকিন্স বলেছেন, এটি একটি সত্য বিবরণী। আমরা এর চেয়ে বেশি নিশ্চিত হতে পারি না; এটি স্পষ্ট ও অনস্বীকার্য যে, মানুষই এই গ্রহকে উত্তপ্ত করছে।

আইপিসিসির প্রতিবেদনের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ঃ

১৮৫০ থেকে ১৯০০ সালের তুলনায় ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা ২০১১ থেকে ২০২০ সালে ১.০৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল।
১৮৫০ সাল থেকে গত পাঁচ বছর পৃথিবীর তাপমাত্রা ছিল ইতিহাসের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
১৯০১ থেকে ১৯৭১ সালের তুলনা করলে সাম্প্রতিক সামুদ্রিক উচ্চতা বৃদ্ধির হার প্রায় তিনগুণ বেড়েছে।
১৯৯০-এর দশক থেকে হিমবাহ ধস ও অ্যান্টার্কটিকায় সামুদ্রিক বরফ কমে যাওয়ার প্রধান কারণ (৯০ শতাংশ) মনুষ্য প্রভাব।
১৯৫০-এর দশক থেকে দাবদাহসহ গরমের প্রবণতা আরও নিয়মিত ও তীব্র হয়ে উঠেছে, সেই তুলনায় ঠান্ডাজনিত ঘটনা ক্রমেই কম নিয়মিত ও কম তীব্র দেখা যাচ্ছে।

প্রকাশিত প্রতিবেদনে লেখকরা বলেছেন, ১৯৭০ সাল থেকে ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা গত দুই হাজার বছরের মধ্যে যেকোনো ৫০ বছর সময়কালের মধ্যে দ্রুততম হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই উষ্ণায়ন ইতোমধ্যে পৃথিবীর সব অঞ্চলের আবহাওয়া ও জলবায়ুকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করছে। সেটি গ্রিস ও উত্তর আমেরিকার পশ্চিমাঞ্চলে সাম্প্রতিক দাবদাহই হোক বা জার্মানি ও চীনের বন্যা- গত এক দশকে এগুলোর ওপর মানুষের প্রভাব আরও শক্তিশালী হয়েছে বলে জানান প্রকাশিত প্রতিবেদনের লেখকরা।

একুশে সংবাদ/রাফি/ব

আন্তর্জাতিক বিভাগের আরো খবর