সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

নানা সমস্যায় জর্জরিত আনোয়ারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, রোগীদের দুর্ভোগ চরমে

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০৫:৩৫ পিএম, ২৩ মে, ২০২৩

নানা সমস্যায় জর্জরিত চট্টগ্রামের  আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। এ হাসপাতালের প্রয়োজনীয় সেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে আশেপাশের ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও প্রাইভেট ডাক্তাদের কাছে ভিড় জমাচ্ছে রোগীরা। এছাড়াও রোগীদের ছুটতে হচ্ছে চট্টগ্রাম শহরে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতালে। এতে করে সবচেয়ে বেশি বিড়ম্বনার মধ্যে পড়তে হয়েছে হতদ্ররিদ্র রোগীদের। গুনতে হচ্ছে বাড়তি টাকা।

 

সরেজমিনে হাসপাতাল ঘুরে রোগীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এ হাসপাতালের সেবা নিয়ে রোগীদের বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। হাসপাতালে বিদ্যুতের প্রচুর ঘাটতি রয়েছে। হাসপাতালে জেনারেটর থাকার পরও সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন না রোগীরা। হাসপাতালের বাথরুমগুলো ব্যবহারের অনুপযোগী।

ময়লা ও দুর্গন্ধে প্রবেশ করার কোন পরিবেশ নেই। পানির সমস্যা নিয়ে রোগীরা রয়েছে অনেক কষ্টে। রোগীদের জন্য ভূমিমন্ত্রীর মায়ের দেওয়া পানি ব্যবহারের একটা প্ল্যান্ট বসিয়ে দিলেও সেটি নষ্ট হয়ে গেছে বছরের অধিক সময় আগে। যেটা ইতিমধ্যে মেরামত করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বলে জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। টিউবওয়েল নেই, হাসপাতালের সামনে বড় সাইনবোর্ডটি ও খুলে ফেলা হয়েছে। রাতে বিদ্যুৎ থাকলেও জ্বলে না বাইরের লাইটগুলো। ফলে পুরো মেডিকেল এরিয়া থাকে অন্ধকারাচ্ছন্ন।

 

অতীতে ডাক্তাররা আবাসিক ভর্তিকৃত রোগীদের দেখতে দুই বার রাউন্ড দিলে বর্তমানে সারাদিনে রাতে শুধুমাত্র একবার রাউন্ড দেওয়া হয়। ডাক্তাররা ফিঙ্গার প্রিন্ট দিয়ে যথাসময়ে উপস্থিত হলেও রোগীদের চিকিৎসা সময় দেন অল্প সময়। আউটডোরের একাধিক রোগীদের অভিযোগ চিকিৎসা সেবা নিতে এসে প্রায় ১ঘন্টা যাবৎ দাড়িয়ে আছি। ডাক্তার নাস্তা করতে গেছে বললেও এখনো পর্যন্ত আসে নাই।

 

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালে জেনারেটর আনার পর থেকে জেনারেটরটি বিভিন্ন সমস্যার কারণে চালানো যাচ্ছে না। ইতিমধ্যে নতুন জেনারেটরটির ওয়ারেন্টি মেয়াদ ও চলে গেছে চালু না করা অবস্থায়। রোগীদের দাবী আনোয়ারা উপজেলায় একমাত্র বড় হাসপাতালে যদি এই রকম বিদ্যুতের ঘাটতি হয় ও চিকিৎসা সেবা পেতে বেগ পেতে হয় তাহলে সাধারণ মানুষ যাবে কোথায়। সুতরাং এবিষয়ে বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের সাথে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বসে এটার একটা সমাধান করা উচিত।

এ ব্যাপারে কিছুদিন আগে চট্টগ্রাম জেলার সিভিল সার্জন ডা: মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী হাসপাতালে পরিদর্শনে এসে বিভিন্ন অনিয়ম ও অপরিচ্ছন্নতা দেখে অসন্তুষ্ট প্রকাশ করেন এবং বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেন।

 

এ ব্যাপারে আনোয়ারা প্রেসক্লাবের সভাপতি আব্দুল নুর চৌধুরী জানান, উপজেলার একমাত্র সরকারি হাসপাতালটির প্রতি প্রশাসনের কঠোর নজরদারী প্রয়োজন। সরকার দেশের মানুষের সেবা দিতে বদ্ধপরিকর সেখানে উক্ত হাসপাতালের সেবার মান দিনে দিনে কমে যাওয়ার অভিযোগ যে কোন সচেতন মহলকে ভাবিয়ে তুলে। সুতরাং সেবার মান বাড়াতে চিকিৎসকদের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।

 

এ ব্যাপারে আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: মোহাম্মদ মামুনুর রশীদ জানান, আমি কিছু বিষয়গুলো নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানিয়েছি কিছু কাজ ইতিমধ্যে টেন্ডার হয়েছে বাকী কাজগুলো হয়ে যাবে বলে আশা করেন তিনি।

 

একই সাথে হাসপাতালের অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলো  খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে জানান তিনি।  

 

একুশে সংবাদ/এসএপি

সারাবাংলা বিভাগের আরো খবর