আন্দোলন দমাতে সরকার বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের আবারও গুম করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘তিতুমীর কলেজের ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান রফিক ও সাইফুল ইসলামকে গোয়েন্দা পুলিশ তুলে নিয়ে গিয়ে এখন পর্যন্ত তাদের খোঁজ দিচ্ছে না। এই যে তুলে নিয়ে যাওয়া, এই যে অদৃশ্য করা... নতুন করে আবার শুরু হয়েছে। কারণ একতরফা ও ভোটারবিহীন নির্বাচন তো করতে হবে। এই নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে ভয় পাইয়ে দিতে হবে। এই ভয় পাইয়ে দেওয়ার জন্য আবার নতুন করে তারা (সরকার) গুম করার কর্মসূচি শুরু করেছে। ’
তিনি বলেন, ‘গুমের জন্য টার্গেটই করা হয়েছে তরুণদের। এই তরুণরা আন্দোলন-সংগ্রামের ভ্যানগার্ড। তাদেরকেই টার্গেট করে তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আমি অবিলম্বে মাহমুদুল হাসান রফিক ও সাইফুল ইসলামকে তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি। ’
তিনি আরও বলেন, ‘সবাই শান্তিতে বেঁচে থাকার জন্য আমাদের এই সংগ্রাম, আমাদের এই অবরোধ কর্মসূচি। এই কর্মসূচি হবে শান্তিপূর্ণ। আমাদের এই অবরোধ কর্মসূচি গণদাবির ওপর ভিত্তি করে। এটা নিছক বিএনপির কোনো দলীয় কর্মসূচি নয়। এটা সামগ্রিকভাবে গোটা জনগণ যে তার মালিকানা থেকে বঞ্চিত হয়েছে, যে গণতন্ত্রের জন্য দেশের মানুষ দীর্ঘদিন যত রক্ত ঝরিয়েছে... তাদের ঋণ পরিশোধ করার জন্য বিএনপিসহ সমমনা জোটগুলো এই সংগ্রাম করছে। নানান রাষ্ট্রীয় উৎপীড়নের মুখেও তারা মাঠে আছে। ’
‘আমি বিএনপিসহ জাতীয়তাবাদী শক্তির যত নেতাকর্মীরা রয়েছেন এবং সমমনা দলগুলো যারা সংগ্রামে অংশগ্রহণ করছে, তাদের প্রত্যেকের কাছে আহ্বান জানাব... শত বাধা অতিক্রম করে অতীতে যেমন কর্মসূচি পালন করে এসেছেন, এবার এই কর্মসূচিও পালন করবেন। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে পথে পথে বাধা দেবেন, মহাসড়কে অবরোধ তৈরি করবেন শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করেই। ’
‘তবে তারা আমাদের বিরুদ্ধে নাশকতার নানা মহাপরিকল্পনা (সরকার) করছে। আমরা রাস্তায় উপস্থিত হব এবং সরকারের যে অশুভ নীলনকশা, আমরা সেটিকে প্রতিহত করব। এদেশের কোটি কোটি মানুষ আমাদের পক্ষে আছে। এদেশে যারা গণতন্ত্র চায়, যারা বাকস্বাধীনতা চায়, যারা নিজের ভোটটা পছন্দমতো ব্যক্তিকে দিতে চায়, তারা এই আন্দোলন ও অবরোধ কর্মসূচির পক্ষে রয়েছে। ’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, গত ৫ নভেম্বর কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সুলতান মাহমুদ চৌধুরীকে তার বাড়িতে পুলিশ-র্যাব ধরতে যায়। পরে সেখানে ব্যাপক ভাঙচুর করে ও গোলাগুলি করে। এতে গ্রামবাসীদের অনেকে আহত হয়। তাদের মধ্যে গুরুতর আহত জাকির হোসেন দুই-তিনদিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে আজকে মারা গেছেন। আমি এই হত্যাকাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, গত কয়েকদিন ক্রমাগতভাবে এই হত্যালীলা চলছে। সরকারের সাজানো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তারা কোনো কিছু মানছে না। এখানে যারা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধাচরণ করবে, এদের কারো অস্তিত্ব থাকবে না— সেই শপথ নিয়ে নেমেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। অথচ তাদের হাতে যে অস্ত্র এটা কিন্তু কেনা হয়েছে জনগণের ট্যাক্সের পয়সায়। এসব অস্ত্র জনগণের দিকে তাক করতে গিয়ে একের পর এক শুধু মৃত্যুর মিছিল ও মানুষের লাশের সারি তৈরি হচ্ছে।
একুশে সংবাদ/ন.প.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :