সরকার পতনের এক দফা দাবিতে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও কয়েকটি বিরোধী দলের ডাকা দেশজুড়ে ৪৮ ঘণ্টার সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। তবে রাজধানী ও আশপাশের কয়েকটি জেলায় অবরোধে চলছে যানবাহনও।
বুধবার (৮ নভেম্বর) ভোর ছয়টা থেকে শুরু হওয়া এই অবরোধ চলবে শুক্রবার ভোর পর্যন্ত।
এদিকে বিএনপি ও জামায়াতসহ সরকার বিরোধী দলগুলোর ডাকা অবরোধের প্রতিবাদে আজও সর্তক অবস্থানে পাহারা বসিয়েছে আওয়ামী লীগ। রাজধানীর প্রবেশপথ ও গুরত্বপূর্ণ পয়েন্ট অবস্থান নিয়েছে আওয়ামী লীগের থানা-ওয়ার্ড নেতারা।
গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে বিএনপি মহাসমাবেশের ডাক দিলেও সহিংসতায় তা পণ্ড হয়ে যায়। পরে একদিন হরতাল পালনের পর অবরোধ কর্মসূচি দেয় বিএনপি। এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো এই কর্মসূচি পালন করছে দলটি।
অবরোধকে সমর্থন জানিয়ে দলটির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা অন্য দলগুলোও এই কর্মসূচি পালন করবে। পাশাাপাশি জামায়াতে ইসলামীও আলাদা করে একই কর্মসূচির ঘোষণা দিয়ে আসছে।
এদিকে বিরোধী দলের ডাকা অবরোধ কর্মসূচিতে জনজীবন স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে সরকার। রাজধানীসহ সারাদেশে অতিরিক্তি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। দূরপাল্লার গাড়িতে দেওয়া হচ্ছে বাড়তি নিরাপত্তা।
অবরোধে ট্রেন ও লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। মালিক সমিতি বাস চলাচল স্বাভাবিক রাখার ঘোষণা দিলেও যাত্রী সংকটে দূরপাল্লার বাস চলছে কম। রাজধানীতেও যাত্রী সংখ্যা কম থাকায় গণপরিবহনের সংখ্যা কম।
টানা প্রায় ১৭ বছর ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপির সামনে এখন আন্দোলন ছাড়া আর কোনো পথ খোলা নেই। সরকারের ‘দমন-পীড়নে’ দলের নেতাকর্মীরা বিপর্যস্ত হলেও কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যেতে চায় দলটি। নির্বাচন পর্যন্ত এমনকি আবারও একতরফা নির্বাচন করলে সরকারের বিরুদ্ধে নির্বাচনের পরেও আন্দোলন অব্যাহত রাখার প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। তবে দলটি হরতাল-অবরোধের বাইরেও কঠোর আর কী কর্মসূচি দেওয়া যেতে পারে সেটা নিয়ে ভাবছে। এ ব্যাপারে দলের শীর্ষ নেতা যারা কারাগারের বাইরে আছেন তাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আগামী সপ্তাহেই বিএনপি ভিন্ন কোনো কর্মসূচি ঘোষণা দিতে পারে বলে আভাস দিয়েছেন দলটির নেতারা।
সর্তক অবস্থানে যারা:
ডেমরা ষ্টাফ কোয়ার্টারের সামনে সকাল ৭ টা থেকে বিএনপির সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও অবরোধের প্রতিবাদে পাহারা বসিয়েছে ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মশিউর রহমান মোল্লা সজল। এতে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান ও অবরোধ বিরোধী মিছিল কর্মসূচি পালন করছেন ৬৭,৬৮,৬৯,৭০ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ। এদিন ঢাকা -চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড বাসস্ট্যান্ডে ও প্রয়াত এমপি হাবিবুর রহমান মোল্লা বড় ছেলে মশিউর রহমান মোল্লা সজলের নির্দেশে পাহারা বসিয়েছে ৬৪,৬৫ ও ৬৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন কাউন্সিল মাসুদুর রহমান মোল্লা বাবুল ও সোহেল খানসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে সকাল থেকে অবস্থান নিয়েছেন ঢাকা-৫ আসনের এমপি কাজী মনিরুল ইসলাম মনুর কর্মী সমর্থকরা। এতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের নেতা জিয়াউদ্দিন জিয়া। পাশেই শহীদ শেখ রাসেল পার্কের সামনে অবরোধ বিরোধী অবস্থান নিয়েছে যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হারুনর রশীদ মুন্না। এতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ৪৮ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি গিয়াস উদ্দিন গেসু ও কাউন্সিলর হাজী আবুল কালাম অনু। সেখানে একটি বিশাল বিলবোর্ডে টানানো হয়েছে। এতে একপাশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছবি,আরেক পাশে রয়েছে হারুনর রশীদ মুন্নার বড় একটি ছবি। এতে লেখা রয়েছে ঢাকা -৫ আসনে এমপি হিসেবে হারুনর রশীদ মুন্না ভাইকে দেখতে চাই। রাজধানীর জয়কালী মন্ধীরের সামনে পুলিশের পাশাপাশি অবরোধ বিরোধী অবস্থান নিয়ে সর্তক অবস্থায় বসে আছেন ওয়ারী থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি চৌধুরী আশিকুর রহমান লাভলু ও সাধারণ সম্পাদক হাজী আবুল হোসেন। এতে ৬ শতাধিক নেতাকর্মী লাঠি হাতে বিএনপি-জামায়াতের নাশকতা প্রতিরোধে নজর রাখছেন বলে জানিয়েছেন নেতাকর্মীরা। সকাল থেকে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউর সামনে অবরোধ বিরোধী অবস্থান নিয়েছে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। এতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ নেতৃত্ব দিচ্ছেন
এছাড়াও যুবলীগ, শ্রমিক লীগ,স্বেচ্ছাসেবক লীগ,মৎসজীবী লীগ নেতাকর্মীরা।
একুশে সংবাদ/এস কে
আপনার মতামত লিখুন :