AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ২৯ ভাদ্র ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

গোপন সম্পর্কের অভিযোগে, মিডিয়া মুঘল জিমি লাইয়ের বিচার শুরু


Ekushey Sangbad
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
০১:৫৫ পিএম, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৩
গোপন সম্পর্কের অভিযোগে, মিডিয়া মুঘল জিমি লাইয়ের বিচার শুরু

দীর্ঘদিন পর ৭৬ বছর বয়সী জিমি লাইয়ের বিচার শুরু হয়েছে সোমবার (১৮ ডিসেম্বর)। এ মামলায় দোষী সাব্যস্ত করা হয় তাহলে যাবজ্জীবন জেল হতে পারে তার। বিদেশি শক্তিগুলোর সঙ্গে গোপন সম্পর্কের অভিযোগে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে আটক করা হয় হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থি মিডিয়া মুঘল জিমি লাই’কে।

জাতীয় নিরাপত্তা আইনের অধীনে গ্রেপ্তার করা হয় জিমি লাই’কে। ভিন্ন মতাবলম্বীদের দমন করতে এই আইনটি ব্যবহার করে আসছে চীন। এই আইনে জিমি লাই’কে আটক করার পর আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ক্ষোভ দেখা দেয়। এই মামলাকে হংকংয়ের বিচার বিভাগের স্বাধীনতার পরীক্ষা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

গণতন্ত্রপন্থি ব্যাপক বিক্ষোভ সামাল দিতে ২০২০ সালেই জাতীয় নিরাপত্তা আইন চালু করা হয়। বলা হয়, অসন্তোষ ঠাণ্ডা করতে এই আইন প্রয়োজন ছিল তাদের। এই আইনে দেখানো হয় যে, জিমি লাই একজন বিশ্বাসঘাতক।

কারণ তিনি চীনের জাতীয় নিরাপত্তাকে খর্ব করেছেন। কিন্তু সমালোচকরা বলছেন, হংকংকে শক্তিশালীভাবে আঁকড়ে ধরার ক্ষেত্রে জিমি লাইয়ের মামলাটি আরেকটি উদাহরণ।

জিমি লাইয়ের আইনজীবী দল বলেছেন, সুষ্ঠু শুনানির অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে জিমি লাইকে। তিনি নিজের পছন্দমতো আইনজীবী নিতে চেয়েছেন। সে অনুমতি তাকে দেয়া হয়নি। বৃটিশ একজন আইনজীবী নিয়োগ করতে চেয়েছিলেন তিনি। হংকংয়ের নেতা জন লি তিনজন বিচারককে বাছাই করেছেন। তারাই জিমি লাইয়ের বিচার করছেন।

উল্লেখ্য, জিমি লাই একজন বৃটিশ নাগরিক। রোববার তার মুক্তি দাবি করেছেন বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। এর আগে এ মাসের শুরুর দিকে জিমি লাইয়ের ছেলের সঙ্গে মিটিং করেন ডেভিড ক্যামেরন। তিনি বলেন, জিমি লাই একজন মুখরা সাংবাদিক এবং প্রকাশক। মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং সমাবেশের শান্তিপূর্ণ চর্চা বন্ধ করার উদ্দেশে জিমি লাইকে টার্গেট করা হয়েছে।

জিমি লাই চীনের কমিউনিস্ট পার্টির তীব্র সমালোচক। হংকংয়ের জাতীয় নিরাপত্তা আইনের অধীনে এ পর্যন্ত যত মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে হাইপ্রোফাইল ব্যক্তিদের অন্যতম তিনি। আটক করার আগে তিনি গণতন্ত্রপন্থি প্রতিবাদ বিক্ষোভের সামনের সারিতে ছিলেন। এর মধ্যে ২০১৪ সালে আমব্রেলা মুভমেন্ট এবং ২০১৯ সালের প্রত্যাবর্তন বিষয়ক বিলের বিরোধিতা করা অন্যতম।

বর্তমান অকার্যকর অ্যাপল ডেইলি সহ হংকংয়ের সুপরিচিত বেশ কিছু মিডিয়া আউটলেটের তিনি প্রতিষ্ঠাতা এবং তা পরিচালনা করতেন। তার টুইট, তার নেয়া সাক্ষাৎকার এবং অ্যাপল ডেইলিতে প্রকাশিত বিভিন্ন আর্টিকেলের ওপর ভিত্তি করে ঔপনিবেশিক আইনের অধীনে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগও আনা হয়েছে।

১৯৯৫ সালে তিনি অ্যাপল ডেইলি প্রতিষ্ঠা করেন। এটাকেই মূল হিসেবে ধরে তার বিরুদ্ধে বেশ কিছু গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে। এই পত্রিকাটি চীনা ভাষার ট্যাবলয়েড। এতে বেইজিংয়ের কড়া সমালোচনা করা হতো।

একপর্যায়ে চীন এবং চীনের স্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা দেয়ার আহ্বান জানানো হয় এই পত্রিকার মাধ্যমে। ২০২১ সালের জুনে জোর করে পত্রিকাটি বন্ধ করে দেয়া হয়। ২৩ লাখ ডলারের সম্পদ জব্দ করে পুলিশ।

অ্যাপল ডেইলির অফিস ঘেরাও করে অভিযান চালায়। গ্রেপ্তার করে শীর্ষ সম্পাদকদের। তাদের বিরুদ্ধে জাতীয় নিরাপত্তায় হুমকি এমন শক্তিগুলোকে সহযোগিতা করার অভিযোগ আনা হয়। অ্যাপল ডেইলির অন্য ৬ জন নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয় জিমি লাইকে।

আজ সোমবার বিচার শুরুর আগে আদালত চত্বরে কড়া পুলিশি প্রহরা বসানো হয়েছে। পথচারীদের থামিয়ে তল্লাশি করা হচ্ছে। আদালতের বাইরে অবস্থান নিয়েছেন ৭৭ বছর বয়সী সুপরিচিত গণতন্ত্রপন্থি কর্মী আলেকজান্দার ওং। তিনি গণতন্ত্রের পক্ষে স্লোগান দিচ্ছিলেন। তাকে ঘিরে রাখে পুলিশ।

ওদিকে ২০২০ সালের আগস্টে গ্রেপ্তার করার পর জিমি লাইকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা সম্বলিত একটি কারাগারে নিঃসঙ্গ অবস্থায় আটকে রাখা হয়। বিচার বিলম্বিত করা হয় এক বছরের মতো। সোমবার তা শুরু হয়ে প্রায় ৮০ দিন চলবে বলে মনে করা হচ্ছে।

এরই মধ্যে তাকে মুক্তি দেয়ার দাবি জোরালো হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেছেন, বেইজিং ও হংকংয়ের অ্যাকশন হংকংয়ের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর গণতান্ত্রিক যাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করছে।

আন্তর্জাতিক ব্যবসা ও বাণিজ্যের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে হংকংয়ের যে সুনাম, তা ক্ষতিগ্রস্ত করা হচ্ছে। জিমি লাইয়ের বিচারকে প্রহসন বলে এর নিন্দা জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। এ সংগঠনটির চীনা পরিচালক মায়া ওং বিভিন্ন সরকারকে অনুরোধ করেছেন জিমি লাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের জন্য চীনকে চাপ দিতে।

তিনি বলেছেন, এই বিচারের মাধ্যমে হংকংয়ের মিডিয়ার স্বাধীনতা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তবে একে আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ দাবি করে নিন্দা জানিয়েছে চীন।


একুশে সংবাদ/এএইচবি/জাহা 
 

Link copied!