জয় পেলেই সেমিফাইনাল আর হারলেই টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিতে হবে। এমন কঠিন সমীকরণে সুপার এইটের ম্যাচে মুখোমুখি হয় দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। যেখানে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজদের কাঁদিয়ে শেষ চারে জায়গা করে নিয়েছে এইডেন মার্করামের দল। এই জয়ে গ্রুপ পর্বের পর সুপার এইটেও সব ম্যাচে অপরাজিত রইল প্রোটিয়ারা।
আগে ব্যাটিং করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৩৫ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে বৃষ্টির জন্য ডিএলএস মেথডে দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে ১৭ ওভারে ১২৩ রানের নতুন লক্ষ্য দাঁড়ায়। সেই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৩ উইকেট হাতে রেখে জয় তুলে নিয়ে সেমির টিকিট হাতে পায় প্রোটিয়ারা।

প্রথম ওভারেই আকেল হোসেনকে তিন চার হাঁকিয়ে ভালো কিছুর ইঙ্গিত দেন কুইন্টন ডি কক। তবে সতীর্থকে সঙ্গ দিতে পারলেন না রিজা হেনড্রিকস। আন্দ্রে রাসেলের বলে কোনো রান না করেই প্যাভিলিয়নে ফিরে যান প্রোটিয়া ওপেনার।
হেনড্রিকসের বিদায়ে ক্রিজে আসেন এইডেন মার্করাম। তবে মার্করামকে নিয়ে জুটি গড়ার আগেই ডি কককে বিদায় করেন শেরফান রাদারফোর্ড। আউট হওয়ার আগে ৭ বলে ৩ চারে ১২ রান করেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। এরপর শুরু হয় বৃষ্টি। মুষলধারে বৃষ্টির পর কার্টেল ওভারে গড়ায় ম্যাচ। দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে নতুন লক্ষ্য দেওয়া হয় ১৭ ওভারে ১২৩ রান। তাতে ৯০ বলে প্রয়োজন দাঁড়ায় ১০৮ রান।

বৃষ্টির পর ক্রিজে আসেন ত্রিস্টান স্টাবস। মার্করাম আর স্টাবস মিলে রান রেট বাড়িয়ে নিতেই শুরু করেন মারদাঙ্গা ব্যাটিং। তাতে রান আসলেও প্রোটিয়া অধিনায়ক বেশিক্ষণ টিকতে পারলেন না। ১৫ বলে ১৮ রান করে আলজারি জোসেফের বলে মায়ার্সের তালুবন্দি হন মার্করাম।
এরপর স্টাবসের সঙ্গে এসে জুটি বাঁধেন হেনরিখ ক্লাসেন। এসেই সপাটে ব্যাট চালাতে থাকেন ক্লাসেন। গুদাকেশ মোতির এক ওভারেই ৩ চার ও ১ ছক্কায় তুলে নেন ২০ রান। এরপর জোসেফের ওপর চড়াও হতে গিয়েই বিপদ ডেকে আনেন প্রোটিয়া ব্যাটার। পুরানের গ্লাভসে বন্দি করে তাকে সাজঘরে পাঠান জোসেফ। আউটের আগে ১০ বলে ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় ২২ রান করেন ক্লাসেন।

ক্লাসেনের বিদায়ে ক্রিজে আসেন ডেভিড মিলার। তবে বল নষ্ট করে ১৪ বলে ৪ রানের ইনিংস উপহার দিয়ে ফিরে যান তিনি। এরপর মার্কো জানসেনের সঙ্গে জুটি বাঁধেন স্টাবস। দল যখন এই জুটির দিকে তাকিয়ে তখনই চেজকে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে প্রোটিয়াদের চাপে ফেলেন স্টাবস। এর আগে ৪টি চারের মারে ২৭ বলে করেন ২৯ রান।
এর আগে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে দারুণ সূচনা করে ক্যারিবীয়রা। ১২ ওভারের শেষেও স্বাগতিকদের রান ছিল ৮৬। ওভারপ্রতি রান আসছিল ৭ এর বেশি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই রানরেট আর ধরে রাখতে পারেনি তারা। শেষদিকে রানের গতি কমে এসেছে অনেকটাই। তবুও আলজারি জোসেফ আর গুড়াকেশ মোতির কল্যাণে ১৩০ পেরোয় ক্যারিবীয়রা।

১২তম ওভারে শেষ বলে কায়েল মায়ার্সের আউট দিয়েই ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসের ধস শুরু হয়। ৮৬ রানে ১ উইকেট থেকে ৯৭ রানে তারা ৬টি উইকেট হারিয়ে ফেলে। ফিফটি করা রস্টন চেজ ছাড়াও অধিনায়ক রভম্যান পাওয়েল, শেরফেইন রাদারফোর্ডের কেউই আর দাঁড়াতে পারেননি। দুই ছক্কা মেরে আন্দ্রে রাসেল আভাস দিয়েছিলেন ভালো কিছুর। কিন্তু সব ব্যাটিং বিপর্যয়েই নাকি একটা করে রানআউট থাকে, ক্যারিবীয়ান ইনিংসে তা-ই হলো রাসেলের সঙ্গে।

১১ বলে ৬ রান করে আকিল হোসেনও ফেরেন। শেষ পর্যন্ত উইন্ডিজরা থামে ১৩৫ রানে। প্রোটিয়াদের হয়ে ৩ উইকেট শিকার করেন তাবরাইজ শামসি। একটি করে উইকেট পেয়েছেন জানসেন, মার্করাম, কাগিসো রাবাদা ও কেশভ মহারাজ।
একুশে সংবাদ/ এস কে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

