AB Bank
ঢাকা মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

ফের ৫০ মডেল মসজিদ উদ্বোধন: ইসলামের প্রচার-প্রসারে বঙ্গবন্ধুর কন্যার অবদান


Ekushey Sangbad
ডা.মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ
০৫:৫৬ পিএম, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৩
ফের ৫০ মডেল মসজিদ উদ্বোধন: ইসলামের প্রচার-প্রসারে বঙ্গবন্ধুর কন্যার অবদান

সোমবার (১৬ জানুয়ারি) দেশে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে আরও ৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। এদিন বেলা ১১টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব মডেল মসজিদ উদ্বোধন করবেন।

 

মসজিদ হলো আল্লাহর ঘর ও মুসলিমদের প্রাণকেন্দ্র এবং তা প্রত্যেক মুসলমানের নিকট অত্যন্ত প্রিয়। ইসলামে মসজিদ নির্মাণ এবং মসজিদ সংরক্ষণের প্রতি অধিক গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) এমন কথাও বলেছেন যে, যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য মসজিদ নির্মাণ করবে আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে অনুরূপ ঘর নির্মাণ করে দিবেন।

 

বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিটি জেলা-উপজেলায় একটি করে মোট ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র তথা মসজিদ স্থাপন করছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিজস্ব পরিকল্পনায় এই প্রকল্পের আওতায় ইতোমধ্যে ২০২১ সালের ১০ জুন প্রধানমন্ত্রী ৫০টি মডেল মসজিদ উদ্বোধন করেন।

 

আর মডেল মসজিদগুলোর সুযোগ-সুবিধা দেখলে সহজে বোঝা যায়, প্রধানমন্ত্রী একটি বিশুদ্ধ ও মানবিক জাতি গঠনের উদ্যোগ নিয়েছেন। নারী-পুরুষের সমতা নিশ্চিত করছেন, অটিজমের শিকার মানুষদের জন্য এসব মডেল মসজিদে বিশেষ সুবিধা থাকছে। অতিথিশালা থাকছে, বিদেশি পর্যটকদের জন্য আবাসনও থাকছে। এ যে কত বড় উদারতা ও মহানুভবতা তা ইতিহাসই সাক্ষ্য দেবে।

 

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে ইসলামের খেদমতে সর্বপ্রথম উদ্যোগ গ্রহণ করেন। ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের জন্য তিনি ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করে যান। টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমার জন্য সুবিশাল প্রান্তর বরাদ্দ করেন বঙ্গবন্ধুই। আজকের বাংলাদেশের মুসলমানদের তাবলিগ জামাতের যে মূল কেন্দ্র কাকরাইল মসজিদ, সেটিও জাতির জনকের অবদান। পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু হত্যার পরে প্রকৃত ইসলামি মূল্যবোধ থেকে সরে গিয়ে এ দেশের মাথার ওপর উগ্রবাদ জেঁকে বসে।

 

২১ বছর পর বঙ্গবন্ধুতনয়া শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। এরপর নানামুখী ষড়যন্ত্র তাকে কিছু সময়ের জন্য দেশসেবা থেকে দূরে রাখলেও ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে তিনি পুনরায় সরকার গঠন করেন।

 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত ১৪ বছরে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব অগ্রগতি হয়েছে। পৃথিবীর অনেক শক্তিশালী দেশের চেয়েও এখন বাংলাদেশের জিডিপি ও এসডিজির অগ্রগতি ভালো। বিভিন্ন অবকাঠামো ও রাষ্ট্রীয় উন্নয়নের পাশাপাশি দেশরত্ন শেখ হাসিনা ধর্মীয় ও নৈতিক উন্নয়নের দিকেও নজর দিয়েছেন। পিতার দেখানো পথ ধরে তিনি জাতিগত সংস্কার ও আধুনিকায়নের উদ্যোগ নিয়েছেন। আর এই জন্যই দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৯০ শতাংশ জনগোষ্ঠীর ইবাদতের জায়গার নির্মাণ শুধু নয়, সেটিকে মডেল হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি।

