AB Bank
ঢাকা মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

নিজে খুব একা হয়ে যাই


Ekushey Sangbad
একুশে সংবাদ ডেস্ক
০৮:০৭ এএম, ১০ এপ্রিল, ২০২১
নিজে খুব একা হয়ে যাই

অদ্ভুত রকমের একটা ভাল দিন আজ আমার , মাঝে মাঝে আমি নিজের মাঝে নিজে খুব একা হয়ে যাই , মনে হয় চারপাশে যা কিছু ঘটছে , যা কিছু করছে মানুষ -সব কিছুতে নিজেকে ছাড়িয়ে রাখি ।

বিদেশে আসার পর খুব একা একা থাকতাম , ফোনে কথা নাই , ফেইস বুক নাই , অজানা মানুষ , অজানা সবুজের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে কাটিয়ে দিলাম অনেক গুলো দিন , তারপর একদিন অনুভব করলাম আমি কোথায় যেন হারিয়ে যাচ্ছি , হাসি থেকে , আনন্দ থেকে , স্বপ্ন থেকে , শুধু চিলের মত সংসারের কাজ , বেবী সামলানো , আর চুপচাপ বসে বসে থম থম মুখে কি যেন ভাবনা , কি ভাবছি নিজেও জানি না ,

কিন্তু বুঝতাম ভেতরটা খুব ফাঁকা ,খুব একা ! প্রত্যেকটা দিন সয়ে যেতাম ব্যথা , দীঘর্ ১৩ মাস আমি যারপর নাই ব্যথা সহ্য করেছি , ব্যথাহীন জীবন কখনো ফিরে পাবো ভাবিনী , কোমড়ের ব্যথায় আমার ঘুম , খাওয়া , লেখা , কাজ , কোনটাই সুবিধা মত হতো না , মাঝে মাঝে মনে হতো , ঝিনুকের মত বিষ সয়ে আমি কিসের মুক্তো ফলাবো , কেনই বা কিছুতে আগ্রহ পাচ্ছি না ,

আমি বুঝতাম ভেতরে ভেতরে আমার পরিবতর্ন , কাওকে বোঝাতে পারতাম না , কারণ ব্যথায় কাতর হয়ে আমি শুয়ে থাকিনি , কিংবা বেবীর স্কুল , সংসারের কাজ বড় কস্ট করে ম্যানেজ করতে হয়েছে , নতুন পরিবেশ ছোট বাচ্চা , যখন কাঁদতো দুজনেই একসাথে কাঁদতো , ঘুম তাদের একসাথে আসতো , দুটো কে কোলে নিয়ে ঘুমাতাম, দু হাতে দুজনের মাথা না রাখলে তারা আজো ঘুমাতে পারে না ।

ব্যথার দিন গুলোতে বড় আম্মা আম্মা করে কাঁদতাম শব্দ ছাড়া , মনে হতো ওদের কে কেউ যদি একটু সামলে নিতো । বড় কষ্টে পাওয়া ধন আমার ওরা হাসি মনে ভাবতাম উপর ওয়ালা বড় পরীক্ষা নিচ্ছে , বড় বেবী বেবী করে কেঁদেছিলাম , আজ যখন বেবী হলো তো নে সামাল দে তো দেখি ! এখানে আসার পর দের বছর আমি ৬ ঘন্টা ঘুম কাকে বলে জানি নি , অদ্ভুত এক শক্তি আল্লাহ আমাকে দিয়েছিল , আজ যখন ভাবী আমি নিজেই অবাক হয়ে যাই ।

অবশেষে আমি হাসপাতালে প্রায় কোমড় ও মেরুদন্ডের হাড়ের ১২টা বাজিয়ে গেছিলাম , নতুন চিকিৎসা পদ্ধতি তারা আমার রোগ নিয়ে , কি কি দুশ্চিন্তা করছে একে একে সব বলে যায় , তখন শুধু চিন্তা হতো , আব্বা আম্মা , একটু জ্বর হলে কত ব্যকুল , আর আমি যখন মরতে বসেছি তখন তারা অনেক দুরে ! আমার মেয়ে দুটো , স্বপ্ন দেখবে না কোনদিন , ওরা বড় কস্ট নিয়ে বাঁচবে ! সব ভাবার শেষে একটা কথা মনে হয় , জীবন অবসান , সে তো হবেই , তবে না হয় , মৃত্যু উপোভোগ করি , সব তার ইচ্ছা ।

অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে বললো আজ একটা অপারেশন হবে , তারপর বায়োপসি , যদি খারাপ কিছু রিপোট হয় তবে অপারেশন করবো না ! বুঝলাম ঘন্টা বুঝি বেজে উঠলো । সে সময় গাড়িয়াল কে খুব জ্বালিয়েছি , অবান্তর কিছু প্রশ্ন করে , মেডিকেলের কোন বিষয় ঠিক করে না বোঝাতে পারলে কত যে গালমন্দ দিয়েছি , সেই ৭২ ঘন্টা আমি মৃত্যু কুপে ধুক পুক শ্বাস নিয়ে বেঁচে ছিলাম ! যখন রিপোট পেলাম , না ক্যান্সার হয়নি , যে হয়েছে ভালই হয়েছে , মেরুদন্ডে ইনফেকশন ,

বোন টিবি , এটা সেরে যায় ! ড্রাগ শুরু হলো বললো প্রয়োজনে আরো একটা অপারেশন লাগবে ! মেডিসিন রেসপন্স করা শুরু হলো ...., দিন দিন ব্যথা কমতে শুরু করলো , আমি হাঁটা শুরু করলাম ! এখন অনেকটা পথ হাঁটতে পারি ।

কুফল যা হলো , চুল পড়ছে অনেক , সব সময় মাথা ব্যথা থাকে , মেজাজ আগুন , এলাজির্ কথায় কথায় গাল মুখ ভরে যায় , চোখ জল ছল ছল , মাঝে মাঝে রক্ত জবা , বমিপায় , টামির সাইজ দেখলে মনে হয় ......মোটা হয়ে গেছি , ৬ মাস ধরে পেডনিসিলোন চলছে । আজ ডাক্তার দেখলো , রিপোট ভালো অপারেশন লাগবে না , ভাল হয়ে যাচ্ছি , আগের মত ! সব তাঁর কৃপা !


আমি পাপী তিনি জামিনদার

একুশে সংবাদ/জিহা/ফেনাজ

Link copied!