AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা আজ


Ekushey Sangbad
ধর্ম ডেস্ক
১০:৩৯ এএম, ১৫ মে, ২০২২
শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা আজ

ছবি: সংগৃহীত

আজ শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা।বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম বড় উৎসব।এই দিনটি বৌদ্ধ ধর্মের প্রবর্তক মহামতি গৌতম বুদ্ধ বা সিদ্ধার্থের জীবনের তিনটি ক্ষণের স্মৃতিতে ঘেরা।সিদ্ধার্থের জন্ম গ্রহণ, বোধিজ্ঞান লাভ ও মহাপরিনির্বাণসহ তিনটি ক্ষণ। বাংলা নতুন বছরের প্রথম পূর্ণিমার তিথিতে জন্ম গ্রহণ লাভ, বৌধিজ্ঞান লাভ ও মহাপরিনির্বাণ লাভ করেছিলেন সিদ্ধার্থ গৌতম।এমনকি এই পূর্ণিমাকে বৈশাখী পূর্ণিমাও বলা হয়ে থাকে।

চাঁদের হিসাব মতে,আজ রবিবার (১৫ মে) সেই বুদ্ধ পূর্ণিমা।এখন থেকে প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে বৈশাখের এমনই পূর্ণিমা তিথিতে নেপালের লুম্বিনী কাননে রাজা শুদ্ধোধন ও রানী মায়া দেবীর গৃহে জন্মগ্রহণ এক শিশুর।সিদ্ধি লাভ করবেন এমন ভবিষ্যৎ দেখতে পেয়ে সাধক বা মনিঋষিরা তার নাম রাখেন সিদ্ধার্থ।

বুদ্ধ ধর্মমতে, আড়াই হাজার বছর আগে খ্রিষ্টপূর্ব ৬২৩ অব্দের এদিনে মহামানব শাক্য বংশের গৌতম বুদ্ধ জন্ম গ্রহণ করেছিলেন।৫৮৮ খ্রিষ্ট পূর্বাব্দের এইদিনে তিনি সাধনায় সিদ্ধিলাভ করে জগতে বুদ্ধ নামে খ্যাত হন এবং ৫৪৩ খ্রিষ্ট পূর্বাব্দের ঠিক এ বৈশাখী পূর্ণিমা তিথিতে তার জন্মগ্রহণ,বোধি জ্ঞান ও মহা পরিনির্বাণ লাভ করেন বলে এ বৈশাখী পূর্ণিমাকে ‘বুদ্ধ পূর্ণিমা’ বলে আখ্যায়িত করে বিশেষ দিন হিসেবে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা উল্লেখ করে থাকেন।সিদ্ধার্থের বুদ্ধত্ব লাভের মধ্যে দিয়েই জগতের বৌদ্ধ ধর্ম প্রবর্তিত হয়।  

যৌবনকালে ঠিক এই পূর্ণিমা তিথিতে কেবল সিদ্ধিলাভ নয়,ভারতের বিহার রাজ্যের বুদ্ধগয়ায় বোধিপ্রাপ্ত হন সিদ্ধার্থ।নিজের অন্তর্দৃষ্টির কথা সবাইকে জানিয়ে জাগতিক সকল সত্তাকে পুনর্জন্ম ও দুঃখের সমাপ্তি ঘটাতে সাহায্য করার সম্পূর্ণ বুদ্ধত্ব অর্জন করেন।আবার ৮০ বছর বয়সে এমনই এক পূর্ণিমা তিথিতে জগতের মনুষ্যত্ব মায়া ত্যাগ করে মহাপরিনির্বাণ লাভ করেন তিনি।

বৈশাখের এই মহাপুরুষ গৌতম বুদ্ধের ত্রি-স্মৃতি বিজড়িত হওয়ার কারণেই এটি বুদ্ধ পূর্ণিমা নামেই খ্যাতি ও পরিচিত।সে কারণেই সিদ্ধার্থ বা গৌতম বুদ্ধ তার বোধি লাভের পর মানবতার যে ধর্ম প্রচার করেন,সেই বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারীদের এটিই পবিত্রতম প্রধান উৎসব।

