সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

কলা গাছে থেকে সুতা, তাক লাগিয়ে দিয়েছেন আবু সাঈদ

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০৩:৩৫ পিএম, ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২১

পরিত্যক্ত কলাগাছের বাকল দিয়ে উন্নতমানের সুতা তৈরি করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন বালিয়াকান্দির নারুয়া ইউনিয়নের শোলাবাড়িয়া গ্রামের মৃত আছির উদ্দিনের ছেলে এস কে আবু সাঈদ সাবু। নিজের বেকারত্বকে যোগ্যতায় পরিনত করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি।

অযত্নে বেড়ে উঠা কলা গাছের বাকল কোন কাজে আসে না। কলা গাছ থেকে কলা সংগ্রহ করার পর তা কেটে ফেলে দেওয়া হয়। আর পেলে দেওয়া কলা গাছের বাকল থেকে সুতা তৈরি হচ্ছে এখন।

আবু সাঈদ সাবু এই সুতা তৈরি করে নিজে স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি বেকারত্ব দূরীকরণে নিজের বাড়ির আঙিনায় আফসাম ব্যানানা ফাইবারস ট্রেডিং নামের একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। সেই প্রকল্প থেকেই পরিত্যক্ত কলাগাছের বাকল দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে সুতা।

সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে সুতা তৈরির পাশাপাশি কলাগাছের বাকল দিয়ে কাগজ, মশার কয়েল, জৈব সার, মাছের খাবার এমনকি রস দিয়ে তারফিন ও আ্যাসিডসোডা উৎপাদন করা সম্ভব বলেও জানান তিনি।

সরেজমিনে দেখা যায়, বালিয়াকান্দির নারুয়া ইউনিয়নের শোলাবাড়িয়া গ্রামের বাড়ির প্রবেশপথে কলাগাছের বাকল দিয়ে সুতা তৈরির মেশিনটি স্থাপন করা হয়েছে। সেখানে কাজ করছে স্থানীয় এক যুবক। তাকে সহযোগিতা করছেন আবু সাঈদ।

তিনি বলেন, সরকারি বাঙলা কলেজ থেকে মাস্টার্স পাশ করার পর সরকারি চাকরি না পেয়ে ব্যানানা ফাইবার উৎপাদনের উদ্যোগ গ্রহণ করি। ভারত থেকে ধারণা নিয়ে ২০২০ সালের জুলাই মাসে পরিকল্পনা গ্রহণ করে ডিসেম্বরের শেষের দিকে পরীক্ষামূলকভাবে কাজ শুরু করি। বর্তমান এই প্রকল্প থেকে সুতা উৎপাদন করা হচ্ছে। এরই মধ্যে উৎপাদিত সুতা বিভিন্ন কোম্পানিকে দেখানো হয়েছে

তিনি জানান, একটি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিও হয়েছে। তাদের তৈরি এ সুতা প্রতি মণ ৬ থেকে ৮ হাজার টাকা দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

আবু সাঈদ বলেন, এক কেজি সুতা তৈরি করতে মাঝারি আকারের ৮ থেকে ১০টি কলাগাছ লাগে। বিভিন্ন বাগান থেকে পরিত্যক্ত কলাগাছ সংগ্রহ করে এ সুতা তৈরির কাজে সেটা ব্যবহার করছেন বলে জানান তিনি।

বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আম্বিয়া সুলতানা বলেন, এটি একটি অভিনব পদ্ধতি। আমি খুব শিঘ্রই প্রকল্পটি পরিদর্শন করে আর্থিক সহযোগিতার মাধ্যমে এটিকে কুটির শিল্প হিসেবে সম্প্রসারণ করার চেষ্টা করবো। 

তিনি আরো বলেন, কলা গাছের বাকল থেকে উৎপাদিত সুতা খুবই উৎকৃষ্ঠ মানের হয়। রাজবাড়ী ও ফরিদপুর এ অঞ্চলে প্রচুর কলা বাগান আছে তারা বানিজ্যিক ভাবে প্রচুর কলা উৎপাদন করে থাকে। এই সুতা তৈরির জন্য সম্ভাবনাময় অঞ্চল এটি। এছাড়াও কলা গাছের বাকল থেকে ফাইবার সংগ্রহের পর বাকি অংশ থেকে বার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সার উৎপাদন করা যায়।  

একুশে সংবাদ / রা.কা / এস 

ফিচার বিভাগের আরো খবর