AB Bank
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

‘রন্ধন কাব্যে’ এক বেলা


Ekushey Sangbad
একুশে সংবাদ ডেস্ক
০৬:৫৬ পিএম, ১৮ মার্চ, ২০২১
‘রন্ধন কাব্যে’ এক বেলা

‘বাবা, নৌকায় চড়বো’- কন্যা পরীর বায়নায় নিজেই হাতে বৈঠা তুলে নিয়েছেন বাবা নজরুল আহমেদ। পরীর মতো প্রতিদিন অসংখ্য শিশুসহ নানা বয়সের মানুষ আসেন পদ্মদিঘীতে। না এটি কোনো পুরানো দিঘীর কথা নয়। সিলেটের অন্যরকম এক রেস্টুরেন্ট ‘রন্ধনকাব্যের’ ভেতরে থাকা দিঘীর কথা। আর সেই দিঘীর নামই হচ্ছে পদ্মদিঘী। 

রেস্টুরেন্টটিতে যে কেউ এসেই পরিবার পরিজন নিয়ে নৌকায় ঘুরতে পারেন। আছে রেস্টুরেন্টটির নিজস্ব মাঝি। কেউ চাইলে নিজেও বাইতে পারেন নৌকা। রন্ধন কাব্যে একদিকে যেমন রয়েছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত খাবারের স্থান ঠিক তেমিন রয়েছ পুকুর ঘাটে ছনের ঘরে বসে ফুচকা-চটপটি-চা ও অন্যান্য খাবার উপভোগের সুবিধা।

সিলেটের জালালাবাদ থানা এলাকায় অন্যরকম এই উদ্যোগ নিয়েছেন রেস্টুরেন্টটির উদ্যোক্তা ফারহানা আক্তার। দেড় একর জায়গার ওপর গড়ে তোলা হয়েছে রেস্টুরেন্টটি। নানা সুগন্ধি ফুলের যেমন সমারোহ রয়েছে ঠিক তেমনি রয়েছে নানা ফলের গাছ। মূলত প্রাকৃতিক বিষয়টি নজরে রেখেই করা হয়েছে রেস্টুরেন্টটির ইন্টেরিয়র বলে জানিয়েছেন এই উদ্যোক্তা। 

ফারহানা আক্তার পেশায় মূলত একজন আর্কিটেক্ট। পড়াশোনা শেষ হতে না হতেই উদ্যোক্তা হওয়ার নেশা যেন পেয়ে বসে ফারহানাকে। আর কন্যার সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়নে পুরো সহায়তা করেছেন বাবা কয়সর আলম। বলেন, সন্তানের স্বপ্নই বাবার খুশি। ফারহানা যখন রেস্টুরেন্টটি করতে চেয়েছে আমি তাঁর চোখ এক আনন্দ দেখেছি। মেয়ের আনন্দের থেকে বড় কিছু নেই আমার জীবনে।’

২০২০ সালেল ১৩-ই ফেব্রুয়ারি ভালোবাসা দিবসে উদ্বোধন করা হয় রন্ধন কাব্যের। নিয়োগ দেয়া হয় ৫০ জনের বেশি কর্মী। এরই মধ্যে শুরু হয় করোনা মহামারীর থাবা। লকডাউনে কার্যক্রম বন্ধ করতে হয় রন্ধনকাব্যকে। কিন্তু কর্মীদের যাতে কোনো আর্থিক কষ্ট না হয় তাই ছাঁটাইতো নয়ই বরং পুরো বেতন দিয়েছেন লকডাউনের মধ্যেও। লকডাউনের পর সীমিত পরিষরে ফের যাত্রা শুরু হয় রন্ধন কাব্যের। ধীরে ধীরে আসা শুরু হয় অতিথিদের। বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ৫০০ মানুষের সমাগম হয় রন্ধন কাব্যে। 

ফারহানা আক্তারের কাছে রন্ধন কাব্য যেন তার সন্তান। ‘তিল, তিল করে রন্ধন কাব্যকে সাঁজিয়েছি আমি। মেন্যু তৈরি করেছি। এখানে প্রতিটি জিনিষেই আমার ছোঁয়া রয়েছে। রন্ধন কাব্যই আমার প্রথম সন্তান।’ 

ইন্ডিয়ান-ওয়েস্টার্ন-বাংলা খাবারের জন্য রয়েছে পৃথক পৃথক বাবুর্চি, যাদের রয়েছে রান্নায় প্রাতিষ্ঠানিক সনদ। প্রতিদিনের তাঁজা সবজি ও খাবার মূল্য উপাদান আনা হয় সরাসরি গ্রামের কৃষকের কাছ থেকে। শুধু তাই নয় খাবারের মূল্য রাখা হয়েছে হাঁতের নাগালে বলে জানিয়েছন রেস্টুরেন্টটির কর্ণধার ফারহানা আক্তার। 

মূল্য তালিকার বিষয়ে এই নারী উদ্যোক্তা বলেন, আমি কখনোই চাই না রন্ধন কাব্যে এসে কেউ মূল্যের বিষয়ে ভাবুক। এখানে ৫০ টাকা থেকে খাবারের মূল্য শুরু হয়েছে। আমি মানুষের মুখে হাসি দেখতে চাই। ’ 

অন্যদিকে সন্ধ্যায় গানের আসর বসে রন্ধন কাব্যের আঙিনায়। চাঁদিনী রাতে পুকুর পাড়ে বসে গান শুনতে শুনতে পছন্দের মেন্যুটি পরিবার নিয়ে উপভোগ করতে তাই সবাইকে আমন্ত্রন জানায় প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার। আর যদি কেউ হোন প্রকৃতি প্রেমী তাহলে রন্ধন কার্বের বিকল্প নেই পুরো সিলেট জুড়ে। এখানে রয়েছে প্রায় ৪০ জনের ফুলের গাছ। রয়েছে অসংখ্য ফলের গাছ। পদ্ম দিঘীতো যেন বাড়তি পাওনা।  ফারহানা আক্তার বলেন, কেউ যদি এখানে বার্বিকিউ করতে চায় তার ব্যবস্থাও করে থাকি গেস্টদের চাহিদা অনুযায়ি। আমরা আমাদের আঙিনা সাজানোর ক্ষেত্রে সতেজ ফুলকেই প্রাধান্য দিয়েছি বেশি। কৃষি বিশ^বিদ্যালয়ে আমি নিজে গিয়েছি। ওখান থেকে ৩০ ধরনের ফুলের চারা নিজে যতœ করে নিয়ে এসেছি। পরে আমার সহকর্মীরা আরো ফুলের চারা এনে সৌন্দর্য্য বর্ধন করেছেন। এখন আমার রন্ধন কার্বের আঙিনায় প্রায় ৪০ ধরনের ফুলের গাছ রয়েছে। 

রেস্টুরেন্টের পাশাপাশি রন্ধন কাব্যের রয়েছে তিনটি হল রুম। এসব হলরুম ভাড়া দেওয়া হয়, কনফারেন্স, বিয়ে, গায়ে হলুদ বা পারিবারিক নানা অনুষ্ঠানের জন্য। কর্পোরেট মিটিং এর জন্যও রয়েছে আলাদা হল রুম। একই সাথে ৩০০ মানুষের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা যায় রন্ধন কাব্যে।

একুশে সংবাদ/ঊর্মি মাহবুব/আ

Link copied!