সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

সাবেক অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে রেজুলেশন জালিয়াতি ও টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০৩:৩৪ পিএম, ২১ জুন, ২০২৩

মদন জোবাইদা রহমান মহিলা ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে অডিট আপত্তি, রেজুলেশন জালিয়াতি করে টাকা আত্মসাৎ ও দুজন সদস্য নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

 

এ বিষয়ে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোহাম্মদ হাজী করনী গত ২৬ এপ্রিল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড সহ জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

 

অভিযোগে জানা যায়, মদন জোবাইদা রহমান মহিলা ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মোঃ আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে গভর্নিং বডির গঠিত অডিট কমিটির ১৪ লাখ ১৯ হাজার ৭৩৪ টাকার আত্মসাৎ, অভ্যন্তরীণ অডিট আপত্তি নিষ্পত্তির জন্য প্রক্রিয়াধীন আছে। অডিট আপত্তি মিথ্যা প্রমাণ করার জন্য আনোয়ার হোসেন রেজুলেশন জালিয়াতি করেন, যা দায়িত্ব হস্তান্তর করার পর মূল রেজুলেশন খাতা এবং সংশ্লিষ্ট রেজুলেশন ইতোপূর্বে যেসব কাজে ব্যবহার করা হয়েছে তা থেকে পাওয়া এমনকি অধ্যক্ষের নিজের হাতে সত্যায়িত করা অনুলিপির সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ। এই রেজুলেশন বইয়ের ৪৭ পৃষ্ঠায় ৮৬ নং সভায় ৫ নং কার্যবিবরণীর ৪ নং লাইনে ‘অনুমোদিত’ হয় লিখেছেন। ওই রেজুলেশনের কপি ২০১৮ সালের জুন মাসে মোহাম্মদ হাজী করনীর সহকারী অধ্যাপকের পদোন্নতির এমপিও আবেদনের ক্ষেত্রে ব্যবহার করায় তা সংরক্ষিত আছে।

 

তবে ‘অনুমোদিত’ কথাটি লেখা নেই। ৫ নং রেজুলেশন বইয়ের ১০৪ পৃষ্ঠায় ৯৮ নং সভার ২ নং কার্যবিরণীর শেষ লাইনে ‘তবে গভর্নিং বডির অনুমোদিত বিষয়াবলি ব্যতীত’ লাইনটি পরবর্তী রেজুলেশনে নতুন করে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এবং ১০৫ পৃষ্ঠায় ৪ নং কার্যবিবরণীর শেষাংশে ‘জুলাই/২০ হতে নভেম্বর পর্যন্ত ৫ মাসের বকেয়া ৪২ হাজার ৫০০ টাকা পরিশোধের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয়’ লাইনটি পরবর্তী রেজুলেশনে নতুন করে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। অতিরিক্ত একটি ধারা চাকরির স্থায়ীকরণ নামে সংয়োজন করা হয়েছে। অভিযোগের অনুলিপি ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং ময়মনসিংহ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালককে দেয়া হয়েছে। কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ বিদ্যুৎসাহী সদস্য পদে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহিমের মনোনয়ন প্রস্তাব কলেজের সভাপতিকে না জানিয়ে এডহক কমিটির রেজুলেশন ছাড়াই সভাপতির স্বাক্ষর না নিয়ে অতি গোপনে বিধি বহির্ভূত কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করেন।

 

সাবেক অধ্যক্ষ আনোয়ার হোসেন এককভাবে ১১০নং সভায় বিদ্যালয় কর্তৃক মনোনয়নের জন্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহিমকে বিদ্যুৎসাহী ও বোর্ড কর্তৃক মনোনয়নের জন্য মোঃ শাহ আলমের নাম অন্তর্ভুক্তি করায় সভাপতি উক্ত রেজুলেশনটি বাতিল করেন। অথচ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের গভর্নিং বডি গঠন নীতিমালায় সভাপতি ও বিদ্যোৎসাহী সদস্য পদে মনোনয়নের প্রস্তাব প্রেরণের ক্ষমতা এডহক কমিটির নেই।

 

গত ২৪/০৪/২০২৩ইং তারিখে ১১৪নং সভায় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাদের সদস্য পদ কেন বাতিল করা হবে না মর্মে নোটিশ প্রদান করে। গত ১১/৫/২০২৩ইং তারিখে ১১৫নং সভা ২, ৩ ও ৪ নং কার্যবিবরণী সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে সদস্যপদ বাতিল করার জন্য সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

 

এ ব্যাপারে অধ্যক্ষ আনোয়ার হোসেন বলেছেন, আমি জোবাইদা রহমান মহিলা কলেজ থেকে ছাড়পত্র এবং অভিজ্ঞতার সনদপত্র নিয়ে নেত্রকোনা সদরের চন্দ্রনাথ কলেজে যোগ দিয়েছি। আমাকে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ফাঁসানোর জন্য ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এসব অভিযোগ করেছেন। আমি রেজুলেশনে কোনো ধরনের জালিয়াতি করিনি। আমি অডিট আপত্তির জবাব সংশ্লিষ্ট নথিপত্রসহ জমা দিয়েছি।

 

উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও জুবাইদা রহমান মহিলা কলেজের সভাপতি মোঃ শাহ আলম মিয়া জানান আমার পূর্বে যিনি এই কলেজের সভাপতি ছিলেন। তিনি তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট পত্র প্রেরণ করেছেন বলে আমি শুনেছি।

 

একুশে সংবাদ/সা.খ.প্র/জাহা

সারাবাংলা বিভাগের আরো খবর