AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

বঙ্গবন্ধুর বিশ্বাসে ‘কর্মীরা না থাকলে আমি কে!’


Ekushey Sangbad
একুশে সংবাদ ডেস্ক
১১:৩২ এএম, ২৪ নভেম্বর, ২০২০
বঙ্গবন্ধুর বিশ্বাসে ‘কর্মীরা না থাকলে আমি কে!’

"এভরি পার্টি ওয়ার্কার অব মাইন ইজ লাইক মাই ব্রাদার, ইজ লাইক মাই সন। আই ক্রিয়েটেড এ ফ্যামিলি হোয়েন আই অরগানাইজড আওয়ামী লীগ, পলিটিকাল পার্টি মিনস এ ফ্যামিলি-যার ভেতর আছে আইডিওলজিক্যাল এফিনিটি। পার্টিতে উই আর ওয়ান ফর সাম পার্টিকুলার পারপাসেস, হোয়্যারেভার উই আর? কথাগুলো জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের।

দলের নেতা ও কর্মীর মধ্যে সম্পর্ক কেমন হওয়া উচিৎ সেটা বঙ্গবন্ধুর অন্তরে গাঁথা কথাগুলোই বলে দেয়। 
   
বঙ্গবন্ধু বলেছেন,"মবিলাইজ দি পিপল এন্ড ডু গুড টু দি হিউম্যান বিইংস অব বাংলাদেশ। দীজ আনফরচুনেট পিপল হ্যাভ সাফার্ড লং-জেনারেশন আফটার জেনারেশন।"

বঙ্গবন্ধু এজন্যই বড় নির্মম মহাকালের কথা না ভেবে, সমকালের কোন স্তুতিবাদ, নিন্দাবাদের তোয়াক্কা না করে পথ চলছেন শত বাঁধা বিপত্তি উপেক্ষা করে। নিঃস্বার্থ কর্মীরাও সকল সংকটে তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছে। মহতিমনের প্রেরণায় অনুরক্ত হয়ে ওঠা অদৃষ্টবাদীর ন্যায় গভীর, গহীন-বিষাদে ডুবে থাকার মানুষ ছিলেন না তিনি। সারাবিশ্ব তাই তাঁকে ধারণ করছে। তার মানবিক মূল্যবোধের উচ্চতার পরিস্ফুটন ঘটেছে প্রতিটি কর্মে। গণমানুষের অন্তপ্রাণে তাই তিনি অসাধারণ অমূর্ত স্মৃতি, কালোত্তীর্ণ প্রতিভা, স্তম্ভিত বিস্ময় মহামানব।

সব ভীতিকে উপেক্ষা করে ছাত্র যুব কর্মীরাও আন্দোলনের প্রদীপ জ্বেলে দুঃসাহস যুগিয়েছেন স্বাধীকার থেকে স্বাধীনতার আন্দোলনে। তিমির-নিবিড় অন্ধকার তাঁকে তারা করেছে কিন্তু কোনকিছুই তাঁর পথচলাকে রুখতে পারেনি। কর্মীরাও ছিলো তেজস্বী বীর্যবন্ত। গভীরনিশীথে মুক্তির দুর্গের হাত থেকে মাঠপর্যায়ের কর্মীরাই রুখে দিয়েছে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে পাকিস্তানের সব ষড়যন্ত্র। বঙ্গবন্ধুর ওজস্বিনী বক্তৃতায়- ভাষণে মুক্তির দাবির বন্দনহীন ছন্দের মতো অনর্গল উচ্ছাসে একদিন যারা সভা-সমাবেশে ছিল সদাজাগ্রত তারাই ছিলেন প্রিয়নেতার সুখদুখের পরোক্ষ অনুভবে তপস্যারত। ক্ষুরধার যুক্তির খাতিরে শূন্যগর্ভ অভিযোগী শব্দে অনেক প্রবীণ নেতাই বিশ্বাস করেননি যে, দলের কর্মীরাই মূল শক্তি। 
বঙ্গবন্ধুর মুখে তাই শোনা গেছে, "আমরা যারা ক্ষমতা ব্যবহার করতে শিখেছি তারাই মুরব্বীয়ানা দেখিয়েছি। যেন আমরা হলাম মালিক, তোমরা আমাদের গোলাম। তোমরা এসো আমাদের বাড়ির দরজায় দাঁড়িয়ে থাকো। আমাদের হুকুম নাও, হুকুম মতো কাজ করো- অথচ, এই মনোভাব কোন স্বাধীন দেশে চলতে পারে না।"

