সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

যদি রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম থাকে, অন্যরা দ্বিতীয় শ্রেণীরঃ ড. অনুপম

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০৪:০৮ পিএম, ১৯ অক্টোবর, ২০২১

দেশের উন্নয়ন হয়েছে কিন্তু নাগরিকদের মনোজগতের পরিবর্তন ঘটেনি বলে মন্তব্য করেছেন সমাজ বিজ্ঞানী ড. অনুপম সেন।পূজা মণ্ডপ এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার প্রতিবাদে সোমবার বিকেলে চট্টগ্রাম নগরীর চেরাগী পাহাড় চত্বরে সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।

অনুপম সেন বলেন, ‘রাষ্ট্রের সংস্কৃতির পরিবর্তন হয়নি। ধর্মের নামে উপমহাদেশে অন্ধকার বিরাজ করছে। সংস্কৃতি চর্চার মধ্য দিয়ে মনোজগতের পরিবর্তন ঘটাতে হবে।’রাষ্ট্রধর্ম প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে অনুপম সেন বলেন, ‘যদি রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম থাকে তবে অন্যরা দ্বিতীয় শ্রেণির। যদি বলেন সবাই নাগরিক তবে তো রাষ্ট্রধর্ম থাকতে পারে না। কোনো উন্নত রাষ্ট্রে তা নেই।

‘১৯৮৮ সালে স্বৈরাচার এরশাদ যে রাষ্ট্রধর্ম ঘোষণা করেছিলেন, তা বাদ দিতে হবে। বাংলাদেশের সংবিধান একটি সত্যিকারের অসাম্প্রদায়িক সংবিধান হতে হবে।’তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন দেশে বঙ্গবন্ধু বাঙালির প্রথম সংবিধান দিয়েছিলেন। ধর্মনিরপেক্ষতার ব্যাখ্যা দিয়ে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, এই সংবিধান হিন্দু বা মুসলমানের নয়। প্রতিটা নাগরিক নিজ নিজ ধর্ম পালন করবে। কেউ ধর্মকে ব্যবহার করতে পারবে না।’

পুলিশ-বিজিবির ওপর নির্ভর করে হামলা থেকে রক্ষা মিলবে না উল্লেখ করে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘ সব রাজনৈতিক দল, দেশপ্রেমিক জনগণ, ধর্মপ্রাণ আলেম-ওলামা, পুরোহিত ও যাজকদের সংঘবদ্ধভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশে দাঁড়াতে হবে।

‘বাংলাদেশ যেন আফগানিস্তান না হয়। সব ধর্মের মানুষের সহাবস্থান যদি দেশে নিশ্চিত করতে না পারি, তাহলে উপমহাদেশে বিপর্যয় অনিবার্য।’কবি ও সাংবাদিক আবুল মোমেন বলেন, ‘সমাজে যে দূষণ তা একদিনে দূর করা যাবে না। শিক্ষা ব্যবস্থা উদার মানবিক বহুত্ববাদী করতে হবে। সমাজের পচন ঠেকাতে সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে শেষবারের মত বড় রকমের ধাক্কা দিতে হবে।’

মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছে একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়ার লক্ষ্যে। এত বছর পরেও সাম্প্রদায়িক নির্যাতন হচ্ছে। সরকারের ওপর আশা করে বসে থেকে লাভ নেই। এলাকায় এলাকায় সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধ কমিটি গড়ে তুলতে হবে।’

আবৃত্তিকার রাশেদ হাসানের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন অধ্যাপক ডা. একিউএম সিরাজুল, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো.ইউনুছ, কমিউনিস্ট পার্টি চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক অশোক সাহা, ওয়ার্কার্স পার্টি চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক শরীফ চৌহান, জাসদ নেতা জসিম উদ্দিন বাবুল, বাংলাদেশ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর, চট্টগ্রাম চলচ্চিত্র কেন্দ্রের সভাপতি শৈবাল চৌধুরী, সাংবাদিক কামরুল হাসান বাদল, রাজিব শর্মা, নারী নেত্রী নূরজাহান খান, জেসমিন সুলতানা পারু, নগর পরিকল্পনাবিদ দেলোয়ার মজুমদার ও সঙ্গীতশিল্পী কল্পনা লালা।
      
 
একুশে সংবাদ/এ/আ

সারাবাংলা বিভাগের আরো খবর