সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

খাদ্যপণ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০৪:২৯ পিএম, ৮ নভেম্বর, ২০২২

খাবারের অভাব এবং পণ্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে আগামী বছর বিশ্বে বিপুলসংখ্যক মানুষের দুর্ভোগ বাড়বে-এ তথ্য বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সাম্প্রতিক গবেষণায় উঠে এসেছে।

 

বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ও মহামারির কারণে গত কয়েক বছরে বিশ্বে অভুক্ত মানুষের সংখ্যা বেড়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে এ সংকট আরও তীব্র হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে আমাদের দেশে খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে সরকারকে বিশেষভাবে ভাবতে হবে।

 

জানা গেছে, বাংলাদেশের খাদ্যনিরাপত্তার বিষয়ে আগামী দিনগুলোতে বড় কোনো ঝুঁকির আশঙ্কা নেই। তবে খাদ্য আমদানি করে চাহিদা মেটাতে হলে নানারকম সমস্যা সৃষ্টি হবে। কারণ বিভিন্ন দেশে খাদ্যোৎপাদন কম হচ্ছে; প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও কৃষি উপকরণের সংকট খাদ্য উৎপাদনে প্রভাব ফেলেছে।

 

নিজেদের প্রয়োজন মেটাতে ইতোমধ্যে ২৫টি দেশ বিভিন্ন ধরনের খাদ্যপণ্য রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে; কিছু দেশ নানা ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। যেহেতু আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদা অনুযায়ী খাদ্যের জোগান নেই, সেহেতু আগামীতে পরিস্থিতি কী দাঁড়াবে, তা অনুমান করাও কঠিন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বৈশ্বিক পরিস্থিতি এখন টালমাটাল। অনেক কিছুই নিয়ন্ত্রণে নেই।

 

আগামীতে এমন পরিস্থিতিরও সৃষ্টি হতে পারে, যখন পর্যাপ্ত অর্থের বিনিময়ে সময়মতো খাদ্য আমদানি করা সম্ভব হবে না। যেহেতু বিভিন্ন দেশ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে, সেহেতু খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের বিকল্প নেই। এদিকে দেশে ডলারের তীব্র সংকটের কারণে খাদ্য আমদানির জন্য এলসি খোলাও সম্ভব হচ্ছে না।

 

জাতিসংঘ, মার্কিন কৃষি বিভাগ, বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ পূর্বাভাস দিয়েছে, আগামী বছরে বিশ্বব্যাপী খাদ্যোৎপাদন কমবে। এতে রপ্তানিতে বিভিন্ন দেশের আগ্রহ কমবে। অর্থনৈতিক মন্দায় মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমার কারণে খাদ্য কেনার সক্ষমতা হারাবে স্বল্প আয়ের মানুষ। এর প্রভাব বাংলাদেশেও পড়বে বলে প্রতিবেদনে সতর্ক করা হয়েছে। আশার কথা, এমন পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী কৃষি উৎপাদন বাড়ানোর প্রতি যথাযথ গুরুত্বারোপের আহ্বান জানিয়েছেন। দেশের শীর্ষস্থানীয় অর্থনীতিবিদরা কৃষি উৎপাদন বাড়িয়ে খাদ্য আমদানি কমানোর পরামর্শ দিয়েছেন। বস্তুত চড়া দামে আমদানিকৃত খাদ্যপণ্য কম দামে বিক্রি করার কাজটি বড় এক চ্যালেঞ্জ। ধারণা করা যায়, চড়া দামে আমদানিকৃত পণ্য চড়া দামেই বিক্রি করা হবে। এমনিতেই মূল্যস্ফীতির কারণে দেশের বহু মানুষ দিশেহারা।

 

এমন পরিস্থিতিতে অন্য দেশের ওপর নির্ভর না করে সব ধরনের খাদ্যপণ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, আগামী জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত সময়ে দেশে খাদ্য সংকট সৃষ্টি হতে পারে। কাজেই সম্ভাব্য এ সংকট এড়াতে আমদানি বা মজুতের পদক্ষেপ নিতে হবে।

 

মহামারির কারণে বিশ্বে বিপুলসংখ্যক মানুষ অপুষ্টিতে ভুগছে। উদ্বেগের বিষয়, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় কমানো যাচ্ছে না। এর প্রভাব পড়ছে বৈশ্বিক খাদ্য উৎপাদনে।

 

দেশে বহু পরিবারের স্বাস্থ্যকর খাবার কেনার সামর্থ্য নেই। এ অবস্থায় দেশের সব মানুষের জন্য পুষ্টিকর খাবার নিশ্চিত করতে হবে। অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজির কারণেও মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে যায়। এসব সমস্যার সমাধানে সময়মতো পদক্ষেপ নিতে হবে। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিভিন্ন শস্যের নতুন জাত আবিষ্কারের সহায়ক পরিবেশও সৃষ্টি করতে হবে।

 

একুশে সংবাদ.কম/যর/জাহাঙ্গীর

সম্পাদকীয় বিভাগের আরো খবর