AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

কারো কাছে হাতপাতি না ঝাল মুড়ি বিক্রি করি খাই


Ekushey Sangbad
একুশে সংবাদ ডেস্ক
০৩:৪৭ পিএম, ২৩ মার্চ, ২০২১
কারো কাছে হাতপাতি না ঝাল মুড়ি বিক্রি করি খাই

অনেক মানুষের এ্যাটে গেছিনু ( কাছে গিয়েছি), মোক কাও (আমাকে কেউ) সাহায্য করে নাই। উপায় না প্যায়া (পেয়ে) অল্প পুঁজির ঝাল মুড়ির দোকান দ্যাছুং (দিয়েছি)। এটা দিয়ে মোর (আমার) স্বামীর ওষুধসহ দু’বেলা খাবার জুটে। তাও কারো এ্যাটে (কাছে) সাহায্য চাইম (চাইবো) না। ভিক্ষা না করি ঝাল মুড়ি বেচাং। এমন আক্ষেপ করে কথা বলছিলেন তিস্তা পাড়ের ৬৫ বছরের বৃদ্ধা মর্জিনা বেগম।

তিনি আরও বলেন, ১৪/১৫ বছর ধরে আমার স্বামী লুৎফর রহমান (৭০) প্যারালাইজড হয়ে বাড়িতে পড়ে আছে। অনেকবার চেয়ারম্যান-মেম্বারের কাছে গিয়ে চিকিৎসার জন্য সাহায্য চেয়েছি। কেউ আমার কথা শুনে নাই। স্বামীকে বাঁচাতে রিক্সাসহ কত কাজ করতে হয়েছে আমার। ভুলে জাতীয় পরিচয় পত্রে আমার থেকে স্বামীর বয়স কম হয়েছে। টাকার জন্য ঠিক করতে পারিনি। সেজন্য আমাকে কেউ সাহায্য করেনি।

তার কোনো সন্তান আছে কিনা জানতে চাইলে মর্জিনা বেগম বলেন, তিন ছেলে ও এক মেয়ে আছে। বিয়ের পর ছেলেরা কেউ আমাদের খোঁজ-খবর নেয়না। বাড়ির পাশের এক জায়গায় একটি ঘর করে স্বামীকে নিয়ে থাকি। আর যে টাকা আয় হয়, সেটা দিয়ে ওষুধসহ সংসারের কাজে লাগাই। আমরা কষ্টে থাকলেও সন্তানদের বুঝতে দেই না। জানতে পারলে কষ্ট পাবে ভেবে।

সেরোজমিনে দেখা-গেছে, লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলা কাকিনা ইউনিয়ন থেকে দুই কিলোমিটার দুরে ‘গঙ্গাচড়ায় নির্মণাধীন শেখ হাসিনা সেতু। এর পাশেই ঝাল মুড়ির দোকান দিয়েছেন তিস্তা পাড়ের ৬৫ বছরের বৃদ্ধা মর্জিনা বেগম। তার বাড়ি রংপুরের গংগাচড়া উপজেলার লক্ষিটারী ইউনিয়নের ৬ নাম্বর ওয়ার্ডের খ্যান পাড়া এলাকায়। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঝাল মুড়ি, বাদাম, চানাচুর, আচার বিক্রি করে আয় হয় ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। আর শুক্রবার সরকারি ছুটির দিন বিভাগীয় শহর রংপুর থেকে অনেক দর্শনার্থী আসার কারণে সেদিন বিক্রি হয় বেশি। সেই টাকা দিয়ে কেনেন স্বামীর ওষুধ।

স্থানীয় কয়েকজন জানান, তিস্তা পাড়ের ৬৫ বছরের বৃদ্ধা মর্জিনা বেগম চলে খুবই কষ্টে। কিন্তু সব সময় তিনি হাসি মুখে থাকেন। কেউ বুঝতে পারবে না তার মনে কষ্ট আছে। এই ছোট্ট দোকান দিয়ে চলে তার সংসার। বৃদ্ধ বাবা ও মায়ের খোঁজ-খবর নেয়না সন্তানেরা। সহযোগিতা পেলে মর্জিনা বেগম আরও ভালো ভাবে চলতে পারতেন।

লক্ষ্মীটারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী মুঠোফোনে বলেন, বিষয়টি জেনেছি। তার জাতীয় পরিচয় পত্রে বয়স কম থাকায় সরকারি ভাবে অনুদান দেওয়া যাচ্ছে না। তবুও আমাদের পক্ষ থেকে সহযোগিতার চেষ্টা করা হবে।  

একুশে সংবাদ/সী/আ

Link copied!