সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

ছাত্রলীগ নেতার সাথে বাকবিতন্ডার জেরে বাস চালককে মারধরের অভিযোগ

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ১১:৪৭ এএম, ১ জুন, ২০২৩

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়(ইবি) শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি বনি আমিন সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে বাস চালককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। বুধবার দুপুর পৌঁনে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ঘটনা ঘটে। এর প্রতিবাদে রাস্তায় বাস আড়াআড়িভাবে রেখে প্রায় দেড় ঘন্টা কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক সড়ক অবরোধ করে রাখে বিক্ষুব্ধ বাস মালিক শ্রমিকরা।

 

 এতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হলে দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা। পরে অভিযুক্তদের বিচারের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী বাস চালক তোফাজ্জল হোসেন সবুজ। পরে শৈলকূপা ও ইবি থানা পুলিশের সহযোগীতায় বাস মালিক সমিতি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সমঝোতায় অবরোধ তুলে নেন তারা।

ভুক্তভোগীর অভিযোগ সূত্রে, কুষ্টিয়া থেকে বনি নামে একটি ছাত্র বাসে আসছিলো। বটতৈল থেকে তিনটি মেয়ে খুলনা যাওয়ার জন্য বাসে উঠলে তাদের বসাতে ওই ছেলেটিকে ছিট ছেড়ে দিতে অনুরোধ করলে তিনি বলেন, ধরে ধরে পথ থেকে লোক নিয়ে আসবেন আর আমরা সিট ছেড়ে দেব কেন? তখন এ নিয়ে উভয়ের মাঝে হালকা কথা কাটাকাটি হয়। এ নিয়ে পরে বাস ক্যাম্পাস গেইটের সামনে পৌঁছালে বনি, জামিল ও তার চার পাঁচজন বন্ধু মিলে বাটাম দিয়ে চালকের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় এলোপাতাড়ি মারতে থাকে। এছাড়া গাড়ির সুপারভাইজার ও হেলপারদেরও বেধড়ক মারধর করে তাদের কাছ থেকে পনেরো হাজার টাকা নিয়ে নেয় বলে অভিযোগ করেন চালক।

 

ভুক্তভোগী চালক তোফাজ্জল হোসেন সবুজ বলেন, আমি তাকে সুন্দরভাবে মেয়েটাকে সিটে বসতে দেওয়ার জন্য বলেছিলাম। তখন সে বললো, আপনারা ধরে ধরে পথ থেকে লোক ওঠাবেন, আর আমরা আপনাকে সিট ছেড়ে দেব। পরে এটা নিয়ে ফোনে আরও চারজনকে ডেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইনগেইটের সামনে সবাই মিলে আমাকে গরু মারার মতো মারলো। ফুটবলের মতো আমার মুখের দুইপাশে অনবরত লাথি মেরেছে তারা। শুরুতে দুই তিন বার রড দিয়ে যেভাবে মেরেছিলো তাতে আমি যদি হাত দিয়ে না আটকাতাম তাহলে মাথায় লেগে আমি সেখানেই মারা যেতাম। বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের শিক্ষার্থীদের দ্বারা এ ধরনের আচরণ কোনোভাবেই মানা যায় না। আমি তাদের উপযুক্ত শাস্তি চাই।

 

অভিযুক্ত শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি বনি আমিন বলেন, বাসে আমার সিটে ড্রাইভার অন্য একজনকে বসাতে চায়। এটা নিয়ে তার সাথে কথা কাটাকাটি হয়। সে আমার সাথে বেয়াদবি করেছিলো। পরে ক্যাম্পাসের সামনে আসলে ১মিনিট কথা বলার জন্য আমি ওনাকে নিচে নামতে বলি। কিন্তু তিনি নিচে নামতে রাজি না হয়ে উল্টো ‘কেন নামবো, কি জন্য?’ বলে চিল্লাচিল্লি  শুরু করলে আশপাশে লোকজন জড়ো হয়ে যায়। তখন সেখানে যারা ছিলো তারা উনাকে মারধর করে। এ বিষয়ে আমি কিছু জানিনা। আর উনার সাথে তো আমার কোনো শত্রুতাও নেই। এ বিষয়ে আরেক অভিযুক্ত জামিল আহমেদ বলেন, ঘটনার সময় আমি ক্লাসে ছিলাম। এ বিষয়ে আমি কিছু জানিনা।

 

এদিকে দোষীদের অতি দ্রুত শনাক্ত করে বিচারের আওতায় আনতে ছাত্র-উপদেষ্টা প্রফেসর ড. শেলীনা নাসরীনকে আহবায়ক করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।এছাড়া কমিটিতে সদস্য হিসেবে অছেন সহকারী প্রক্টর প্রফেসর ড. শফিকুল ইসলাম ও সদস্য সচিব বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তা আবদুস সালাম। কমিটিকে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার বিষয়ে সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

 

এ বিষয়ে প্রক্টর প্রফেসর ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, ভুক্তভোগীদের নিয়ে আমরা আলোচনায় বসেছিলাম, তাদের অভিযোগ শুনেছি। মারধরকারী ৪/৫ জন ছিলো বলে তারা জানিয়েছে। এর মধ্যে দুইজনের নাম বলেছে। আমরা প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করতে এবং তাদের অপরাধের মাত্রা নির্ধারণ করতে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। কমিটিকে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
 

একুশে সংবাদ.কম/সম   


 

ক্যাম্পাস বিভাগের আরো খবর