সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

ফরিদপুরে  হোসেন প্রামাণিক নামে এক ব্যক্তিকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন!

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০৮:৩৩ পিএম, ২ এপ্রিল, ২০২৪

ফরিদপুরে সম্পত্তি নিয়ে বিরোধে  হোসেন প্রামাণিক নামে এক ব্যক্তিকে  গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে তারই আপন ভাইদের বিরুদ্ধে। ঠেকাতে এলে তার স্ত্রী ও কলেজপড়ুয়া মেয়েকেও মারধর করা হয়েছে।

সোমবার (০১ এপ্রিল) সকালে সদর উপজেলার ঈশান গোপালপুর ইউনিয়নের চাঁদপুর পূর্ব মল্লিকপাড়ায় এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

পরে ৯৯৯ নম্বরে খবর পেয়ে কোতোয়ালি থানা পুলিশের একটি দল তাদের উদ্ধার করে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসে। পরে তাদের হাসপাতালের ট্রমা সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (০২ এপ্রিল) কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুজন বিশ্বাস এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।  

নির্যাতনের শিকার হোসেন প্রামাণিক জানান, সোমবার সকাল ৬টার দিকে তিনি বাজারে যাচ্ছিলেন।

পথিমধ্যে তার ভাই কাদের, লতিফ, আজিজুল, মাইনুদ্দিন, মুরশিদসহ সাত থেকে আটজন তাকে দেখে ধাওয়া করেন। পরে তিনি দৌড়ে একটি বাড়ির দিকে যেতে চাইলে চারজন তাকে ঘিরে ধরেন। পরে তাকে গলায় গামছা দিয়ে টেনেহিঁচড়ে চ্যাংদোলা করে বাড়ির মধ্যে টেনে নিয়ে রান্নাঘরের সামনে লিচু গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করা হয়। এরপর লতিফ হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে ও প্লাস দিয়ে আহত করেন। আব্দুল, আজিজুল ও মুরশিদ বাঁশ ও লাঠি দিয়ে তাকে পেটায়। হামলার সময় তাদের সঙ্গে দুজন নারীও ছিল। তার পা ভেঙ্গে গেছে বলে জানান তিনি। সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

এদিকে হোসেন প্রামাণিকের ওপর নির্যাতনের খবর পেয়ে তার স্ত্রী নাজমা বেগম (৪৫) ও তার মেয়ে নুপুর (২০) ও ফাতেমা (২২) তাকে বাঁচাতে এলে তাদেরকেও মারধর করা হয়।  

স্ত্রী নাজমা বেগম বলেন, আশেপাশের বাড়ির লোকজন আমার স্বামীকে রক্ষায় এগিয়ে আসেনি। এরপর আমিসহ মেয়েরা তাকে উদ্ধার করতে এগিয়ে এলে আমাদেরও মারধর করেন তারা। মারধরে পা ভেঙ্গে গেছে। এরপর ৯৯৯ নম্বরে ফোন করলে পুলিশ এসে আমাদের উদ্ধার করে।  

কোতোয়ালি থানার এসআই সুজন বিশ্বাস বলেন, জরুরি নম্বরে কল পেয়ে হোসেন প্রামাণিক ও তার স্ত্রীকে আহতাবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তবে সে সময়ে হামলার সঙ্গে জড়িত কাউকে পাওয়া যায়নি। আহতদের প্রথমে চিকিৎসা নিয়ে তারপর মামলা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।  

জানা গেছে, হোসেন প্রামাণিকের বাবা মৃত ওয়াহেদ প্রামাণিক চার একর ৩৬ শতাংশ জমি বড় পীর আব্দুল কাদের জিলানী (রহ.) ও খাজা মাইনুদ্দিন চিশতি (রহ.) এর নামে ওয়াক্ফ করে যান। ওই জমির মোতয়াল্লী ছিল বড় ভাই আব্দুল কাদের ও মেজো ভাই মাইনুদ্দিন প্রামাণিক। ওয়াকফকৃত সম্পত্তির ফসলাদি, ফলফলাদি ও গাছপালার সম্পদ তারাই ভোগদখল করতেন। এরপর ২০২২ সালের আগস্টে ওয়াক্ফ এস্টেট হোসেন প্রামাণিককে মোতয়াল্লী নিযুক্ত করে। তখন থেকেই তার ওপরে ভাইয়েরা রাগান্বিত।

হোসেন প্রামাণিক বলেন, প্রায় এক বছর আগে ভাইয়েরা তাকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেন। ওই ঘটনায় একটি মামলা চলমান রয়েছে। এরপর গত ২০ মার্চ ও ২৭ মার্চ রাতে পরপর দুবার আমার বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। এ নিয়ে থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। আজ আবার এ হামলা করেন তারা।

 

একুশে সংবাদ/বিএইচ

সারাবাংলা বিভাগের আরো খবর