 

সারাদেশে তিন ক্যাটাগরিতে মসজিদগুলো নির্মিত হচ্ছে। ‘এ’ ক্যাটাগরিতে ৬৯টি চারতলা বিশিষ্ট মডেল মসজিদ নির্মিত হচ্ছে। এগুলো নির্মাণাধীন রয়েছে ৬৪টি জেলা শহরে এবং সিটি করপোরেশন এলাকায়। এগুলোর প্রতি ফ্লোরের আয়তন ২৩৬০ দশমিক ০৯ বর্গমিটার। ১৬৮০ দশমিক ১৪ বর্গমিটার আয়তনের ‘বি’ ক্যাটারির মসজিদ হবে ৪৭৫টি। এগুলো নির্মিত হচ্ছে সকল উপজেলায়। আর ২০৫২ দশমিক ১২ বর্গমিটার আয়তনের ‘সি’ ক্যাটাগরির মসজিদ হবে ১৬টি উপকূলীয় এলাকায়।জেলা সদর ও সিটি করপোরেশন এলাকায় নির্মাণাধীন মসজিদগুলোতে একসঙ্গে এক হাজার ২০০ মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন। অপরদিকে উপজেলা ও উপকূলীয় এলাকার মডেল মসজিদগুলোতে একসঙ্গে ৯০০ মুসল্লির নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা থাকবে। এসব মসজিদে সারাদেশে প্রতিদিন চার লাখ ৯৪ হাজার ২০০ জন পুরুষ ও ৩১ হাজার ৪০০ জন নারী একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারবেন। একসঙ্গে প্রায় ৩৪ হাজার মানুষ কোরআন তেলাওয়াত করতে পারবেন, ৬ হাজার ৮০০ জন ইসলামিক বিষয়ে গবেষণা করতে পারবেন, ৫৬ হাজার মানুষ দোয়া ও মোনাজাতে অংশ নিতে পারবেন এবং প্রতিবছর এখান থেকে ১৪ হাজার কোরআনে হাফেজ হবেন।

 

বর্তমানে নির্মাণকাজ চলছে আরও ২৮৬টির। এরমধ্যে এ মাসে ৫০টি উদ্বোধন শেষে ফেব্রুয়ারিতে আরও ৫০টি মডেল মসজিদ উদ্বোধন করা হবে।ক্রমান্বয়ে সারাদেশে ৫৬৪টি মডেল মসজিদ নির্মাণ করার কথা রয়েছে। এসব মসজিদ নির্মাণে ব্যয় হবে ৮ হাজার ৭২২ কোটি টাকা।এর আগে, ২০২১ সালের ১০ জুন প্রধানমন্ত্রী প্রাথমিক পর্যায়ে নির্মিত ৫০টি মডেল মসজিদ একযোগে উদ্বোধন করে ইতিহাস সৃষ্টি করলেন ।

 

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, আধুনিক সুযোগ-সুবিধা-সংবলিত সুবিশাল এসব মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্সে নারী ও পুরুষদের পৃথক ওজু ও নামাজ আদায়ের সুবিধা, লাইব্রেরি, গবেষণাকেন্দ্র, ইসলামিক বই বিক্রয় কেন্দ্র, পবিত্র কোরআন হেফজ বিভাগ, শিশু শিক্ষা, অতিথিশালা, বিদেশি পর্যটকদের আবাসন, মৃতদেহ গোসলের ব্যবস্থা, হজযাত্রীদের নিবন্ধন ও অটিজম সেন্টার, প্রতিবন্ধী মুসল্লিদের টয়লেটসহ নামাজের পৃথক ব্যবস্থা, গণশিক্ষা কেন্দ্র, ইসলামি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র থাকবে। এ ছাড়াও ইমাম-মুয়াজ্জিনের প্রশিক্ষণ-আবাসন, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য অফিসের ব্যবস্থা এবং গাড়ি পার্কিং-সুবিধা রাখা হয়েছে। মডেল মসজিদগুলোতে দ্বিনি দাওয়াত কার্যক্রম ও ইসলামি সংস্কৃতিচর্চার পাশাপাশি মাদক, সন্ত্রাস, যৌতুক, নারীর প্রতি সহিংসতাসহ বিভিন্ন সামাজিক ব্যাধি রোধে সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।

