AB Bank
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

শব্দের শৈল্পিকতা নাকি বিভ্রাট ?


Ekushey Sangbad
একুশে সংবাদ ডেস্ক
০৭:৪৯ এএম, ১০ এপ্রিল, ২০২১
শব্দের শৈল্পিকতা নাকি বিভ্রাট ?

কি যুগ এলো , সব কিছুই নাকি শিল্প । কোন কিছু বাদ নেই , শিল্পের নামে গুরু পাপ লঘু করার উপায় হবে হয়ত । গালি শিল্প , মাছ ধরা শিল্প , সুর করে কান্না করে ভিক্ষা করাও নাকি ভিক্ষা শিল্প , বহুদিন হলো একটা বই পড়েছিলাম সেখানে লেখা ছিল খুন করাও শিল্প , ইদানীং ধর্ষণ যে হারে বেড়ে গেছে তাতে শিল্প রসিক’রা না জানি বলে বসেন, ধর্ষণ শিল্প । না না শিল্পে আমার মোটেও এর্লাজি নেই ।কিন্তু না বুঝে না জেনে শিল্পের নামে শব্দ ছেনে শিল্পের আকার দিলে , সেটা মেনে নিতে বেশ কষ্ট হয় । কিছুদিন হলো এক বড় ভাইয়ের সাথে কথা হচ্ছিলো উনি আমাকে শব্দের শৈল্পিকতা বোঝাতে চেয়েছেন । সেখানে সমার্থক শব্দ হলেও উনি বলেছেন একটা শব্দ শৈল্পিক অন্যটা বাজে নোংরা । ব্যপার টা ঠিক এরকম ... গ্রামের বাড়ির রান্না এক পদের নাম “ ইচা কদু , আর শহুরে ভাষায় লাউ চিড়ি । “ শহরে এসে ইচা মাছ আর কদু যখন লাউ চিংড়ি হয়ে গেল তখন সেটা ডিশ , আর গ্রামের লোকের কাছে ছালুন। এতে কি লাউ স্বকিয়তা হারালো ? নাকি ডিকসনারী তে শৈল্পীক খেতাব পেলো লাউ ? আমার কাছে গ্রামের আর শহরের লাউ কিংবা কদু একই । এতো কথা বলার পেছনে একটা কারণ । ভাইজান একটা শব্দ নিয়ে ভীষণ দ্বিমত পোষণ করেছেন . শব্দ টা হলো ন্যাংটো আর নগ্ন । উনি বলেছেন ন্যাংটো বা ন্যাংটা শব্দের অর্থ ভিন্ন , নগ্ন শব্দের অর্থ ভিন্ন । ঐ ব্যপার টা একই হলো তো , যে লাউ সেই কদু । নাকি অন্য ? যা হোক বড় ভাইয়ের কথাটা মানা না মানা বড় কথা নয় ,কথা হলো জানা দরকার , ক্লিয়ার হওয়া দরকার । জেনে রাখলে ক্ষতি নেই বরং উপকারই হয় । এতে আমি মনে করি যত ঘাটিবে ততই মজিবে ,যতই পড়িবে ততই জানিবে । মোঃ আলাউদ্দীন ভুঁইয়া একটা লেখায় খুব সুন্দর করে জানতে পারবো শব্দের শৈল্পিকতা কতখানি গ্রহন বর্জন করা যায় । “ন্যাংটা, ন্যাংটো -বিশেষণ পদউলঙ্গ, বিবস্ত্র, আবরণবিহীন। ন্যাংটার আবার বাটপারের ভয়- নিঃসম্বল ব্যক্তির কিছু খোয়া যাবার আশঙ্কা নাই।”নগ্নতা বলতে কোন পোশাকহীন শারীরিক অবস্থাকে বোঝায়।