সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

রাতের আধারে ঝলসে দেয়া হলো অন্তঃসত্ত্বা মিলির মুখ

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০২:৫৭ পিএম, ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪
অভিযুক্ত শফিকুল ইসলাম (মানিক)। ভুক্তভোগী মিলি আক্তার।

প্রথমে দেয়া হয় প্রেমের প্রস্তাব। তা প্রত্যাখ্যান করে পরিবারের পছন্দ করা ছেলেকে বিয়ের পর মিলি আক্তার শুরু করেন সংসার। এতেও পিছু ছাড়েনি বখাটে মানিক। খুদেবার্তায় দিয়ে আসছিল বড় ধরনের ক্ষতি করার হুমকি। যেই কথা সেই কাজ, রাতের আধারে ঘরে ঢুকে অ্যাসিডে ঝলসে দেয়া হয় তার মুখমণ্ডল। এমনই এক অন্তঃসত্ত্বা তরুণী ভর্তি হয়েছেন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে।

বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা হয় ভুক্তভোগী মিলি আক্তারের মায়ের সঙ্গে। হাসপাতালে দুশ্চিন্তার দিন গুণছেন মিলির মা রাশেদা বেগম।

তিনি বলেন, প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় অ্যাসিডে ঝলসে দেয়া হয়েছে মেয়েকে। জানিনা মেয়ে কবে সুস্থ হবে, কিংবা সুস্থ হয়ে ফিরলেও আদতে মিলির গর্ভের অনাগত সন্তান দেখাতে পারবে কিনা পৃথিবীর আলো!

জানা গেছে, খুদে বার্তায় বড় ধরনের ক্ষতি করার হুমকি দিয়ে আসছিলো মানিক। এক বার্তায় লেখা হয়, হা হা হা তুই কি মনে করেছিস আমি সব ভুলে গেছি? শুনলাম তুই মা হতে চলেছিস। তুই এক বাচ্চার মা কেন, পাঁচ বাচ্চার মা হলেও তোকে ছাড়বো না। দোয়া করি, বাচ্চা হওয়ার সময় তোর যেনো মৃত্যু হয়। তাহলে মসজিদে ২০ হাজার টাকা দিবো। আর না হয় আমার হাতে তোর মৃত্যু হবে রে মিলি।

আরেক বার্তায় বলা হয়, ‘আজ থেকে দিন গণনা শুরু কর মিলি।’

স্বজনরা জানান, মিলির মায়ের মনকে শান্তনা দেয়ার কোনো ভাষা জানা নেই কারও। কয়েকদিন আগে চাঁদপুর মতলবে বাবার বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন সৌদিআরব প্রবাসী সায়েম প্রধানের স্ত্রী মিলি। শবেবরাতের রাতে যখন একই ঘরে মায়ের সাথে নামাজ আদায় করছিলেন, তখনই দরজার কড়া নাড়ে কোনো একজন। "চাচি" "চাচি" বলে মিলির মাকে কয়েকবার ডাক দেন। মিলি নিজে গিয়ে দরজা খুলে দেন। তবে কিছু বুঝে ওঠার আগেই, তার মুখমণ্ডলে জ্বালাপোড়া শুরু হয়ে যায়। চিৎকারে তার মা এগিয়ে গিয়ে মেয়েকে জড়িয়ে ধরলে, তার শরীরেও দহন শুরু হয়।

মিলির মা জানান, গত একবছর আগে বিয়ে হওয়া মিলিকে নিজ এলাকারই মানিক (বিবাহিত) নামে এক যুবক প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছিল। ওই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা হয়। তবুও উত্ত্যক্ত করা ছাড়েননি মেয়েকে। মোবাইল ব্যাংকিং করা মানিক সহজেই পেয়ে যায় মিলির ফোন নাম্বার। সেই নাম্বারে খুদেবার্তার মাধ্যমে বড় ধরনের ক্ষতির হুমকি দিয়ে আসছিল প্রতিনিয়ত।

স্বজনদের অভিযোগ, সেই মানিকই ঘটিয়েছে অ্যাসিড নিক্ষেপের মত ভয়াবহ এ ঘটনা।

শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. তরিকুল ইসলাম বলেন, মিলির শরীরে দাহ্য পদার্থের আলামত পাওয়া গেছে। মুখমণ্ডল, গলাসহ শরীরের বেশ কিছু অংশ ঝলছে গেছে। তার গর্ভের থাকা সন্তানও রয়েছে ঝুঁকিতে।

এ ঘটনায় শফিকুল ইসলাম ওরফে মানিক নামে ওই তরুণকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এর আগে মিলির বাবা মানিককে প্রধান ও বাদল নামের সৌদিপ্রবাসী এক ব্যক্তিকে ইন্ধনদাতা হিসেবে আসামি করে মতলব উত্তর থানায় মামলা দায়ের করেন।

 

একুশে সংবাদ/স.ট.প্র/জাহা
 

রাজধানী বিভাগের আরো খবর