সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

পেট্রোকেমের ধান ও ঔষধ ব্যবহারে সর্বশান্ত কৃষক, ক্ষতিপূরণ দাবি

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০৭:৪৬ পিএম, ৮ জুলাই, ২০২৩

বাগেরহাটে গেল বোরো মৌসুমে পেট্রোকেম (বাংলাদেশ) লিমিটেড কোম্পানির ধানের বীজ ও মাজরা পোকা দমনকারী ঔষধ “ফারটেরা” ব্যবহারে সর্বশান্ত হয়েছে কয়েক হাজার কৃষক। বীজে অঙ্কুরোধ গম কম হওয়া এবং  “ফারটেরা” ব্যবহারে পোকা দমন না হওয়ায় উৎপাদন নেমেছে অর্ধেকের নিচে। যার ফলে লোকসানের মুখে পড়েছেন চাষীরা।

 

শনিবার (৮ জুলাই) দুপুরে বাগেরহাট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে পেট্রোকম কোম্পানির কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন ক্ষতিগ্রস্থ চাষীরা।

 

সংবাদ সম্মেলনে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক মো: কামরুজ্জামান টুকু বলেন, এবারের বোরো মৌসুমে আমরা পেট্রোকেম (বাংলাদেশ) লিমিটেড কোম্পানি‘র ধানের বীজ ব্যবহার করি। এই বীজে আমাদের কাঙ্খিত অঙ্কুরোধগম হয়নি। এরপরেও আমরা কোনভাবে চেষ্টা করেছি যাতে কিছু ধান হয়। পরে কোম্পানির প্রতিনিধিসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ হয়ে মাজরা পোকা দমনে একই কোম্পানির “ফাটেরা“ নামক একটি ঔষধ ব্যবহার করি। এই ঔষধে আমাদের ধানের পোকা তো মরেনি, বরং আরও বেশি পোকার আক্রমন হয়েছে ধাণের ক্ষেতে। যার ফলে আমাদের ধানের ফলন অনেক কম হয়েছে। যেখানে ৬৩ শতকের এক বিঘা জমিতে কমপক্ষে ৬০ থেকে ৭০ মন ধান হওয়ার কথা সেখানে আমাদের জমিতে মাত্র ১০ থেকে ১৫ মন ধান হয়েছে। অনেকের জমিতে ১০ মনের নিচেও হয়েছে। এই অবস্থায় আমরা দোকানির বাকি টাকাও পরিশোধ করতে পারিনি। একটা মৌসুম আমাদের শেষ হয়ে গেছে। আমরা একে বারে সর্বশান্ত হয়ে গেছি।

 

এসময় উপস্থিত অন্যান্য কৃষকরা পেট্রোকেম (বাংলাদেশ) লিমিটেডের কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। ক্ষতিপূরণ পেতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।

 

এবার বোরো মৌসুমে বাগেরহাটের কৃষকরা পেট্রোকেম-৬, পাইয়োনিয়ার এ্যাগ্রো-১৪ ধান  ক্রয় করেছেন ৪০০ থেকে ৪২০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া কীট নাশক “ফাটারা” ক্রয় করেছেন সাড়ে তিনশ টাকা কেজি দরে।

 

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত পেট্রোকেম (বাংলাদেশ) লিমিটেডের বাগেরহাটের ডিলার (সরবরাহকারী) ব্যবসায়ী সুমন শেখ বলেন, ১০ বছর ধরে পেট্রোকেম (বাংলাদেশ) লিমিটেডের সাথে ব্যবসা করে আসছি। ২০২২ সালের জুন থেকে চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত এক বছরে এক কোটি টাকার বেশি ঔষধ ও ২০ লক্ষ টাকার ধান বিক্রি করেছি। এর বেশিরভাগই বাকিতে বিক্রি করেছি চাষীদের কাছে। চাষীরা এখন আমার কাছে ক্ষতিপূরণ চাচ্ছেন। আমি একদিকে যেমন কোম্পানিকে ৮০ শতাংশ টাকা দিয়েছি, অন্যদিকে চাষীদের মন রক্ষা করতে গিয়ে নিস্ব হয়ে গেছি। বিষয়টি কোম্পানিকে জানানো হলেও, তারা কোন সুরহা করেনি। চাষীদের বাঁচাতে এবং ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে কোম্পানির কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করেন এই ব্যবসায়ী।

 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বাগেরহাটর উপ-পরিচালক মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, কৃষকদের পক্ষ থেকে আমাদেরকে এ বিষয়ে কিছুই জানানো হয়নি। কৃষকরা আমাদেরকে জানালে, আমরা খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করব।

 

একুশে সংবাদ/শে.স.প্র/জাহা

সারাবাংলা বিভাগের আরো খবর