প্রধানত মানুষের বৈশিষ্ট হল পোশাক পরিধান যার প্রয়োজনীয়তা কার্যকরী চাহিদা থেকে উদ্ভূত, যেমন বাহ্যিক উপাদান, ঠান্ডা এবং তাপ থেকে সুরক্ষা, শরীরের চুলের ক্ষতি রোধ, এবং শীতপ্রধান অঞ্চলে বসবাস ইত্যাদি। পোশাক পরিধান সাধারণত উষ্ণতা বা উপাদান থেকে সুরক্ষা এবং সামাজিক বিবেচনার উপর নির্ভর করে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে, নূন্যতম পোশাক বা পোশাকহীন অবস্থা সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য বিবেচিত হতে পারে। সাধারণভাবে শালীনতাবোধ নগ্নতাকে সমর্থন করে না। তবে স্থান ও কাল ভেদে শালীনতাবোধের ধারণা বিভিন্ন। সভ্য সমাজে যা শালীন, আদিম সমাজে তা বিপরীত। কোনো কোনো নির্দিষ্ট সমাজব্যবস্থায় চিত্রে, ভাস্কর্যে ও সাহিত্যে নগ্নতাকে নান্দনিকতার এক বিশেষ উপাদান মনে করা হয়। ফটোগ্রাফির আবিষ্কারের সময় থেকেই তাতে নগ্নতার ব্যবহার প্রচলিত। তবে ফটোগ্রাফিতে নগ্নতার মধ্যে সবসময় শৈল্পিক মেধা বিকশিত না হলেও, নগ্ন ফটোগ্রাফি বা ন্যুড ফটোগ্রাফিতে হয়ে থাকে। ফটোগ্রাফিতে নগ্নতা সাধারণত স্ন্যাপশট; কিন্তু নগ্ন ফটোগ্রাফি কোনো ব্যক্তির স্থির অবস্থায় তোলা ছবি। শিল্পকৃতি হিসেবে, নগ্ন ফটোগ্রাফি হল নগ্ন দেহের শৈল্পিক প্রদর্শন। এখানে মানবদেহের রেখা ও রূপই প্রধান উদ্দেশ্য।ইরোটিক ফটোগ্রাফি ও পর্নোগ্রাফিতেও অনেক সময় নগ্ন বা অর্ধনগ্ন মডেলদের শৈল্পিক চিত্র বিধৃত হয়ে থাকে। স্পেনসার টিউনিক নির্মিত সারা বিশ্বের নানা প্রকাশ্য স্থানে এক দঙ্গল নগ্ন লোকের স্থিতিস্থাপক ফটোগ্রাফি উচ্চ মানের শিল্পমেধার জন্য নন্দিত। : নগ্ন ক্যালেন্ডার নগ্ন ক্যালেন্ডার প্রকাশের প্রথাও দ্রুত বিকাশলাভ করেছে। এগুলি বর্তমানে এক প্রকার বার্ষিক প্রথায় পরিণত হয়েছে। এই ক্যালেন্ডারগুলি দুই প্রকার: •নগ্ন নারী চিত্রসম্বলিত ক্যালেন্ডার •নগ্ন পুরুষ চিত্রসম্বলিত ক্যালেন্ডার বিগত দুই দশকে নগ্ন দাতব্য ক্যালেন্ডার প্রকাশের প্রথাও বিকাশলাভ করেছে। সফল দাতব্য নগ্ন ক্যালেন্ডারগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল গডস অফ দ্য স্টেডিয়াম (ফ্রান্স) এবং গডস অফ ফুটবল, লিগ অফ দেয়ার ওন ও নেকেড রাগবি লিগ অস্ট্রেলিয়ান স্পোর্টস ক্যালেন্ডার। তেমনি আরও কিছু শব্দ যেমন -“ফারসী থেকে আগত বাংলা ‘পায়খানা’ শব্দটি ‘মল’ বা ‘মলত্যাগের স্থান’ দুই অর্থেই অমার্জিত; আর ‘গ-এ-উ’ তো রীতিমত য়ে শালিক’ নামে যে সারিকা পাখি পাওয়া তাদেরকে