দক্ষিণ আফ্রিকা প্রবাসী ওসমান গণি বাদল হেলিকপ্টারে করে দেশে ফিরে দাফন করেছেন তার একমাত্র কন্যা আরওয়া আক্তারকে (৩)।
বৃহস্পতিবার দুপুরে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের আলকরা ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামে বাড়ির পাশের পুকুরে পড়ে আরওয়ার মৃত্যু হয়। মেয়ের মৃত্যুর খবর শুনে তিনি তৎক্ষণাৎ বিমানের টিকিট কেটে দেশে ফিরেছেন।
শুক্রবার সকাল ৯টায় তিনি হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। ঢাকা বিমানবন্দর থেকে হেলিকপ্টারে করে সকাল পৌনে ১০টায় গ্রামের বাড়িতে পৌঁছান। মেয়ের লাশ বুকে জড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন প্রবাসী এই পিতা।
জানানো হয়, বৃহস্পতিবার দুপুরে দাদা শফিকুর রহমান হাঁটতে বের হলে ছোট্ট আরওয়া তার পিছু নেয়। দাদা তাকে বাড়িমুখী করে নিজের গন্তব্যে চলে যান। কিছুক্ষণ পর ফিরে এসে জানতে পারেন, নাতনীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। পরিবারের সবাই মিলে খোঁজাখুঁজি করার পর বাড়ির পাশের একটি পুকুরে আরওয়ার মরদেহ ভেসে উঠতে দেখা যায়।
খবরটি মুহূর্তের মধ্যে পৌঁছে যায় দক্ষিণ আফ্রিকায় থাকা বাবা ওসমান গণি বাদলের কাছে। সন্তানের মৃত্যুর খবর শুনে তিনি বিমানের টিকিট কেটে তড়িঘড়ি দেশে ফেরেন। শুক্রবার সকালে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের পর দ্রুত বাড়ি পৌঁছানোর জন্য ভাড়া নেন বেসরকারি হেলিকপ্টার। গ্রামের গুণবতী ডিগ্রি কলেজ মাঠে অবতরণ করে ছুটে যান বাড়িতে। মেয়ের মুখ দেখে ভেঙে পড়েন কান্নায়।
দাদা শফিকুর রহমান বলেন, “নাতনীকে আমি নিজেই বাড়িমুখী করে দিয়েছিলাম। বুঝিনি, এটা হবে শেষ দেখা।”
অন্যদিকে, শোকে ভেঙে পড়া ওসমান গণি বাদল বলেন, “আট মাস আগে বিদেশে গিয়েছিলাম। দুই মাস আগে ভিডিও কলে আরওয়া কথা বলেছিল আমার সঙ্গে। এখন ও নেই—বিশ্বাস করতে পারছি না। বাবা হয়ে মেয়ের লাশে কাঁধ দিতে হবে, এটা কল্পনাও করিনি।”
জুমার নামাজ শেষে মসজিদ প্রাঙ্গণে আরওয়ার জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। পরে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়।
এ ঘটনায় পুরো গ্রামে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া। স্থানীয়রা বলছেন, “বাবা এসে মেয়ের লাশ দাফন করেছে—এর চেয়ে হৃদয়বিদারক দৃশ্য আর কিছু হতে পারে না।”
একুশে সংবাদ/এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