এই দিনটিতে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা বুদ্ধের সান্নিধ্যর লক্ষ্যে কেউ কেউ অষ্টশীলে ব্রত থেকেই বুদ্ধের বন্দনায় রত থাকেন।ভক্তরা মন্দিরে মন্দিরে প্রদীপ জ্বালিয়ে, মন্দির সুসজ্জিত করে বুদ্ধের আরাধনায় নিমগ্ন হন।পাশাপাশি পঞ্চশীল, অষ্টশীল, সূত্রপাঠ, সূত্রশ্রবণ,সমবেত প্রার্থনার মতো ধর্মীয় আচার পালন করে থাকেন।

শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে রবিবার সরকারি ছুটির দিন।দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো.আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন।বাণীতে তারা বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।

সিদ্ধার্থের জন্মের পরপরই ঋষি অসিত জানিয়েছিলেন, রাজা শুদ্ধোদনের এই পুত্র ভবিষ্যতে রাজচক্রবর্তী সম্রাট (সব রাজ্যের একাধিপতি) হবে, অথবা সারাবিশ্বকে জয় করে নেওয়ার মতো সন্ন্যাসী হবে।একমাত্র সন্তান যেন সন্ন্যাসে না ঝুঁকে পড়ে, সে কারণে প্রাচীরঘেরা প্রাসাদে তাকে বড় করেন শুদ্ধোদন।কিন্তু সিদ্ধার্থের গন্তব্যই ছিল বোধি।ভোগবিলাসে তাই একসময় বৈরাগ্য আসে তার।জন্ম ও জগতের স্বরূপ উন্মোচন করতে আচমকা এক রাতে স্ত্রী যশোধরা ও সদ্যোজাত সন্তানকে ছেড়ে প্রাসাদ ত্যাগ করেন।সাধনায় রত হন।এক অশ্বত্থ গাছের তলায় টানা ৪৯ দিন ধ্যান করে লাভ করেন সর্বশ্রেষ্ঠ জ্ঞান-বোধি।

গৌতম বুদ্ধ তার বোধিপ্রাপ্তির পর অষ্ট-অষ্টাঙ্গিক মার্গের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন মানুষকে।জানান-এই আটটি নীতি পালন করা গেলে দুঃখ-বেদনা-যন্ত্রণা কখনো কাউকে গ্রাস করতে পারবে না।গৌতমের সেই অষ্টমার্গ হলো-সম্যক দৃষ্টি,সম্যক সঙ্কল্প,সম্যক বাক্য,সম্যক আচরণ,সম্যক জীবিকা,সম্যক প্রচেষ্টা,সম্যক স্মৃতি ও সম্যক সমাধি।

অহিংসা পরম ধর্ম এই নীতিতে তথাগত গৌতম বুদ্ধের বাণী ছিল।মানুষে মানুষে সমানাধিকার, সার্বিক কল্যাণ আর সেবার নীতি নিয়ে গৌতম বু্দ্ধের মন্ত্র ছিল ‘অহিংসা পরম ধর্ম’।সেই মন্ত্র আর অষ্টমার্গের নীতিতে মানুষের অন্তরে মানবিক মূল্যবোধ জাগ্রত হয়ে উঠবে,মানুষে মানুষে হানাহানি,বিবেধ বন্ধ হয়ে সৌহার্দ্যপূর্ণ হয়ে মানুষ বসবাস করবে এই ভেবেই-বুদ্ধ পূর্ণিমায় সেই দর্শনটুকু ছড়িয়ে পড়ুক মানুষের মাঝে ও অন্তরে।

শুভ বৈশাখী পূর্ণিমা উপলক্ষে গতকাল থেকে আজ পযর্ন্ত সারাদিন ব্যাপী বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী মারমা, চাকমা, তঞ্চঙ্গ্যা, বড়ুয়া ও চাক সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষ, তরুণ-তরুণী,শিশু-কিশোরদের পদচারনায় মুখরিত হয়ে উঠেছে পাহাড়ের বৌদ্ধ বিহারগুলোতে।ধর্মীয় প্রার্থনা বৌদ্ধ ভিক্ষুদের (ভান্তে) খাবার(পিন্ড দান),চিবরদান,নগদ টাকা,গুরু ভক্তি,প্রদীপ প্রজ্বলনসহ ধর্মীয় রীতিনীতিতে দিনব্যাপী অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে।

 

 

একুশে সংবাদ/নি.চা/এস.আই


 

Link copied!