তিনি রাজনৈতিক কর্মপরিসরে ব্যস্ত থেকেছেন সারাজীবন। এতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেছেন। কর্মীদের বুকে আগলে রাখতেন। সততার উপলব্ধির বিস্ময়কর অনুমানীয় চিন্তাধারাই তাঁর মেধা ও প্রতিভার উচ্চকিত ভাবভঙ্গিতে প্রকাশ পেতো। তিনি সত্যিকার অর্থেই অসীম আশাবাদী এক উদ্যমী কর্মবীর। ছাত্রজীবন থেকেই নিষ্ঠা, সততা ও অকুন্ঠ দেশপ্রেম বোধের বহু দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। আস্থা, বিশ্বাস, সততা, নিষ্ঠা, শ্রম ও ত্যাগসুখ আর ব্যক্তিত্বের পরিচয়বহন করে চলছেন দায়িত্ববোধের সরব পদচারণায়। যে শিক্ষা পেয়েছেন তাঁর নেতা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর কাছ থেকে। ব্যক্তির চেয়ে সমষ্টিকরণ তাঁর কর্মের পরিধি, যা ধীরলয়ে বিস্তৃতিলাভ করে। ব্যবহারে ছিলেন সরল, সহজ, সাবলীল। আর কোমলমতি প্রাণ আচার-আচারণে। 

দেশ ও নেতার মধ্যকার সম্পর্ক মাতৃত্বের বন্ধনের ন্যায় আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা এই সত্য প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। এজন্যই তো শেখ মুজিবুর রহমান বঙ্গবন্ধু ও জাতির পিতা। তিনি প্রয়াসের নানাক্ষেত্র আবিস্কারের পরিকল্পক হয়ে ওঠার মতো কর্মশৈলীতায় সর্বদা ছিলেন চিন্তামগ্ন। তিনি রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ করে গণমানুষের মনের দূয়ারে কড়া নেড়ে নেড়ে নেড়ে 'অবিসংবাদিত নেতা' হয়ে ওঠেন। প্রাণবন্ত উজ্জ্বল-উচ্ছ্বল বিদগ্ধপ্রাণ হয়ে উঠেছেন তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণকারী অন্তত চার সহচরও। যে কারণে পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট মহান নেতা নিহত হওয়ার পর আপোষ করেননি খুনীদের সঙ্গে। বরং পঁচাত্তরের ৩ নভেম্বরে বঙ্গবন্ধুর খুনীদের হাতে অকাতরে জীবন দিয়েছেন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে।  
নিখাঁদ বিশ্বাস ও সংবেদনশীল পথ-পরিক্রমায় বেড়ে উঠেছিলেন জাতীয় চার নেতা। হয়তো ধীরশান্ত স্থিরচিত্ত আর একনিষ্ঠতা রাজনৈতিক উত্থানের এক অপার সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করতে চেয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু অগ্নিমূর্তির প্রকাশ ঘটানোর আশঙ্কা করে খুনী মোশতাকের নির্দেশে হত্যার শিকার হন। 

বঙ্গবন্ধুর বেশভূষায় ফুটে উঠতো সুরুচিসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব। মহিমানিলয় মিলনমেলার অপূর্ব বলয় গড়ে তুলেছিলেন তিনি। রাজনীতির সরল, সহজ অন্তঃকরণ এবং সচ্ছল দৃষ্টিভঙ্গির অধিকারী যারা তাদের জানতে বহুদিনের প্রয়োজন পড়ে না। নিরহংকারীদের পরিশীলিত, পরিচ্ছন্ন, নির্মল ও প্রশান্ত মনের অধিকারী হতে হয়। নেতা হতে হলে কর্মীর অন্তরের সঙ্গে অন্তরের আত্মিক সম্পর্কের সুদৃঢ় গাঁথুনি গড়ে তুলতে হয়। হাঁটতে হয় অহিংসার পথ ধরে। যে মানুষের মন জয় করতে পারেন সেই প্রকৃত নেতা। ভুলে গেলে চলবে না, যে পরিপূর্ণ মানুষের সান্নিধ্য পাওয়া যায় দ্বিধাহীন চিন্তার স্বাধীনতায়। মূল্যবোধের দীনতায় গুণীজনদের প্রতিভার স্ফূরণ ঘটে না। পদাধিকার বলে আত্মঘোষিত ব্যক্তিদের দিয়ে সামাজিক প্রতিষ্ঠার চেষ্টা দেখা যায়, কিন্তু সৃজনশীলতাকে এগিয়ে রাখা যায় না।

লেখক: সোহেল সানি, সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিস্ট

একুশে সংবাদ/এআরএম

Link copied!