AB Bank
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

অনলাইন গেইম আসক্তি কতটা ভয়াবহ!


Ekushey Sangbad
একুশে সংবাদ ডেস্ক
০১:৩৫ পিএম, ২১ জুলাই, ২০২২
অনলাইন গেইম আসক্তি কতটা ভয়াবহ!

রাজিব হোসেন:- বর্তমান এই প্রযুক্তি নির্ভর যুগে সব কিছু প্রযুক্তির মাধ্যমে হবে এটা যেমন স্বাভাবিক বিষয় তদুপরি  সব কিছুতেই প্রযুক্তির ছোঁয়া লাগলে স্বাভাবিক জীবনটাও অস্বাভাবিক হয়ে যাবে! না বিষয়টা এতটাও নয় কারণ সকল বিষয়ের দুটা দিক থাকে- ভাল ও খারাপ। অর্থাৎ সুষ্ঠু ও সুন্দর নিয়মতান্ত্রিকভাবে সকল জিনিসের ব্যবহার বয়ে আনতে পারে সমাজের জন্য সাফল্য ও মানবকল্যাণ।

তবে একটি কথা না বললেই নয় কোনো ক্ষতিকর জিনিসের কখনোই ভাল দিক ও ভাল জিনিসের ক্ষতিকর দিক থাকতে পারে না। অনলাইন গেইমের কথায় আসা যাক- এইতো কয়েক বছর  আগেও ভোর হতে শুরু করে সন্ধা পর্যন্ত ছেলেমেয়েরা সারাদিন মাঠে খেলাধুলাতো করতই বরং স্কুলে গিয়েও পড়াশোনার ফাঁকে অবসর সময়ে লেগে যেতো ফুটবল ক্রিকেট সহ শারিরীক ও মানসিক প্রশান্তিদায়ক খেলাধুলায়। খেলাধুলার মাত্রা এতবেশি থাকত যে কতশত নালিশ বাপের কাছে আসত আর বকুনি খেতো তার হিসাব বোধগম্য নয়। সন্তানদের সারাদিন খুঁজেও পাওয়া দুষ্কর থাকত কারণ তারা  শৈশব ও কৈশোরের দুরন্তপনায় মত্য থাকত। 

কিন্তু বর্তমানে তার ঠিক উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে আর সেটা সম্ভব হয়ছে প্রযুক্তির অপব্যবহারের ছোঁয়ায়। এইতো যেই ছেলেটাকে একসময় ঘরে রাখায় যেত না সারাদিন বাইরে টইটই করে ঘুরে বেড়াত, দুরন্তপনায় ও খেলায় মগ্ন থাকত আজ তাকেই ঘর থেকে বের করা যাচ্ছে বরং অন্ধকার গৃহটাকেই সে আপন করে নিয়েছে  কারণ খেলাধুলা ও দুরন্তপনা এখন তার অনলাইন প্রযুক্তিতে হয়ে গেছে। হাতের মুঠো ফোনটাতে ক্রিকেট ফুটবল সহ অনলাইন ফ্রি ফায়ার,পাবজি ও নানারকম অসামাজিক গেইম রয়েছে তাই আর কষ্ট করে বাড়ির বাইরে যেতে হয়না। 

আপাতত দৃষ্টিতে এসকল গেইম ভাল মনে হলেও এর সুদূরপ্রসারী ক্ষতি ভবিষ্যত তরুণ প্রজন্মকে ঠিক কোথায় নিয়ে যাবে তা একটু সুদূরপ্রসারী চিন্তাভাবনা করলেই হয়। অনলাইন গেইম আসক্তি এতটাই ভয়াবহ হতে পারে যা বিভিন্ন সময় খবরের শিরোনাম হয়েছে। কতশত আত্মহত্যা আর অপরাধ ঘটছে তার বর্ণনা দেওয়ার মত নয়। এইতো উঠতি বয়সি ছেলেমেয়ে থেকে শুরু করে শিশুসহ বয়স্ক মানুষও আক্রান্ত হতে পারে এসকল অনলাইন গেইম আসক্তিতে। অনলাইন গেইম এ ক্ষতিকর দিক কেমন হতে পারে তার সামান্য কিছু বলি। কিছুদিন পরপর গেইমগুলোতে নতুন নতুন বিভিন্ন চমকপ্রদ বিষয় যুক্ত করে আর তা টাকা দিয়ে কেনা ছাড়া ব্যবহার সম্ভব হয়না এবং তা এতটাই চমকপ্রদ যে গেইমে আসক্ত ব্যক্তি তা কিনার জন্য পাগল হয়ে পড়ে এবং অধিকাংশ ছেলেমেয়ে এসব কেনার জন্য চুরি ও নৈতিক অবক্ষয়ের চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে যায়। 

তাছাড়া এসব অনলাইন গেইমে শারীরিক ও মানুষিক অবসাদ বৃদ্ধি ছাড়া আর কিছুই হয়না।  ফলে নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত হওয়াটা সহজ হয়ে পড়ে। পাশাপাশি সামাজিকতা বিমুখ হয়ে পড়ে সহজেই। অর্থ, সময় ও সামাজিক অবক্ষয়ের আরেক নাম অনলাইন গেইম আসক্তি। কেহ যদি বলে আসক্তিটা বাদ দিয়ে দিলেই তো হয় শুধু অনলাইন গেইম বললে অসুবিধা কি তাদের জানা উচিৎ অনলাইন গেইম একবার খেললে পরের বার খেলবে না এটার নিশ্চয়তা দিতে পারলে বাদ দেওয়া যায় আসক্তি নামক শব্দটা। মূলত অনলাইন গেইমের সাথে ওতপ্রতভাবে জড়িত আসক্তি শব্দ। পাড়ার সব ছেলেমেয়ে একসাথে হয়ে গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী যেসব খেলায় মগ্ন থাকত আজ সেসব ভুলে ঘরে বসে অনলাইনে খেলার ফলে তা ভুলতে বসেছে এবং হারিয়ে যেতে বসেছে সেসব ঐতিহ্য। এইতো যখন হাতে স্মার্টফোন ছিল না তখন বন্ধুদের মাঝে দেখা হলেই কতকথা কত আলোচনা আর কত আড্ডা হত আর এখন দেখা হলে ফোন চাপতে চাপতে যে যার মত চলে যায়। 

অনলাইনে গেইম আসক্তির ফলে ও দীর্ঘক্ষণ ফোনের ব্যবহারে চোখ সহ শারীরিক ও মানুষিক ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে যা সামনের দিনগুলোতে আরও ভয়াবহ হবে যদি এখনি কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হয়। সর্বশেষ বলতে চাই  প্রযুক্তি মানব কল্যানের জন্য এসেছে কিন্তু এর অপব্যবহারটাই বেশি হচ্ছে বলে নানা ধরনের সামাজিক অবক্ষয়ের দেখা যাচ্ছে যা ভবিষ্যতে এক অন্ধকারাচ্ছন্ন জাতি উপহার দিবে।


 
 

একুশে সংবাদ/রা.হো/এস.আই

Link copied!