সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

বিয়ে করাই শারমিনের নেশা, একে একে ৫ বিয়ে

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ১১:০৬ এএম, ২ ডিসেম্বর, ২০২২

শারমিন আক্তার। এ যেন বহু বিবাহের জননী। এক বিয়েতে ক্ষান্ত নয়। বিয়ের নেশায় উদগ্রেব হয়ে থাকে সবসময়। বিবাহিত-অবিবাহিত যুবকদের একের পর এক ফাঁদে ফেলে সবকিছু হাতিয়ে নেয়াই তার কাজ। প্রতারণার ফাঁদ পেতে অসংখ্য যুবককে করেছে নিঃস্ব। তবে সংসার করে কারো কারো ঘরে সন্তান জন্ম দেন শারমিন। এক স্বামী রেখে পরকীয়ায় জড়ান অন্যের সঙ্গে। কিছু দিন যেতেই পুনরায় জড়ান অন্যের সঙ্গে। এভাবে পাঁচটি বিয়ে করেছেন শারমিন।

 

পারিবারিক সিদ্ধান্তে প্রথম বিয়ে হয়। প্রথম স্বামীর সংসারে থাকা অবস্থায় পরকীয়া করে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিয়ে ছাড়েন দুই স্বামীর সংসার। পরে এক যুবকের সঙ্গে মোবাইলে পরিচয়ে করেন তৃতীয় বিয়ে। তার কয়েক মাসের মধ্যেই মেসেঞ্জার গ্রুপে পরিচয়ে করেন আরেকটা বিয়ে। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত পাঁচটি বিয়ে আপাতত সম্পন্ন করেছে প্রতারক শারমিন। প্রতি বছরই যেন তার নতুন নতুন স্বামী সংসার আর বাসঘর হয়। আর এসব বিয়ের পেছনে রয়েছে বড় ধরণের প্রতারণা মাধ্যমে টাকা-পয়সা আত্মসাতের গল্প।

 

বলছিলাম লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ২ নম্বর দক্ষিণ হামছাদী ইউনিয়নের গঙ্গাপুর গ্রামের ওয়াজ উদ্দিন বেপারী বাড়ির নূর মোহাম্মদের মেয়ে শারমিন আক্তারের কথা। এখন বিয়ে করাই যেন শারমিনের নেশা এবং পেশা হয়েছে।

 

জানা গেছে, শারমিন আক্তার পারিবারিকভাবে প্রথম বিয়ে করেন সদরের ২ নম্বর দক্ষিণ হামছাদী ইউপির নন্দনপুর গ্রামের মাসুদ হোসেনকে। ঐ সংসারে থাকতেই রামগঞ্জ উপজেলার ৮ নম্বর করপাড়া ইউপি বদপুর গ্রামের তরিকআলি মুন্সি বাড়ি আনু মেয়ার মেজো ছেলে দেলোয়ার হোসেনের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন তিনি। পরে বিয়েও করেন তারা। দেলোয়ার হোসেনের সঙ্গে ১৪ বছর সংসার জীবনে রয়েছে ১৩ বছর বয়সী একটি ছেলে সন্তান ও ৭ বছর বয়সী একটি কন্যা সন্তান। দেলোয়ারের সংসারে থাকাকালে আবারো পরকীয়ায় জড়ান তিনি।  

 

একপর্যায়ে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিয়ে ৬ নম্বর লামচর ইউপির কালিকাপুর গ্রামের বাগাইয়া বাড়ির আদু মিয়ার ছেলে  হৃদয় হোসেন জসীমের সঙ্গে পালিয়ে তৃতীয় বিয়ে করেন। বেশ কিছুদিন সংসার করার পর সেখান থেকে পালিয়ে একই উপজেলার ৮ নম্বর করপাড়া ইউপির দক্ষিণ পশ্চিম বদরপুর হায়দার বাড়ির আলি আহাম্মদের ছেলে রিয়াদ হোসেনকে ৪র্থ বিয়ে করেন শারমিন। তার প্রতারণার শিকার হয়ে সর্বস্ব হারান রিয়াদ। শারমিনের বিরুদ্ধে ঢাকা মেট্রোলিটন পুলিশের কাছে করেন সাধারণ ডায়রি। রিয়াদ ছাড়াও প্রতারণার শিকার আরো চার যুবক।

 

প্রতারণার শিকার রিয়াদ হোসেন বলেন, প্রেমের অভিনয় করে আমাকে তার জালে জড়িয়েছিলেন শারমিন।  আমি বাড়িতে ঘর করার জন্য বাসায় রাখা এক লাখ টাকা এবং আট আনা ওজনের একটি স্বর্ণের চেইন, পাঁচ আনা ওজনের একটি স্বর্ণের কানের দুল এবং আমার বাসার মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে লাপাত্তা হয়ে যায়। আমি তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা আমার ফোন নম্বর ব্লক করে দেয়। আমি কোনো উপায় না পেয়ে থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করি।

 

তিনি আরো বলেন, শারমিনের এমন প্রতারণায় বাদ পড়েননি যুবক-বৃদ্ধ কেউ। যখন যাকে পেরেছেন মিষ্টি ভাষা দিয়ে প্রতারণা করেছেন। হাতিয়ে নিয়েছেন টাকা-পয়সা ও মূল্যবান মালামাল।

 

পুলিশ সুপার মাহাফুজ্জামান আশরাফ বলেন, তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট প্রতরণার অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

একুশে সংবাদ/র.ই.খা.প্রতি/পলাশ

অপরাধ বিভাগের আরো খবর