সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

পেকুয়ার রিজার্ভ বনভূমি দখল করতে মরিয়া পাহাড় খেকো চক্র

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০৩:৫১ পিএম, ৪ মে, ২০২৪

কক্সবাজারের পেকুয়ায় বনবিভাগের জনবল সংকটকে কাজে লাগিয়ে পাহাড় কেটে বসতি গড়ে তুলছেন গুটি কয়েক পাহাড় খেকো চক্র। একের পর এক এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে এবং পাহাড় কাটা ও বালু তোলার বিরুদ্ধে অভিযানে নামে বারবাকিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা হাবিবুল হক। এ অভিযান ঠেকাতে তাকে নিয়ে ভিন্ন কৌশলে মেতে উঠে পাহাড় খেকো চক্ররা। খতিয়ান ভুক্ত বনভূমিতে বসতি স্থাপনা করলে ও সেটি সরকারি রির্জাভ জায়গায় করছে বলে অপপ্রচারে নামছে ওই চক্র। 

সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, টইটং বিটের ডেনারছড়ার এলাকাটি ছোট বড় টিলায় বেষ্টিত। যার পাশে রয়েছে ২০০৫-০৬ অর্থবছরের সামাজিক বনায়নের সৃজিত বাগান। সেখানে পাহাড় কাটার নেই কোন চিহ্ন।একইভাবে বারবাকিয়া বিটের পাহাড়িয়াখালী, নাপিতের চিতা, লম্বাঘোনা এসব জায়গায় রিজার্ভের ভিতর কোন পাহাড় কাটা নাই। অনুসন্ধানে আরো দেখা যায় এ সকল জায়গায় যে সকল পাহাড় কাটা দেখা যায় তা সবই মালিকানাধীন খতিয়ানভুক্ত জায়গা।

এদিকে পাহাড়িয়াখালিতে গিয়েও দেখা যায় একই চিত্র। পাহাড় কাটার বিষয়ে জানতে চাইলে ওই এলাকার বাসিন্দা  মঞ্জুর,  সৈয়দ আলম ও এজাহার তাদের খতিয়ানি জায়গা  হতে মাটি কেটেছি বলে জানান। এছাড়াও ভারুয়ালির কবির আহাং তার খতিয়ানভুক্ত বি,এস দাগ নং-২৫২৯৩ এর জমির উপরের অংশের মাটি কেটেছে। কিন্তু পাহাড়খেকোরা সংবাদে তথ্য দিয়েছে   কবির আহমদ রিজার্ভের পাহাড় কেটেছে।অপর একটি জায়গার মাটি কাটা হয়েছে যার বি,এস দাগ নং-১৫২০০।

অনুসন্ধানে দেখা যায় রমিজপাড়ায় খতিয়ানভুক্ত ১৭৫৫ ও ১৭৫৬ বি,এস দাগের জায়গায় মাটি কাটা হয়েছে। সেখানেও রিজার্ভের কোন পাহাড় কাটা হয় নাই। ওই খেকোরা মাটি কাটছে বলে গুজব ছড়িয়েছে।

এদিকে জমির মালিক গিয়াস উদদীন বলেন আমি আমার খতিয়ানভূক্ত জায়গার মাটি সমান করে ঘর নির্মান করার জন্য কিছু মাটি সরিয়ে তা মসজিদের উন্নয়নের জন্য দান করেছি। এখানে রিজার্ভের পাহাড় কাটার কোন প্রশ্নই আসে না।

