সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

তানোরে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের যোগসাজশে নিষিদ্ধ সেচ মটারের ছড়াছড়ি

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০৪:১৪ পিএম, ২২ মার্চ, ২০২৪

রাজশাহীর তানোরে দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে নিষিদ্ধ সেচ মটার পাম্প স্থাপন। এমনকি বাড়ি বাড়ি ৩হর্স ৫ হর্স মটার পাম্প বসিয়ে দেয়া হচ্ছে জমিতে সেচ। আর এইসব নিষিদ্ধ সেচ মটার পাম্প গুলোতে অবৈধ ভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে চলেছে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের কর্তারা। এতে করে মাঠ জুড়ে অবৈধ সেচ মটার পাম্প ছড়াছড়ির জন্য চরম হুমকির মুখে পড়েছে বিএমডিএর সেচ ব্যবস্থা। প্রতিনিয়ত যে ভাবে অবৈধ সেচ মটার পাম্প স্থাপন করা হচ্ছে তাতে পানি সংকটে পড়ে অকেজো হয়ে পড়ছে বিএমডিএর গভীর নলকূপের ডিপ গুলো। 

জানা গেছে, তানোর পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের একশ্রেণীর কর্মকর্তারা অর্থের বিনিময়ে অবৈধ মটরে বিদ্যুতের সংযোগ দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের যোগসাজশে কিছু অসাধু ব্যাক্তিরা মৎস্য চাষের নামে পল্টি খামারের নামে অবৈধ ভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে বিএমডিএর গভীর নলকূপ ডিপের স্কিমের ভিতরে সেচ দিচ্ছেন অহরহ। এমনকি বাড়ির ভিতরে মটার পাম্প স্থাপন করে ফিতায় করে দেয়া হচ্ছে জমিতে সেচ। 

আর এসব বাড়ির মটার পাম্প থেকে যারা জমিতে সেচ দেয় তাদের কাছে থেকে প্রতিমাসে বিদ্যুৎ বিলের সাথে জরিমানার নামে নেয়া হয় অতিরিক্ত ১৫শ থেকে ২হাজার করে টাকা। যা বিদ্যুৎ বিলের কপিতে উল্লেখ করা হয়না। ফলে  তানোর পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের কিছু মুনাফা লোভী অসাধু কর্মকর্তার অনিয়ম দূর্নীতিকে কাজে লাগিয়ে মানুষও গণহারে দেয়া শুরু করেছে অবৈধ মটার পাম্প। কেউ মাছ চাষের নামে কেউ পল্টি খামারের নামে আবার কেউ সেচ কমিটির অনুমতি ছাড়াই স্থাপন করছেন ৫হর্স মটার পাম্প। অন্যদিকে অবৈধ অর্থের বিনিময়ে মটার গুলোতে বিদ্যুতের সংযোগ দিচ্ছেন পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তারা। এতে সহজেই বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়ায় বিএমডিএর গভীর নলকূপ ডিপের স্কিম দখল করে ডিপের পাশে মটার মটার মটারের পাশে মিনি মটার পাম্প বসিয়ে দেদারসে সেচ দেয়া হচ্ছে। যার জন্য বিএমডিএর গভীর নলকূপ ডিপ টিউবওয়েল গুলো পানির লেয়ার থেকে পানি তুলতে অক্ষম হয়ে পড়ছে। কৃষকরা বলছেন, যেভাবে মটার পাম্প বসিয়ে নিজ নিজ জমিতে সেচ দেয়া হচ্ছে তাতে অচিরেই বরেন্দ্র অঞ্চল তানোরে পানির তীব্র সংকট দেখা দিবে। ইতিমধ্যে মটারের ছড়াছড়িতে বরেন্দ্রের ডিপ টিউবওয়েল গুলো পানি সংকটে পড়ে অকেজো হয়ে পড়েছে। আর কিছু দিন পরে ডিপের পানিতে জমি সেচ দেয়ায় বন্ধ হয়ে পড়বে।

সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়, বিগত ২০১৪ সালে কৃষি মন্ত্রণালয় পরিপত্র জারি করেন। পরিপত্রে বলা হয় বরেন্দ্র অঞ্চলে ভূগর্ভস্থ পানির সংকট মোকাবেলায় সেচ মটর স্থাপন নিরুৎসাহিত (বন্ধ) করে তা বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলা সেচ কমিটিকে কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়। অথচ সেই নির্দেশনা লঙ্ঘন করে অহরহ অবৈধ সেচ মটর স্থাপন করা হয়েছে। আবার সেই মটরে পল্লী বিদ্যুৎ থেকে সংযোগ দেয়া হয়েছে। এবিষয়ে উপজেলা সেচ কমিটির এক সদস্য বলেন, যেখানে মটর বসানোর সুযোগ নাই, সেখানে মটরে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয় কিভাবে ? এবিষয়ে সাবের আলী বলেন, পল্লী বিদ্যুতের পরামর্শে তারা মটর স্থাপন ও বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়েছেন, এখানে অনিয়মের কিছু নাই। 

এবিষয়ে বিএমডিএ তানোর জোনের সহকারী প্রকৌশলী মাহাফুজুর রহমান বলেন, গভীর নলকুপের কমান্ড এরিয়ায় সেচ মটর স্থাপনের কোনো সুযোগ নাই, বিদ্যুৎ সংযোগের তো প্রশ্নই উঠেনা। তিনি বলেন, অবৈধ মটরের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে পল্লী বিদ্যুৎকে বলা হয়েছে। এবিষয়ে জানতে চাইলে তানোর পল্লী বিদ্যুৎ কর্মকর্তা (এজিএম) কামাল হোসেন  বলেন, এসব বিষয়ে ডিজিএম স্যার ভাল বলতে পারবেন। এবিষয়ে পল্লী বিদ্যুৎ তানোরের ডিজিএম জহুরুল ইসলাম বলেন, আপনারা (সাংবাদিক) অভিযোগ দেন অভিযোগ না পেলে আমরা কি করবো।

 

একুশে সংবাদ/বিএইচ

সারাবাংলা বিভাগের আরো খবর