বিএনপি-জামায়াত গণতন্ত্র বিশ্বাস করে না: মির্জা আজম

বিএনপি-জামায়াত গণতন্ত্র বিশ্বাস করে না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি।

তিনি বলেন, রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে বিএনপি আবারো অগ্নিসন্ত্রাস করতে চায়। দেশের শান্তিপ্রিয় মানুষের জানমালের নিরাপত্তার জন্য আওয়ামী লীগ মাঠে ছিল এবং আগামী দিনেও থাকবে। এ সময় বিএনপিকে নৈরাজ্য ও আগুন সন্ত্রাস পরিহার করে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য আহ্বান জানান তিনি।

শুক্রবার (১৯ মে) বেলা ১১টায় যাত্রাবাড়ির কাজলা ব্রীজ মসজিদ সংলগ্ন সড়কে ‘প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে ও স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে’ শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এই সমাবেশের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগ।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, জিয়াউর রহমান মৃত্যুর আগপর্যন্ত আওয়ামী লীগকে চিরতরে নিশ্চিহ্ন করার লক্ষ্যে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করেছেন। একইপথের পথিক বেগম খালেদা জিয়া ও তার কুলাঙ্গার পুত্র কারেক রহমান।

তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় থাকা সময়ে ২১ গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করেছেন খালেদা জিয়া ও তারপুত্র কুলাঙ্গার তারেক রহমান। ২০০৪ সালের ২১ শে আগস্ট আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা এবং নারী নেত্রী আইভি রহমানসহ দলের ২২ নেতা-কর্মী নিহত এবং অন্তত ৫শ’ নেতা-কর্মী, পথচারি ও সাংবাদিক আহত হন।

তিনি আরো বলেন, শুধু হত্যার চেষ্টাই নয়, হত্যার পর লাশ নিয়েও তারা যে কর্মকাণ্ড করেছিল তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। মারা যাওয়ার পর অনেকের লাশ তারা দিতে চায়নি। লাশ আত্মীয়-স্বজনের কাছে তারা দেয়নি। পারলে লাশটা গুম করে ফেলতো, এই ছিল অবস্থা। তিনি বলেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় আহত অনেকেই আজ আর নেই মারা গেছেন। অনেকেই পঙ্গু হয়ে দুর্বিসহ জীবন যাপন করছেন। যার কারণে দেশে-বিদেশে আজকে অগ্মি সন্ত্রাসের দল হিসেবে বিএনপি-জামায়াত পরিচিতি পেয়েছে। বিএনপি-জামায়াত তাদের মিষন সফলের লক্ষ্যে আওয়ামী লীগের  হাজার হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে নিমমভাবে নির্যাতন করেছে।

মির্জা আজম বলেন, বিএনপি নির্বাচন ঠেকানোর জন্য আন্দোলনের নামে ২৫-৩০ জন পুলিশকে হত্যা করেছে। আওয়ামী লীগের শত শত নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে, বাড়িঘরে আগুন দিয়েছে, ভোটকেন্দ্রের ৫০০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আগুন দিয়েছে, চলন্ত ট্রেনে-বাসে পেট্রলবোমা মেরে শত শত মানুষকে হত্যা ও পঙ্গু করেছে।

তিনি বলেন, বিষধর সাপকে বিশ্বাস করা গেলেও বিএনপিকে বিশ্বাস করা যায় না। বিএনপি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও অস্তিত্বকে বিশ্বাস করে না। বিএনপি আন্দোলনের নামে যখন রাস্তায় নামে তখন দেশের মানুষ আতঙ্কিত থাকে।

আওয়ামী লীগের এ সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে বিএনপি আবারও অগ্নিসন্ত্রাস করতে চায়। দেশের শান্তিপ্রিয় মানুষের জানমালের নিরাপত্তায় আজকে যুবলীগ মাঠে নেমেঠে এবং আগামী নির্বাচন পর্যন্ত মাঠে থাকবে।

আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নচিত্র তুলে ধরে মির্জা আজম বলেন, গত ১৪ বছরের শাসনামলে পদ্মা সেতু, বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়ে, রাজধানীর মেট্রোরেল, কর্ণফুলী ট্যানেলসহ দেশে যে পরিমাণ উন্নয়ন প্রকল্প  হয়েছে, সেই সফলতার প্রচারণা চালিয়ে জনগণের কাছে ভোট চাইতে হবে। এতো কম সময়ে এতো বেশি প্রকল্প বিশে^র কোনো দেশ করতে পারেনি।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, গাজীপুর সহ চলমান ৫ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি অংশ গ্রহন না করলে  বিএনপি নেতাকর্মীরা অংশ নিয়েছে এবং আওয়ামী লীগের পক্ষে মিছিল করছে। এই অপরাধে অনেককে তারা বহিষ্কার করেছে। এই হলো বিএনপির অবস্থা। তবে তাদের কর্মীরা নানা কৌশলে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে।

এ সময় বিএনপিকে নৈরাজ্য-আগুন সন্ত্রাস পরিহার করে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য আহ্বান জানান আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম।

ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইন উদ্দিন রানা’র সভাপতিত্বে এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচ এম রেজাউল করিম রেজা’র সঞ্চালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো: মাইনুল হোসেন খান নিখিল ও ঢাকা-৫ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মনিরুল ইসলাম মনু।

আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গাজী সারোয়ার হোসেন বাবু, দপ্তর সম্পাদক এমদাদুল হক এমদাদ ও উপদপ্তর সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আরিফ, ৬৮ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারন সম্পাদক ও কাউন্সিলর মাহমুদুল হাসান পলিন, ৬৬নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি মো: রাসেল ভ’ইঁয়া, ৪৫ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি শেখ মনিরুজ্জামান রবিন, ৬২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোস্তাক আহমেদ প্রমূখ।

একুশে সংবাদ/সফি/এসএপি