সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

বাংলাদেশকে ১৯১ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে বিশ্বব্যাংক

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০৫:৩৩ পিএম, ২৫ জুন, ২০২১

উচ্চশিক্ষা খাতের উন্নতি ও কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলায় সামর্থ্য বাড়াতে বাংলাদেশের জন্যে ১৯১ মিলিয়ন ডলারের ঋণ অনুমোদন করেছে বিশ্বব্যাংক।

গতকাল বুধবার বিশ্বব্যাংকের নির্বাহী পরিচালকদের পর্ষদ এই ঋণ অনুমোদন করে বলে বিশ্বব্যাংক থেকে দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে তারা আফগানিস্তানের জন্যেও ১৮ মিলিয়ন ডলার অনুদানের অনুমোদন দিয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘হায়ার এডুকেশন অ্যাক্সিলারেশন ট্রান্সফরমেশন প্রজেক্ট’ নামে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে শিক্ষা খাতে দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম আঞ্চলিক প্রকল্পটি উচ্চশিক্ষায় আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে। যার মধ্যে রয়েছে এ অঞ্চলের মধ্যে সমজাতীয় কর্মসূচির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের অন্য দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নের সুযোগ, ক্রেডিট ট্রান্সফার স্কিম বা এক দেশ থেকে এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে অংশীদারিত্বের ব্যবস্থা। এর মাধ্যমে আরও বেশি নারীকে মানসম্মত উচ্চশিক্ষার সুযোগ সৃষ্টিতে সহায়তা করা হবে, যা শ্রমশক্তিতে নারীর অংশগ্রহণ বাড়াতে সহায়তা করবে।

কোভিড-১৯ মহামারি দক্ষিণ এশিয়ার উচ্চশিক্ষা খাতকে ক্ষতির মুখে ফেলেছে। যার ফলে অনেক শিক্ষার্থী ঝরে পড়ছে এবং অনেকে ভর্তি হতে পারছে না। কোভিডের কারণে বিশেষ করে নারী শিক্ষার্থীদের ওপর বৈরীভাবে প্রভাব পড়েছে এবং এর ফলে উচ্চশিক্ষা খাতে জেন্ডার বৈষম্য বাড়ছে। প্রকল্পটি ডিজিটাইজেশনের ওপর জোর দিয়ে উচ্চশিক্ষা খাতে মহামারির কারণে জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলা এবং টেকসই থাকার পদ্ধতিগত সামর্থ্য বাড়াতে সহায়তা করবে।

বাংলাদেশ ও ভুটানে নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেম্বন বলেন, ‘আমাদের সামগ্রিক ভবিষ্যতের জন্য উচ্চশিক্ষা অপরিহার্য, এটি কোনো বিকল্প ব্যবস্থা নয়। বাংলাদেশের উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার আকাঙ্ক্ষা পূরণে একটি দক্ষ ও আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিযোগী সক্ষম শ্রমশক্তি তৈরিতে যুব জনগোষ্ঠীর জন্য বিনিয়োগ করতে হবে।’

‘এই অর্থায়ন উচ্চশিক্ষায় শিক্ষার মান ও প্রাসঙ্গিকতা বাড়াতে ও বিশেষত নারীদের ক্ষেত্রে সহায়ক হবে। একইসঙ্গে কোভিড-১৯ মহামারির সময় শিক্ষা কার্যক্রম চলমান রাখা নিশ্চিত করবে’, বলেন তিনি।

 

এই প্রকল্পের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের জন্য ‘ভার্চুয়াল গতিশীলতা’ তৈরিতে ‘দক্ষিণ এশিয়া উচ্চশিক্ষা পোর্টাল’ বাংলাদেশে থেকে চালু হবে, যার মাধ্যমে নিবন্ধিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে নিজ দেশের বাইরে অন্য দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্স নেওয়ার অনুমোদন দেওয়া হবে।

বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের শিক্ষার্থীরা এই পোর্টালে সংযুক্ত হতে পারবে। এটি জাতীয় গবেষণা ও শিক্ষা নেটওয়ার্কগুলোর মাঝে আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদার করবে এবং শিক্ষার্থীদের যুক্ত হতে এবং সংযোগের জন্য সম্প্রসারিত সুবিধা দেবে। প্রকল্পটি বাংলাদেশের জাতীয় গবেষণা ও শিক্ষা নেটওয়ার্কের উন্নয়ন করবে এবং এই নেটওয়ার্কে যুক্ত শিক্ষার্থীদের এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ভর্তুকি মূল্যে সংযোগ প্যাকেজ দেবে।

শ্রমশক্তিতে নারীর অংশগ্রহণের হারে দক্ষিণ এশিয়া বিশ্বে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন। আরও বেশি নারীকে গুণগত মানের উচ্চশিক্ষার সুযোগ দিতে, তুলনামূলক ভালো কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে এবং তাদেরকে নেতৃত্বে আনতে প্রকল্পটি নারী বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠানগুলোর মাঝে নেটওয়ার্ক গড়ে তুলবে, যা প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশের চট্টগ্রামের ‘এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব উইমেন’ সমন্বয় করবে।

 

প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের টাস্ক টিম লিডার মোখলেসুর রহমান বলেন, ‘প্রকল্পটি দক্ষিণ এশিয়ায় মানসম্মত শিক্ষার জন্য বর্ধিত চাহিদা পূরণে সহায়তা করবে। এ ছাড়া উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে আঞ্চলিক সহযোগিতার মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো উপকৃত হবে এবং এসব দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা ও উদ্ভাবন সক্ষমতা বাড়াবে।’

এই প্রকল্পের ঋণ বিশ্বব্যাংকের ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (আইডিএ) থেকে দেওয়া হবে। যার মেয়াদ পাঁচ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ৩০ বছর। বাংলাদেশ বর্তমানে সর্বাধিক আইডিএ-গ্রহীতা দেশ, যার পরিমাণ ১৪ বিলিয়ন ডলারের বেশি।

অর্থ-বাণিজ্য বিভাগের আরো খবর