কি এখন ‘টয়লেটিয় শালিক’ বলতে হবে? যৌন বিশেষজ্ঞের চেম্বার যেন বাংলাভাষার কসাইখানা! ঊর্ধ্বাঙ্গ থেকে নিন্মাঙ্গ, বক্ষ থেকে নিতম্ব, এখানে চিকিৎসাযোগ্য সকল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ক্ষেত্রে ইংরেজি ব্যবহৃত হয়। এসকল বাংলা শব্দ এতটাই ‘অশ্লীল’ বিবেচিত যে সভ্য সমাজে এদের দু’একটি মুখ ফসকে বের গেলে পুরুষ-নারী একে অপরের দিক থেকে চোখ ফিরিয়ে নেয়; অথচ, দেশের নামকরা পত্রিকাগুলোতে সেই সকল তথাকথিত ‘অশ্লীল’ শব্দ নির্দ্বিধায় ব্যবহৃত হচ্ছে- ‘…স্বামীর পুরুষাঙ্গ কর্তন, স্ত্রী আটক’ (যুগান্তর, ০৬ নভেম্বর, ২০১৫), ‘পুরুষাঙ্গ প্রতিস্থাপনে বিশ্বে প্রথম সফল অস্ত্রোপচার’ (প্রথম আলো, ১৪ মার্চ ২০১৪), ‘জরায়ু ক্যান্সার প্রতিরোধী টিকা’ (কালের কণ্ঠ, ১১ ডিসেম্বর ২০১৪), ‘…মধ্যবয়সে ত্বক, স্তন, অন্ত্র, জরায়ু… ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি’ (“দীর্ঘকায় নারীর জন্য ঝুঁকি”, প্রথম আলো, ২৯ জুলাই ২০১৩), ‘আসুন, মাসিক নিয়ে কথা বলি’ (“লজ্জা নয়, সচেতন হতে হবে”, প্রথম আলো, ১৮ মে ২০১৪)। ইংরেজিতে ‘ইউফেমিজম’ বলে একটা বিষয় আছে যার অর্থ ‘শ্রুতিকটু শব্দের কোমলতর প্রকাশ’। বাংলাতেও আমরা এমন করে থাকি, মৃত্যুকে আমরা ‘পরলোকগমন’, ‘ইন্তেকাল’ বলি। অপরিশীলিত বলে ধর্তব্য এমন অনেক বাংলা শব্দকে আমরা ইতোমধ্যে শ্রাব্য করে তুলেছি; যেমন- যোনি>জরায়ু, শিশ্ন>পুরুষাঙ্গ, যৌনমিলন>সহবাস, যুবতী>যুবা, বেশ্যা>পতিতা, স্তন>বক্ষ/বুক, ঋতুস্রাব>মাসিক, ন্যাংটা/ ল্যাংটা>উলঙ্গ>নগ্ন ইত্যাদি। এছাড়া, বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এসকল বিষয় বোঝাতে বিভিন্ন আঞ্চলিক শব্দসম্ভারও রয়েছে। তথাপি, এ সকল শব্দাবলীর সবই আজ ভাষাতাত্ত্বিক অশ্লীলতা দোষে দুষ্ট, বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে; এ সকল শব্দের ইংরেজি সমার্থকসমূহ মার্জিত বিবেচনায় সামাজিকভাবে প্রচলিত, প্রতিষ্ঠিত।” আশা করি উপরের লেখাটা পড়ে অনেকের মাঝে শব্দের নগ্নতা গুলোতে সবসময় শৈল্পিকতার মুকুট পরালেও কিন্তু শব্দের অর্থ বদলে যায় না । তাই শব্দের শৈল্পিকতার নামে একটু খেয়াল করে চলতে বা বলতে হয় । কথায় আছে মুখের শব্দ বন্দুকের গুলির মতো একবার বের হলে তা আর ফেরত নেয়া যায় না , এজন্যই বলে বুঝি ... “বুঝে শুনে কথা বলো ।”

Link copied!