পাহাড় খেকোরা বলছেন রেঞ্জ কর্মকর্তাকে টাকা দিলেই পাহাড় কাটা অনুমতি মেলে। কিন্তু স্থানীয়রা বলছেন বনবিভাগের নাম বিক্রি করে পাহাড় খেকোরা অর্থের মাধ্যমে নানা অবৈধ স্থাপন করে যাচ্ছেন। প্রতিবাদে নেমে আসে হেডম্যানকে হুমকি।  বিভিন্ন গণমাধ্যম দেখা গেলো জুমপাড়ার যে অংশের পাহাড় কাটার কথা। তা টইটং বিট তথা বারবাকিয়া রেঞ্জের আওতাধীন নয়। সেখানেও দেখা গেছে অনেক পুরাতন পাহাড় কাটার আলামত। এভাবে কাজল সওদাগর ও আব্দুস শুক্কুর ব্যাক্তিদের নাম জড়িয়েছে ওই পাহাড় খেকোরা। আব্দুস শুক্কুর প্রায় ৬ মাস যাবত দেশের বাইরে অবস্থান করছেন এবং কাজল সওদাগর টইটং বাজারের একজন ব্যবসায়ী।

কাজল সওদাওর বলেন,"আমি দীর্ঘ ১৮ বছর যাবত টৈটং বাজারে ব্যবসা করি, আমার নামে বেশ কয়েকটি নিউজ হয়েছে যে আমি গাছ কাটি, মাটি কাটি যার কোন সত্যতা নেই। আমাকে দিয়ে বনবিভাগ কে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।  

এদিকে আওয়ামী লীগ নেতা জয়নাল বলেন দক্ষিণ জুম এলাকায় পাহাড় কাটার বিষয়ে আমার প্রতিপক্ষ আমাকে জড়িয়ে চিহ্নিত গুটিকয়েক বিশেষ এজেন্ডা বাস্তবায়নকারীকে মিথ্যা তথ্য দিয়েছে। তারাবুনিয়া পাড়ার আব্দুল হক ও সবুজপাড়ার জাহাঙ্গীর নামের  ব্যাক্তির বাড়িতে গিয়ে কোন পাহাড় কাটার আলামত পাওয়া যায় নাই। মাঝেরঘোনা এলাকায় গিয়ে দেখা যায় একটি পাহাড় ভেংগে পড়ে থাকার চিত্র। স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে জানা যায় ৩/৪ বছর পূর্বে পাহাড়টি ভেঙ্গে পড়ে। এখান থেকে এতদিন হয়ে গেলো কেউ একমুটো মাটিও নিতে পারে নাই।

অনুসন্ধানে আরো জানা যায়,একটি বালু খেকো চক্র, মধুখালীর বালি বের করতে না পেরে, তাদের ফায়দা হাসিলের জন্য বারবাকিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ হাবিবুল হক কে জড়িয়ে এ রকম মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করছে। মোশাররফ ও আক্তার  নামের যে ব্যাক্তিদের বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে তারা এলাকার চিহ্নিত বালু ও মাটি পাচারকারী চক্রের অন্যতম সদস্য ও বন মামলার আসামী। তাদের সুযোগ সুবিধা বিঘ্নিত হওয়ায় এ রকম মিথ্যা প্রপান্ডা ছড়িয়ে তাদের স্বার্থ হাসিলের অপচেষ্টা করছে। 

পাহাড়িয়াখালির মইদুর বলেন,খতিয়ান ভুক্ত জায়গায় যাদের জায়গা তারা কেটে সাফ করে ঘর নির্মাণ করেছে। এখানে রেঞ্জারের কাজ কি?

এ নিয়ে টইটং বিট কর্মকর্তা জমির উদ্দিনের সাথে কথা হলে তিনি জানান টইটং বিটসহ বারবাকিয়া রেঞ্জের অধীনে। বনবিভাগে জনবল সংকট রয়েছে। এ সুযোগে বনখেকোরা  এসব অপকর্ম করছে। আমরাও সাধ্যমত এ অপকর্ম রূখে দেওয়ার চেষ্টা করছি। একই সাথে আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহণ করছি।

এ বিষয়ে বারবাকিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা হাবিবুল হক বলেন বালুখেকো একটি সিন্ডিকেট বালু বের করতে না পেরে কিছুদিন পুর্ব হইতে আমার বিরুদ্ধে ধারাবাহিক মিথ্যা অপপ্রচারে নেমেছে।

 

একুশে সংবাদ/বিএইচ

সারাবাংলা বিভাগের আরো খবর