সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

ভূমিমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা, কেইপিজেড দখলে নিয়েছে জন্মভূমি-ধানের জমি, শেষ ঠিকানা কবর স্থানও নিয়ে গেলে আমরা যাবো কই

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০৫:১৪ পিএম, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১

চট্টগ্রামের আনোয়ারা  ও কর্ণফুলী উপজেলায় অবস্থিত কোরিয়ান ইপিজেড জমি অধিগ্রহণ করেছিল দুই উপজেলার মানুষের ঘবরাড়ি, চাষের জমিসহ হাজার হাজার একর জায়গা। কিন্তু ভূমি অধিগ্রহণ আইনের পরিপন্থী মসজিদ, মন্দির, শ্বশান ঈদগাহ, কবরস্থান ও ধর্মীয় উপসানালয়ের জায়গাগুলোও দখলে নিতে মরিয়া কেইপিজেড কর্তৃপক্ষ। উত্তর বন্দর গ্রামের শত বছরের কবরস্থান রক্ষায় এলাকাবাসী দীর্ঘ এক যুগ ধরে কেইপিজেডের সাথে আইনগত লড়াই করে আসলেও কেইপিজেড কর্তৃপক্ষ জোরপূর্বক কবরস্থানের খালি জায়গা দখলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এ নিয়ে এলাকাবাসী ভূমিমন্ত্রীর জোরালো হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এলাকাবাসীরা  জানান, কেইপিজেড আমাদের সব নিয়ে গেলো। শেষ ঠিকানা করবস্থানও নিয়ে গেলে আমরা লাশ দাফন করবো কোথায়। ঈদের নামাজ আদায় করবো কোথায়। বিষয়টি সুষ্ঠুভাবে সমাধান করতে চাইলেও কেইপিজেড কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন সময় বৈঠক বসার সময় দিয়ে তারা আসেন না বলে অভিযোগ তুলেন এলাকাবাসীরা। গতকাল সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) কেইপিজেড কর্তৃপক্ষ বিষয়টি সমাধান করার জন্য সময় দিয়েছিল কিন্তু এলাকার সব মান্যগণ্য লোকজন উপস্থিত থাকলে ও কেইপিজেড কর্তৃপক্ষ তাদের কোন প্রতিনিধি না পাঠিয়ে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ পাঠিয়ে এলাকাবাসীকে দমন করতে চান বলে অভিযোগ তু্লেছেন এলাকাবাসী। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কেইপিজেডের সাথে আলোচনায় বসার জন্য উপস্থিত ছিলেন এলাকার সাবেক সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট শাহাদাত হোসেন চৌধুরী, ১নং বৈরাগ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সোলায়মান, সাবেক চেয়ারম্যান নবী হোসেন, আইন প্রণয়ন লেখক নূর মোহাম্মদ বাঙ্গালি, নুরুল আবছার মেম্বার, এম এম আজিজ, মুজিবুর রহমান বুলু, আহমদ হোসেন, সাইফুল হেসেন, আকবর মিয়া চৌধুরী, মুজিবুর রহমান, হাফেজ আহমদ, শেখ আহমদসহ এলাকার শত শত মানুষ। কিন্তু কেইপিজেড কর্তৃপক্ষের কোন প্রতিদিধিকে দেখা যায়নি। এ ব্যাপারে ১নং বৈরাগ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোলায়মান বলেন, কেইপিজেড কর্তৃপক্ষ এলাকাবাসীর উপর জুলুম করে যাচ্ছে। কবরস্থান, ঈদগাহ দখলে রাখতে মরিয়া হয়ে যাচ্ছে। ফলে কেইপিজেডের সাথে এলাকার মানুষের একটা দূরত্ব সৃষ্টি হচ্ছে।  বিষয়টি সুষ্ঠুভাবে সমাধানের জন্য আহবান জানান তিনি। এ ব্যাপারে কেইপিজেড ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের পরিদর্শক সাজেদ বলেন, আমরা আইনশৃঙ্খলা শান্তিপূর্ণ রাখতে এসেছি। আশাকরি উভয় পক্ষ বসে একটি সমাধান হবে। বারবার এলাকাবাসীদের সাথে উত্তেজনা পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ার ব্যাপারে আনোয়ারা  প্রেস ক্লাবের সভাপতি প্রবীণ সাংবাদিক আব্দুল নূর চৌধুরী জানান, কেইপিজেডের দখলে প্রায় সরকারী খাস জায়গা। যেহেতু জায়গার মালিক সরকার সুতরাং বিষয়টি জেলা প্রশাসক বা স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে সুষ্ঠুভাবে সমাধান করে ফেলা দরকার। এ সংক্রান্ত বিষয়ে কেইপিজেড এলাকার নিরীহ  মানুষেদেরকে আসামী করে অনেক মামলাও করেছে। সুতরাং জনগণকে হয়রানী না করে ভূমি অধিগ্রহণ আইনের পরিপন্থী ঈদগাহ, কবরস্থান, শ্বশান, মন্দিরসহ সকল ধর্মীয় উপাসনালয়ের সব জায়গা এলাকার গণমানুষের স্বার্থে ছেড়ে দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কেইপিজেডের এজিএম মুশফিকুর রহিম বলেন, এলাকাবাসীদের সাথে আমরা কখনো ঝগড়াঝাঁটিতে যেতে রাজি নই। সরকার আমাদের যে জায়গাগুলো দিয়েছে সেগুলো দখল করতে গেলে যদি বাধা প্রদান করা  খুবই দুঃখজনক। বিষয়টি সম্পর্কে জেলা প্রশাসক এবং স্থানীয় প্রশাসন অবগত আছে। আশাকরি প্রশাসনিকভাবে একটি সমাধান হয়ে যাবে বলে তিনি জানান। 

 

একুশে সংবাদ/এস, এম, সালাহ্উদ্দীন/আশিক

সারাবাংলা বিভাগের আরো খবর