সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

মানিকগঞ্জে দাফন করা হবে পাইলট রিফাতকে

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০৯:৪২ এএম, ১০ মে, ২০২৪

চট্টগ্রামে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত পাইলট আসীম জাওয়াদ ওরফে রিফাতকে মানিকগঞ্জে দাফন করা হবে। বৃহস্পতিবার (৯ মে) রাতে নিহতের পারিবারিক সূত্রে বিষয়টি জানা গেছে।


কর্ণফুলী নদীতে ভূপাতিত হওয়ার আগেই বিমানে থাকা বৈমানিক উইং কমান্ডার সোহান ও বৈমানিক স্কোয়াড্রন লিডার অসীম জাওয়াদ প্যারাসুট দিয়ে নদীতে নামলেও আহত হন। পরে তাদের উদ্ধার করে পতেঙ্গা বিএনএস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বিমানের উইং কমান্ডার সোহান জহুরুল হক ঘাঁটির মেডিকেল স্কোয়াড্রনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তবে বিমান বিধ্বস্তর ঘটনায় বৈমানিক আসীম জাওয়াদ ওরফে রিফাত বিএনএস পতেঙ্গা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে মারা যান।

একমাত্র ছেলের মৃত্যুর খবর শোনে কান্না থামছে না মা নিলুফা খানমের। ছেলে হারিয়ে বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন তিনি। স্বজনরা তার মাকে নানা কথা বলে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। কিন্তু ছেলের এমন মৃত্যু কোনভাবেই মেনে নিতে পারছেন না তিনি।

বৃহস্পতিবার বিকেলে মানিকগঞ্জ জেলা শহরের পশ্চিম দাশড়া এলাকায় অসীমের বাসায় গিয়ে এই চিত্র দেখা গেছে।

নিহত আসীম জাওয়াদ রিফাত মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার দরগ্রাম ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের ডা. মোহাম্মদ আমানউল্লার ছেলে। তার মায়ের নাম নিলুফা খানম। নিহত পাইলট রিফাত মৃত্যুকালে স্ত্রী, ছয় বছর বয়সী কন্যা আইজা ও এক পুত্র সন্তানের জনক ছিলেন।

আসীম জাওয়াদের মামা মানিকগঞ্জের সিনিয়র সাংবাদিক সুরুয খান জানান, রিফাত একজন চৌকশ অফিসার ছিল। ছোটবেলা থেকেই সে বিমানবাহিনীতে যোগ দেবে এমন স্বপ্ন ছিল। রিফাতের স্ত্রী, ছয় বছরের মেয়ে আয়জা ও এক বছর বয়সী একটি ছেলে রয়েছে। আসীম জাওয়াদ তার স্ত্রী অন্তরা আক্তার ও ৬ বছরের একটি মেয়ে এবং দেড় বছরের এক ছেলেকে নিয়ে চট্টগ্রাম বিমানবাহিনীর ঘাঁটি জহরুল হকের অফিসার্স আবাসিক এলাকার নীলিমাতে থাকতেন। আর মা বাবা মানিকগঞ্জ পৌর শহরের দাশড়া এলাকায় থাকেন। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে তার মা এখন পাগল প্রায়। তাকে হারিয়ে পরিবার শোকে বিহ্বল। বিমান দুর্ঘটনার কারণে দেশ আজ একজন চৌকশ অফিসারকে হারাল।

উল্লেখ্য, ১৯৯২ সালের ২০ মার্চ আসীম জাওয়াদ জন্মগ্রহণ করেন। ২০০৭ সালে তিনি ঢাকার সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল থেকে এসএসসি এবং ২০০৯ সালে সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। ২০১০ সালের ১০ জানুয়ারি তিনি বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে যোগদান করেন এবং ১ ডিসেম্বর ২০১১ তারিখে ক্যাডেটদের জন্য সর্বোচ্চ সম্মান সোর্ড অব অনার প্রাপ্তিসহ জিডি (পি) শাখায় কমিশন লাভ করেন।

চাকরিকালীন তিনি দেশ-বিদেশে পেশাগত বিভিন্ন কোর্সে অংশগ্রহণ করে সফলতার সঙ্গে তা সম্পন্ন করেন। তিনি বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস থেকে এভিয়েশন ইন্সট্রাক্টর্স পোস্টগ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা সম্পন্ন করেন। এছাড়া তিনি চীন থেকে ফাইটার পাইলটস ফাউন্ডেশন ট্রেনিং কোর্স, ভারত থেকে অপারেশনাল ট্রেনিং ইন এভিয়েশন মেডিসিন ফর ফাইটার পাইলটস কোর্স, বেসিক এয়ার স্টাফ কোর্স ও কোয়ালিফায়েড ফ্লাইং ইন্সট্রাক্টর্স কোর্স সম্পন্ন করেন। তিনি পেশাদারি দক্ষতা ও সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘মফিজ ট্রফি’, ‘বিমানবাহিনী প্রধান ট্রফি’ ও বিমানবাহিনী প্রধানের প্রশংসাপত্র লাভ করেন। এ ছাড়া ভারতীয় বিমানবাহিনীতে কোর্সে অংশগ্রহণ করে সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ ইন্ডিয়ান এয়ার অর্জন করেন।

একুশে সংবাদ/এনএস

সারাবাংলা বিভাগের আরো খবর