‘ফার্মগেট’ কেলেঙ্কারির জেরে সম্ভাব্য অভিশংসনের হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা। ২০২০ সালে তার খামার থেকে চার মিলিয়ন ডলার চুরি ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে রামাফোসার বিরুদ্ধে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, রামাফোসা তার ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন এবং সম্ভবত দুর্নীতিবিরোধী আইনও ভঙ্গ করেছেন। একটি স্বাধীন সংসদীয় তদন্ত প্যানেলের তিন খণ্ডের প্রতিবেদনে এমনটিই বলা হয়েছে।
তবে রামাফোসা ভুল কিছু করার কথা অস্বীকার করেছেন এবং বলেছেন, মহিষ বিক্রি থেকে অর্থ এসেছে।
প্যানেলের প্রতিবেদনটি এরই মধ্যে পার্লামেন্টে হস্তান্তর করা হয়েছে। এটি যাচাই করে দেখার পর আগামী সপ্তাহে অভিশংসন প্রক্রিয়া শুরু করা হবে কিনা সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
২০২৪ সালে সাধারণ নির্বাচন হবে দক্ষিণ আফ্রিকায়। সেই নির্বাচনে রামাফোসা তার দল আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস (এএনসি) থেকে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রার্থী হতে পারবেন কি না, সে বিষয়ে আগামী মাসে অনুষ্ঠেয় কনফারেন্সে সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা রয়েছে।
এই সময়ে তার বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রক্রিয়া শুরু হলে তা বিশেষভাবে রামাফোসার জন্য ক্ষতি ডেকে আনবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
বৃহস্পতিবার দিনশেষে এএনসির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যদের বৈঠক করার কথা রয়েছে। সেখানে প্যানেলের প্রতিবেদনটি নিয়ে আলোচনা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসার বিরুদ্ধে ফার্মগেট কেলেঙ্কারির সূত্রপাত হয় গত জুন মাসে।
ওই সময় আর্থার ফ্রেজার নামের এক সাবেক শীর্ষ গুপ্তচর রামাফোসার বিরুদ্ধে চুরি ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ করেছিলেন পুলিশের কাছে। তিনি বলেছিলেন, রামাফোসা ২০২০ সালে দেশের উত্তর-পূর্বের ‘ফালা ফালা ফার্ম’ থেকে ৪০ লাখ ডলার চুরির বিষয়টি ধামাচাপা দিয়েছেন।
আর্থার ফ্রেজার দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমার ঘনিষ্ঠ মিত্র। তিনি অভিযোগ করে বলেন, রামাফোসা অর্থ পাচার ও দুর্নীতির মাধ্যমে ওই অর্থ লাভ করে থাকতে পারেন। শুধু তাই নয়, রামাফোসা চোরদের অপহরণ করাসহ ঘুষও দিয়েছেন বলে তিনি অভিযোগ করেন।
এত বড় অঙ্কের অর্থ বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইনের লঙ্ঘন হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
রামাফোসা অবশ্য চুরির বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তবে চুরি যাওয়া অর্থের পরিমাণ কম বলে দাবি করেছেন তিনি। একইসঙ্গে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টার কথাও তিনি অস্বীকার করেছেন।
রামাফোসা বলেন, মহিষ বিক্রির ৫ লাখ ৮০ হাজার ডলার মতো অর্থ খামারবাড়ির সোফার কুশনের নিচ থেকে চুরি হয়ে গেছে।
“আমি চোরদের খুঁজে বেড়াইনি, যেমনটি অভিযোগ করা হয়েছে। আমি এমনকী এমন কিছু করার নির্দেশনাও দেইনি”, লিখিতভাবে জানান তিনি।
একুশে সংবাদ/যু/পলাশ
আপনার মতামত লিখুন :