সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

দুই মেয়েকে খুনের পর মা-বাবার দাবি‘ওদের বাঁচিয়ে তুলতে পারব’!

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০৩:৩২ পিএম, ২৬ জানুয়ারি, ২০২১

নিরাপদ আশ্রয়ে মা-বাবার হাতেই খুন হতে হলো দুই বোনকে। ভয়ঙ্কর এই ঘটনা গত রবিবার ঘটেছে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশে। পুলিশ মনে করছে, এই ঘটনার পিছনে অন্ধবিশ্বাস জড়িত কোনও প্রথা রয়েছে, বরাবরই বহু ভারতীয়দের মাঝে এমন বিশ্বাস দেখা যায়। প্রতিবেশীদের থেকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় স্থানীয় পুলিশ। 

তখন নিহত দুই তরুণীর মা দাবি করেন, এক দিন সময় পেলেই তাঁরা বাঁচিয়ে তুলতে পারবেন মেয়েদের। ধারণা করা হচ্ছে এমন অন্ধবিশ্বাসের ফলেই নিজের মেয়েদের হত্যা করেন তিনি। তদন্তকারীদের ধারণা, মেয়েদের খুন করার পর আত্মহত্যা করার পরিকল্পনা ছিল দম্পতির। যার পিছনে থাকতে পারে একসঙ্গে অন্য ভুবনে যাওয়ার অন্ধবিশ্বাস।

পুলিশ জানিয়েছে, ওই দুই তরুণীর নাম আলেখ্য (২৭) এবং দিব্যা (২৩)। পুলিশ এসে দেখে, তারা দু’জনেই লাল শাড়ি পরা অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে রয়েছেন। তাদের মাথা থেকে গলগল করে রক্ত বেরচ্ছে। জানা গিয়েছে, ডাম্বল দিয়ে মাথায় আঘাত করে খুন করা হয়েছে তাদের।

মেয়েদের খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত বাবা-মা হলেন ভি পদ্মজা এবং ভি পুরষোত্তম নাইডু। তাদের দু’জনের বয়সই ৫০-এর ঘরে। তারা দু’জনেই উচ্চশিক্ষিত এবং শিক্ষকতা পেশার সঙ্গে জড়িত। 

পুরষোত্তম মেয়েদের একটি সরকারি কলেজে ভাইস প্রিন্সিপাল। রসায়ণের শিক্ষক। পদ্মজা দাবি করেন তিনি গণিতে সোনার মেডেল পেয়েছিলেন। বর্তমানে আইআইটি-র একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে পড়ান। যদিও উচ্চশিক্ষা ওই দু’জনের মনের মধ্যে ঘাঁটি গেড়ে থাকা অন্ধবিশ্বাসকে দূর করতে পারেনি। 

দুই মেয়েকে খুনের আগে তাদের বাড়িতে কোনো ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠিত হয়েছিল। পুলিশ জানিয়েছে, ওই দম্পতি মনে করতেন, তাদের মেয়েদের মধ্যে কোনও অশুভ শক্তি বাসা বেঁধেছে।

ঘটনার কিছুক্ষণ আগে লাল শাড়ি পরে নিজেদের বাড়ি প্রদক্ষিণ করতেও দেখেন প্রতিবেশীরা। অনুষ্ঠানের পর রবিবার রাতে পদ্মজা দুই মেয়ের মাথায় ডাম্বল দিয়ে সজোরে আঘাত করেন বলে অভিযোগ। সে সময় সামনে থাকলেও বাবা পুরষোত্তম কোনও রকম বাধা দেননি বলে পুলিশ জানিয়েছে।

পুলিশ এলেও তাদের বাড়িতে ঢুকতে বাধা দেন ওই দম্পতি। এ নিয়ে তদন্তকারী পুলিশ অফিসার রবি মনোহরা ছারি বলেছেন, ‘‘অপরাধস্থলের অবস্থা দেখে বোঝা যাচ্ছিল, সেখানে পুজা হয়েছিল। দুই যুবতী লাল শাড়িতে লুটিয়ে পড়েছিল। এবং ওই দম্পতি অসংলগ্ন কথাবার্তা বলছিলেন।’’ 

তিনি আরও বলেছেন, ‘‘ওই বাড়িতে চারজনই থাকতেন। পদ্মজা মেয়েদের মারার সময় পুরষোত্তম কোনও বাধা দেননি। ওই বাড়িতে সিসিটিভি ক্যামেরার খোঁজ পাওয়া গিয়েছে তা বিশ্লেষণ করে দেখা হবে। মনে হচ্ছে এই খুনের সঙ্গে অন্ধবিশ্বাস জড়িয়ে রয়েছে। আমরা ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর অভিযুক্তরা বলছিল, একদিন সময় দিলে তারা মৃত মেয়েদের বাঁচিয়ে তুলবেন।’’

পুলিশ জানিয়েছে, আলেখ্যা ভোপালের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ফরেস্ট ম্যানেজমেন্টে কাজ করতেন। দিব্যা চেন্নাইয়ের একটি গানের স্কুলে স্নাতক স্তরে পড়াশোনা করতেন। লকডাউনের সময় থেকেই তারা বাড়িতে ছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। 

সূত্র: আনন্দবাজার

একুশে সংবাদ/অমৃ

অপরাধ বিভাগের আরো খবর