 

মডেল মসজিদগুলোর সুযোগ-সুবিধা দেখলে সহজে বোঝা যায়, প্রধানমন্ত্রী একটি বিশুদ্ধ ও মানবিক জাতি গঠনের উদ্যোগ নিয়েছেন। নারী-পুরুষের সমতা নিশ্চিত করছেন, অটিজমের শিকার মানুষদের জন্য এসব মডেল মসজিদে বিশেষ সুবিধা থাকছে। অতিথিশালা থাকছে, বিদেশি পর্যটকদের জন্য আবাসনও থাকছে। এ যে কত বড় উদারতা ও মহানুভবতা তা ইতিহাসই সাক্ষ্য দেবে।

 

পরিশেষে বলতে চাই, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার দর্শন ও দূরদর্শিতা ফুটে উঠেছে এসব মডেল মসজিদে। তিনি যতদিন আছেন, ততদিন বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা কেউ ‘দাবায়ে’ রাখতে পারবে না।সারাদেশে ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের জন্য এতগুলো মডেল মসজিদ এক বিরল ঘটনা। ইতিহাস হয়ে থাকবে শেখ হাসিনার এই কৃতিত্ব ও মুসলমানদের প্রতি মমত্ববোধ ও ভালোবাসার কথা। শুধু এই মসজিদ নির্মাণই শেষ নয়। এর আগেও মুসলমানদের প্রতি ভালোবাসা এবং ইসলামের শান্তির বার্তা চারিদিকে ছড়িয়ে দিতে তিনি নানা পদক্ষেপ নিয়েছেন। এর মধ্যে কওমি মাদ্রাসার সনদের স্বীকৃতি, দারুল আরকাম মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা, আলিয়া মাদ্রাসার জন্য স্বতন্ত্র আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা অন্যতম। মুসলমানদের জন্য এই যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করার পর সর্বশেষ বর্তমান সরকার সারা দেশে ৫৬০টি মডেল মসজিদ নির্মাণের যে উদ্যোগ নিয়েছে তাহা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। ধর্মীয় দিক থেকে এর গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম। যেখানে সরকার নিজস্ব অর্থায়নে এটি সম্পন্ন করছেন। তা অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার।

 

বাংলাদেশ একদিন বিশ্বের বুকে মডেল রাষ্ট্র হবে। আর যারা বাংলাদেশকে বিশ্বাস করে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ধারণ করে তাদের মাঝেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বেঁচে থাকবেন চিরকাল।বঙ্গবন্ধু তার সাড়ে তিন বছরের সংক্ষিপ্ত শাসনামলে ইসলামের প্রচার-প্রসারে বিপুল অবদান রেখেছেন,।ইসলামের প্রচার ও প্রসারের ক্ষেত্রে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার যুগান্তকারী অবদানের কথা বাংলাদেশের ইতিহাসে চিরদিন স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। আর তার সুযোগ্য কন্যা বর্তমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে ইসলামের প্রচার-প্রসারে বিপুল অবদান রেখে যাচ্ছেন।ইসলামের এই বিশাল খেদমতের কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করি। বঙ্গবন্ধুসহ তার পরিবারের সকল সদস্যদের জান্নাতের উচ্চ মাকাম দান করুন। আমিন!

 

লেখক: গবেষক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক

 

একুশে সংবাদ/এসএপি

Link copied!