সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

শর্ত মেনে কিনতে হচ্ছে সয়াবিন তেল, জনদূর্ভোগ চরমে

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০৫:১৩ পিএম, ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

দফায় দফায় মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় হার মানার মতো অবস্থা নিয়ে দুর্বিষহ যন্ত্রণায় পড়েছেন স্বল্প আয়ের ক্রেতা সাধারণ। জেলার তেল সরবরাহকারীরা বলছেন, উৎপাদন কম বলে তারা চাহিদামতো ভোজ্যতেল পাচ্ছেন না। একই কারণে প্রভাব পড়েছে খুচরা বেচাকেনায়।

 

জানা গেছে, গত মাসে বোতলজাত সয়াবিনের খুচরো বাজার দর ছিল লিটার প্রতি ১৬০ টাকা আর খোলা তেলের মূল্য ছিল প্রতি কেজি ১৭০ টাকা। আর এখন সেখানে খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে বোতলজাত তেল লিটারে ১৭০-১৭২ টাকায় ও খোলা তেল বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১৯২ থেকে ১৯৫ টাকায়। নিত্য প্রয়োজনীয় এই ভোজ্যতেলের দামের ঊর্ধ্বগতিতে ক্রেতারা অসহায় হয়ে পড়েছেন। এর সঙ্গে বাজার মনিটরিংয়ের অভাব রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তারা।

 

কোন কোন কোম্পানির শর্ত অনুযায়ী বোতলজাত সয়াবিন তেলের সঙ্গে আটা, সরিষার তেল, চাল, মসলা বা চা পাতা কিনতে বাধ্য হচ্ছেন ক্রেতারা। ঊর্ধ্বমুখী বাজার দরের সঙ্গে তেলের এমন তেলেসমাতিতে একবারে হাঁপিয়ে উঠেছেন অসহায় নিম্নআয়ের মানুষ।

 

জয়পুরহাট শহরের আদর্শপাড়া এলাকার আনোয়ার হোসেন, সদর উপজেলার বানিয়াপাড়া গ্রামের বেলাল হোসেন ও পৌর এলাকার ছানোয়ার হোসেন বিশ্বাসসহ অনেক ক্রেতাদের সঙ্গে এ নিয়ে কথা হয়। তারা জানান, প্রতি লিটার বোতলজাত তেলের সঙ্গে প্রয়োজন না হলেও এক কেজি আটা নিতে হচ্ছে মোট ২০০ টাকায়। কোথাও আবার মসলা, চাল বা সরিষার তেল বা চা পাতা দেওয়া হচ্ছেও বলেও জানান ক্রেতারা। গত এক মাসের ব্যবধানে তেলের দাম যেভাবে বেড়েছে, এতে যারপরনাই সমস্যায় পড়েছেন তারা।

 

এক দিকে মূল্য বৃদ্ধি অন্যদিকে বোতলজাত তেলের সঙ্গে আটা, চাল, মসলা, চাসহ অন্যান্য সামগ্রী নিতে খুচরা বিক্রেতাদের বাধ্য করা হচ্ছে। এমন শর্ত দিয়ে খুচরা ক্রেতারদের কাছে বোতলজাত তেল বিক্রি করা খুবই কষ্টকর, তাই খোলা তেল বিক্রি করতে তারা বাধ্য হচ্ছেন বলে জানান বিক্রেতারা।

 

জয়পুরহাট শহরের কলেজ রোড এলাকার সাহা ট্রেডার্সের স্বত্তাধিকারী সীতারাম কুমার সাহা, জগন্নাথ ট্রেডার্সের জগন্নাথ সাহা, ষ্টেশন রোডের আনোয়ার হোসেন বাবু, মাছুয়া বাজারের জিয়া, ফারুখ হোসেনসহ অনেক মুদি ব্যবসায়ী সয়াবিন তেলের ঊর্ধ্বগতির কথা স্বীকার করে অভিযোগ করেন, ‘খোলা তেল মোটামুটি সরবরাহ আছে, কিন্তু বোতলজাত তেলের সঙ্গে কোম্পানিগুলো আটা, চাল, সরিষার তেল, মসলা, চা পাতা বিক্রি করছে, যা ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করা কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই, চাহিদা থাকলেও বোতলজাত তেলের পরিবর্তে খোলা তেলই বেশি বিক্রি করছেন বলে জানান এসব খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতারা।’

 

ভোজ্য সয়াবিন তেলের এমন সংকটাবস্থার কথা স্বীকার করে পরিবেশকরা বলছেন উৎপাদন কম হচ্ছে বলে চাহিদার বিপরীতে তারাও পাচ্ছেন কম সরবরাহ। এছাড়া আটা, চাল, মসলা, চাসহ অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় ভোগ্য পণ্য বিক্রি জরুরি বলে শর্ত দিয়ে সয়াবিন তেল বিক্রি করা হচ্ছে বলে জানালেন পরিবেশকরা।

 

জয়পুরহাট জেলার অন্যতম পরিবেশক সদর রাস্তার সিও কলোনী এলাকার মোল্ল্যা ট্রেডার্সের স্বত্তাধিকারী শামছুল আলম মোাল্লার ছেলে সাজ্জাদ হোসেন জানান, ‘এর দুই মাস আগে থেকে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে, কারণ হঠাৎ করে চাহিদা বৃদ্ধি হওয়ায় উৎপাদনে বেশ চাপ পড়েছে বলে কিছুটা সংকট আছে, এছাড়া অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় যে সব পণ্য সামগ্রী সয়াবিন তেলের সঙ্গে যোগ করা হয়েছে, সেগুলো শর্ত বলা ঠিক হবে না। কোম্পানির ব্যবসায়ীক নীতি বলেও জানান পরিশেকররা।’

 

এ নিয়ে জানতে চাইলে জয়পুরহাট জেলা ভোক্তা অধিকার সংক্ষরন অধিদফতরের উপ-পরিচালক ফজলে এলাহী জানান, ‘যেহেতু জয়পুরহাটে সয়াবিন তেল উৎপাদন হয় না। তাই তারা শুধু পাইকারি ও খুচরা মূল্যের মধ্যে শুধু সামঞ্জস্যই দেখভাল করতে পারেন, বাজারে সবসময় মনিটরিং করা হচ্ছে। খুচরা ও পাইকারি মূল্যের অসামঞ্জস্যতা দেখা মাত্রই সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

 

একুশে সংবাদ/এসএপি

 

অর্থ-বাণিজ্য বিভাগের আরো খবর