সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

কোরআন অবমাননা: হত্যার পর পুড়িয়ে ফেলা সেই ব্যক্তির পরিচয় মিলেছে

প্রকাশিত: ০২:৩৮ পিএম, ৩০ অক্টোবর, ২০২০

পবিত্র কুরআন শরীফ অবমাননার দায়ে যে যুবককে পুড়িয়ে মেরে ফেলা যুবকের নাম আবু ইউনুস মো: সহিদুন্নবী জুয়েল (৪৯)। রংপুর শহরের শালবন এলাকার ওয়াজেদ মিয়া ছেলে। তিনি ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ রংপুর এর প্রাক্তন গ্রন্থাগারিক।
তিনি রংপুর জিলা স্কুলের ৮৬ ব্যাচের ছাত্র ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় “ইনফরমেশন সাইন্স এন্ড লাইব্রেরি ম্যানেজমেন্ট” বিভাগ এর ছাত্র ছিলেন।

জানা যায়, চাকরি থেকে বাধ্যতামূলক অবসরে যাবার পর তিনি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন।

শহিদুন্নবী জুয়েলকে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারীতে পিটিয়ে পুড়িয়ে মারার পর রংপুর এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে তার পক্ষে বিভিন্ন স্ট্যাটাস দিয়েছেন তার পরিচিতজন। তারা দাবি করেছেন শহিদুন্নবী জুয়েল নামাজি,ভদ্র এবং শান্ত স্বভাবের ছিলেন।
গত ২/১ বছর যাবৎ থেকে তিনি অসুস্থ্য। স্মৃতি হারিয়ে ফেলত মাঝে মাঝে। যখন স্মৃতি হারাত, তখন মানসিক ভারসাম্য থাকত না।
কারও সাথে উচ্চ স্বরে কথাও বলতেন না তিনি।
অনেকে জোর দিয়ে বলছেন তিনি কখনোই ধর্ম অবমাননাকারী হতে পারেন না। ধার্মিক, নামাজি এবং ভদ্র ছিলেন। ব্যাডমিন্টন ভাল খেলতেন, ফুটবলেও কম ছিল না।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী জামে মসজিদে ঢুকে বাজে মন্তব্যর অভিযোগ এনে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে আহতের পর জ্বলন্ত আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করে বিক্ষুব্ধ জনতা।
বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের কাছে লালমনিরহাট- বুড়িমারী মহাসড়কে এ ঘটনা ঘটে। তবে নিহত ব্যক্তির সাথে থাকা অপরজন পুলিশের হেফাজতে আছেন বলে স্থানীয়রা জানান।

এ ঘটনায় বুড়িমারী স্থল বন্দরে তুমুল উত্তেজনা বিরাজ করে। উত্তেজিত জনতা বুড়িমারী-লালমনিরহাট মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। পরিস্থতির নিয়ন্ত্রে পুলিশ কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেন। বর্তমানে বুড়িমারীতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বিকেলে বুড়িমারী জামে মসজিদে ওই ব্যাক্তি নিজেকে প্রসাশনের লোক বলে ইসলাম ধর্ম নিয়ে অবান্তর কথা বলার অভিযোগ এনে ওই ব্যক্তিকে ধরে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে রুমে আটকে রাখেন। এর পর বিষয়টি জানাজানি হলে বিক্ষুব্ধ জনতা ইউনিয়ন পরিষদের দরজা ভেঙ্গে ওই ব্যক্তিকে ধরে পিটিয়ে আহত করার পর উত্তেজিত জনতা ওই ব্যক্তিকে জলন্ত আগুনে পুড়ে হত্যা করে। এর আগে ওই ব্যক্তির ব্যবহারিত একটি মটর সাইকেলে অগ্নিসংযোগ করেও পুড়িয়ে দেয় জনতা।

স্থানীয়রা জানান, মসজিদে ওই দুই ব্যক্তিকে আটক করে স্থানীয় বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের আটক করা হয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুদ্ধ জনতা পরিষদের দরজা ভেঙে এক ব্যক্তিকে পিটাতে থাকেন। পরে জলন্ত আগুনে ফেলে হত্যা করা হয়।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

একুশে সংবাদ/এআরএম

অপরাধ বিভাগের আরো খবর