AB Bank
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ২৭ ভাদ্র ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

শ্রীমঙ্গলে ১০ মাসে ৩৮ বন্যপ্রাণী উদ্ধার


Ekushey Sangbad
শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
০৯:৫২ পিএম, ১২ জানুয়ারি, ২০২৪
শ্রীমঙ্গলে ১০ মাসে ৩৮ বন্যপ্রাণী উদ্ধার

পরিবেশ-প্রতিবেশের প্রভাব, অবাসস্থল, খাদ্য ও পানির সংকট ইত্যাদি কারণে বন্যপ্রাণীরা বন ছেড়ে লোকালয়ে এসে ধরা পড়ছে মানুষের হাতে। আবার কোনো কোনো প্রাণী গাড়ি চাপায় এবং মানুষের হাতে মারাও যাচ্ছে। তবে সচেতন মানুষ লোকালয়ে বন্য কিংবা বিপন্ন প্রাণী দেখলে বন বিভাগ বা শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের পরিচালক স্বপন দেব সজলকে খবর দেন।

খবর পেয়ে তিনি বন বিভাগের লোকজনকে সাথে নিয়ে অক্ষত অবস্থায় প্রাণী উদ্ধার করে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগে হস্তান্তর করেন। গত ১০ মাসে শ্রীমঙ্গলে খাদ্য, পানি ও আবাসস্থল সংকটে বন ছেড়ে লোকালয়ে আসা ৩৮টি বন্যপ্রাণী উদ্ধার করেছে শ্রীমঙ্গল উপজেলার সদর ইউনিয়নের রূপসপুর গ্রামে অবস্থিত সীতেশ বাবুর মিনি চিড়িয়াখানা নামে অধিক পরিচিত বন্য প্রাণীদের আশ্রয়কেন্দ্র বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশন।

শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) সন্ধা ৬টায় বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের পরিচালক স্বপন দেব সজল একুশে সংবাদ ডটকম-কে জানান, ২০২৩ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাহাড়-বন-জঙ্গল ছেড়ে লোকালয়ে আসা বিভিন্ন প্রজাতির বিপন্ন এবং বিরল জীবিত ও মৃত মোট ৩৮টি বন্যপ্রাণীকে উদ্ধার করে বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশন। এরপর অক্ষত ৩৭ প্রাণীকেবন বিভাগে হস্তান্তর করা হয়েছে।

তিনি জানান, উদ্ধারকৃত বন্যপ্রাণীদের মধ্যে রয়েছে ১৭টি অজগর সাপ, লজ্জাবতী বানর ৮টি, বন বিড়াল ৪টি, শঙ্খিনী সাপ ৩টি, গন্ধগোকুল ২টি, রেড আইক্যাট স্নেক ২টি, ধূসর ফণীমনসা সাপ ১টি এবং পেঁচা ১টি। লোকালয়ে আসা বন্যপ্রাণীগুলো শ্রীমঙ্গল শহর এবং শহরতলীর বিভিন্ন বাসা-বাড়ি থেকে জীবিত উদ্ধার করা হয় বলে স্বপন দেব সজল জানান। ১৯৬৫ সালে শ্রীমঙ্গল উপজেলার পশুপ্রেমিক শ্রীশ চন্দ্র দেব নিজ উদ্যোগে সদর ইউনিয়নের নেয়াগাঁও গ্রামে প্রতিষ্ঠা করেন বন্যপ্রাণী আশ্রয়কেন্দ্র। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় আশ্রয়কেন্দ্রটি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়।

১৯৭২ সালে শ্রীশ চন্দ্র দেবের ছেলে সীতেশ রঞ্জন দেব তার আর.কে মিশন রোডের বাসায় ক্ষুদ্র পরিসরে পুনরায় চালু করেন আশ্রয় কেন্দ্রটি। পরবর্তীতে রূপসপুর গ্রামে নিজের সাড়ে পাঁচ বিঘা জমির খামারবাড়িতে এটি স্থানান্তর করেন। সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে যার নামকরণ করেন বাংলাদেশ বন্য প্রাণী সেবা ফাউন্ডেশন।ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে বন ছেড়ে খাদ্য ও বাসস্থানের সন্ধানে লোকালয়ে আসা প্রাণীদের উদ্ধার করে নিবিড় পর্যবেক্ষণ, সেবা ও চিকিৎসা দিয়ে পুনরায় বনে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

যে প্রাণীগুলো বনের পরিবেশের সাথে মানিয়ে নিতে পারে না; বা সুস্থ নয়, এমন প্রাণীদের এখানে রেখেই পরিচর্যা করা হচ্ছে বলে জানান বাংলাদেশ বন্য প্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সীতেশ রঞ্জন দেব। বর্তমানে বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনে অর্ধশতাধিক বিপন্ন ও বিরল প্রজাতির প্রাণী রয়েছে বলে জানান ফাউন্ডেশনের পরিচালক স্বপন দেব সজল।

তিনি জানান, এখানে উল্লেখযোগ্য প্রাণীদের মধ্যে মেছো বিড়াল (যা মেছো বাঘ নামে পরিচিতি), ভল্লুক, উল্লুক, চশমা হনুমান, গাধা, লজ্জাবতী বানর, চিত্রা হরিণ, মায়া হরিণ, ইমু পাখি, গন্ধগোকুল, অজগর, শঙ্খিনীসহ বিভিন্ন প্রজাতির সাপ, সাধারণ প্রজাতির বানর, ধূসর বানর, সোনালি বিড়াল, বনবিড়াল, হিমালয়ান পাম সিভিট, হনুমান, বনরুই, গুইসাপ, বন্য শূকর, উড়ন্ত কাঠবিড়ালি, বোম্বেটিনকেট গ্লেইক, ধনেশ পাখি, কাছিম, পেঁচা, বাজ পাখি, শকুন, ময়নাসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি রয়েছে।

বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের পরিচালক স্বপন দেব সজল বলেন, গত বছর (২০২৩) বিরল প্রজাতির ১টি বনবিড়াল-কে আমরা রাস্তা থেকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করি। অন্যান্য প্রজাতির ৩৭টি প্রাণীকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি। তিনি বলেন সাধারণ মানুষ যখন লোকালয়ে আসা বন্য প্রাণীদের খবর আমাদের জানান, তখন আমরা সেগুলো উদ্ধার করে বন বিভাগের কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করি।

এবিষয়ে জানতে চাইলে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের ওয়াইল্ডলাইফ রেঞ্জার মো. শহিদুল ইসলাম জানান, বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশন থেকে অক্ষত অবস্থায় যেসব বন্যপ্রাণী আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল, আমরা সেসব জীবিত বন্য প্রাণীকে লাউয়াছড়া বনে অবমুক্ত করেছি এবং মৃত প্রাণীকে মাটি চাপা দেয়া হয়েছে।

 

একুশে সংবাদ/আ.জ.প্র/জাহা

Link copied!