সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

আদালতে ৩ তলা থেকে পড়ে গেলেন স্বামী-স্ত্রী

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০৭:১১ পিএম, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৪

সীমা খাতুন ও মামুন দম্পতির বিয়ে হয়েছে ১০ বছর। এখন পর্যন্ত তারা নিঃসন্তান। সন্তান না হওয়ার একপর্যায়ে তাদের মাঝে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এই বিরোধের জেরে স্বামী মামুনের নামে আদালতে নারী নির্যাতন ও যৌতুকসহ চারটি মামলা করেন স্ত্রী। সেই মামলার ধার্য দিনে স্ত্রীকে জোর করে সংসারে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে ধস্তাধস্তি করতে গিয়ে তিন তলা থেকে পড়ে তারা পড়ে যান। এতে  দুজনেই মারাত্মক আহত হয়েছেন।

সোমবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে মেহেরপুর জেলা জজ আদালতের তৃতীয় তলায় এ ঘটনা ঘটে।

মামুন গাংনী উপজেলার সহড়াতলা গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে এবং তার স্ত্রী সীমা খাতুন একই উপজেলার রামদেবপুর মালিপাড়া গ্রামের ফরিদ উদ্দিনের মেয়ে।

পারবারিক সূত্রে জানা গেছে, ১০ বছর আগে মামুন ও সীমার বিয়ে হয়। বিয়ের ১০ বছর পার হলেও তাদের কোনো সন্তান না হওয়ায় স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে বিবাদ সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে স্ত্রী তার স্বামীর সাথে সংসার না করার জন্য পারিবারিকভাবে জানান। স্বামী মামুন তার স্ত্রীকে তালাক দিতে না চাওয়ায় বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। অবশেষে সীমা খাতুন তার স্বামীর নামে যৌতুক ও নারী নির্যাতনসহ চারটি মামলা করেন।

আজ মেহেরপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে যৌতুক মামলা (মামলা নং সিআর ১৭৬/২৩) নিষ্পত্তির দিন ধার্য ছিল। আদালতের বিজ্ঞ বিচারক জুয়েল রানা ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা পরিশোধের নিমিত্তে মামলা নিষ্পত্তির রায় দেন। রায় শেষে আদালত ভবনের তৃতীয় তলার বারান্দায় স্ত্রী সীমা খাতুনকে বুঝিয়ে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন মামুন। সীমা খাতুন তার সংসারে যেতে রাজি হচ্ছিলেন না। তাদের দুজনের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। একপর্যায়ে দুজনেই তিনতলা থেকে নিচে পড়ে যান। আদালত চত্বরের লোকজন তাদের দুজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে মেহেরপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।

আহত মামুন বলেন, আমি তাকে বুঝিয়ে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলাম। তার সাথে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এ সময় সে তিনতলা থেকে পড়ে যাচ্ছিল। আমি তাকে বাঁচাতে গিয়ে দুজনেই তিন তলা থেকে পড়ে যাই।

আহত সীমা খাতুন বলেন, হাজিরা শেষে আদালতের বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিলাম। এ সময় মামুন আমাকে জোর করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। আমি যেতে না চাইলে আমাকে ধাক্কা দিয়ে তিনতলা থেকে ফেলে দিতে চায়। পড়ে যাওয়ার সময় আমি তাকে জড়িয়ে ধরলে দুজনেই পড়ে যাই।

মামুনের পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রাসেল বলেন, মামুন তার স্ত্রী সীমা খাতুনকে ভালোবাসে। সে তার স্ত্রীকে তালাক দিতে চায় না। আজ আদালতে যৌতুক মামলা নিষ্পত্তির দিন ছিল। ২ লাখ ৫০ হাজার টাকায় বিষয়টি নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন আদালতের বিজ্ঞ বিচারক। তারপরও মামুন তার স্ত্রীকে বুঝিয়ে সংসারে ফেরানোর চেষ্টার একপর্যায়ে ধস্তাধস্তি করতে গিয়ে এ ঘটনা ঘটে।

সীমার পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, স্বামী মামুন স্ত্রীকে তিন তলা থেকে ফেলে দিতে চেয়েছিল কি না তা তদন্ত হওয়া দরকার।


একুশে সংবাদ/ঢ.প.প্র/জাহা

সারাবাংলা বিভাগের আরো খবর