বাজেটের প্রভাব নিত্যপণ্যের বাজারে। এখনো তেল, চিনি, পেঁয়াজ, আদা ও ডিমসহ মাছ-মাংসের দাম মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে। স্বল্প আয়ের মানুষের ওপর চাপ কেবল বাড়ছেই।
শনিবার রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে সবজির দাম কমার চিত্র লক্ষ করা গেছে। সদ্য প্রস্তাবিত বাজেটে নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে আসার সুখবরের অপেক্ষায় ছিল সাধারণ মানুষ। তবে সেটা হয়নি। বরং বাজেটে বাড়তি দামের তালিকায় যুক্ত হয়েছে অধিকাংশ নিত্যপণ্য।
কাপ্তান বাজারে বাজার করতে এসেছেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মনির হোসেন। তিনি বলেন, তেল, চিনি, ডালের মতো আমদানি নির্ভর পণ্যের দাম যে হারে বেড়েছে, ভেবেছিলাম বাজেটে সেসব পণ্যের দাম সহনীয় করতে হয়তো কোনো পদক্ষেপ থাকবে। কিন্তু পদক্ষেপ তো নেই বরং দেখলাম অনেক পণ্যের দাম বাড়ছে। বাজেট আমাদের মতো সাধারণ ক্রেতার জন্য কোনো সুখবর নিয়ে আসেনি।
কাপ্তান বাজারের সবজি বিক্রেতা রমজান আলী বলেন, পটল-ঢেড়সের মতো গ্রীষ্মকালীন সবজির দাম কেজিতে ৫-১০ টাকা কমেছে। বাজারে এখন সবজির আমদানি গত কয়েক সপ্তাহের তুলনায় বেশি।
এদিকে ঈদের পর থেকে দফায় দফায় দাম বেড়ে আলু এখনো প্রতি কেজি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একই অবস্থা পেঁয়াজ ও আদার দামেও। প্রতি কেজি পেঁয়াজ বাজারভেদে ৭৫ থেকে ৮৫ টাকা আর আদার দাম বাড়তে বাড়তে ৩২০ থেকে ৪৫০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে। এ দুই পণ্যের দাম রোজার ঈদের পর থেকে দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে। এছাড়া তেল, চিনি, আটা-ময়দার দামও উচ্চমূল্যে স্থিতিশীল রয়েছে। পাশাপাশি কিছু পণ্যের সরবরাহ সংকটও রয়েছে। যেমন- প্যাকেটজাত চিনি ও ময়দা অধিকাংশ দোকানে নেই। বোতলজাত সয়াবিন তেল পাওয়া গেলেও মুদি দোকানিরা ঘাটতির কথা বলছেন।
গত দুই সপ্তাহ ধরে অধিকাংশ তেল-চিনি পরিশোধনকারী কোম্পানি নতুন করে পণ্য সরবরাহ করেনি। দ্রুত সরবরাহ পরিস্থিতির উন্নতি না হলে এসব পণ্যের দাম আরো বাড়তে পারে বলে শঙ্কা খুচরা ব্যবসায়ীদের।
সেগুনবাগিচা কাঁচা বাজারের মুদি দোকানি মনির মিয়া বলেন, তেলের এখনো সংকট রয়েছে। প্যাকেটজাত চিনি উধাও। ঈদের আগে আবারো তেলের বাজার অস্থিতিশীল হতে পারে। এদিন তার দোকানে প্রতি কেজি চিনি ১৪০ টাকা ও সয়াবিন তেল ১৯৮ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
এদিকে, টানা কয়েক সপ্তাহ থেকে অস্থির ফার্মের ডিমের দাম। তবে ব্রয়লার মুরগির দাম একই রয়েছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি এখন ২০০ থেকে ২২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি হালি ডিমের দাম এখনো ৫০ টাকা। নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতির উত্তাপ এখন ছড়িয়েছে মাছের বাজারেও। প্রকারভেদে সাধারণ চাষের মাছের দাম কেজিতে বেড়েছে প্রায় ৫০ থেকে ২০০ টাকা। ইলিশ-চিংড়ির পাশাপাশি দেশি (উন্মুক্ত জলাশয়ের) মাছের দাম বেড়েছে ২০০ থেকে ৫০০ টাকা।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে- চাষের পাঙাশ-তেলাপিয়া থেকে শুরু করে দেশি প্রজাতির সব ধরনের মাছের দাম বেড়েছে। আগে বাজারে প্রতি কেজি পাঙাশ মাছ বিক্রি হতো ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা, যা এখন ২২০ থেকে ২৩০ টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। তেলাপিয়া মাছের কেজি হয়েছে ২২০ থেকে ২৫০ টাকা, যা আগে কেনা যেত ১৮০-২০০ টাকায়।
একুশে সংবাদ.কম/আ/বিএস