বর্তমানে বলিউডের আলোচিত সিনেমা “জওয়ান”। এটলি কুমার পরিচালিত এই সিনেমার মাধ্যমে প্রথমবারের মত প্যান ইন্ডিয়ান মুভিতে কাজ করেছেন বলিউড বাদশা শাহরুখ খান আর সঙ্গে আছেন তেলেগু লেডি সুপারস্টার নয়নতারা। মুক্তির দিনই সিনেমাটি পাইরেসির শিকার হয়েছে।
“জওয়ান” সিনেমার হল প্রিন্টের একটি ভার্সন বিভিন্ন মুভি-সিরিজের ওয়েবসাইটে ছড়িয়ে পড়েছে।
সিনেমাটি মুক্তির প্রথম দিনেই ভারতে প্রায় ৬ লক্ষ টিকিট বিক্রি হয়ে গিয়েছে। জল্পনা ছিল, ওপেনিং ডে-তেই হেসেখেলে ৫০ কোটির ক্লাবে ঢুকবে ‘জওয়ান’। এবার তাতেই সিলমোহর। দেশ-বিদেশ মিলিয়ে আন্তর্জাতিক বক্সঅফিসেও অগ্রীম বুকিংয়ের ক্ষেত্রে হিন্দি সিনেমা হিসেবে রেকর্ড গড়েছে এই ছবি। রিলিজের আগেই ৫০ কোটির ব্যবসা। যা কিনা বিশ্বের বক্সঅফিসে বলিউডের গ্রাফকে একলাফে উর্ধ্বমুখী করে দিয়েছে।
রিলিজের আগের দিন বুধবার যশরাজ স্টুডিওতে‘জওয়ান’-এর স্পেশ্যাল স্ক্রিনিংয়েও চাঁদের হাট। বাদশার ছবি দেখতে হাজির হয়েছেন বলিউড তারকারা। শাহরুখ খান, সানায়া মালহোত্রা, সুনীল গ্রোভার, ভূষণ কুমারের পাশাপাশি সিনেমার অন্যান্য তারকারাও হাজির হয়েছেন স্ক্রিনিংয়ে।
‘জওয়ান’-এর মূল কাহিনি দু’টি আলাদা সময়ের প্রেক্ষাপটকে ঘিরে। বিক্রম রাঠৌর এবং আজাদের জীবনের কাহিনি। তাদের পাওয়া-না পাওয়ার, হারজিতের গল্পকে কেন্দ্র করে এগিয়ে চলে ‘জওয়ান’। ছবি শুরু হতে না হতেই অ্যাটলি যেন তাঁর নিজস্বতার প্রমাণ দিলেন। প্রতিটি ফ্রেমে তাঁর হাতের ছোঁয়া রয়েছে, ফুটে উঠেছে দক্ষিণী ছাপও। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে অনিরুদ্ধ রবিচন্দ্রের অসাধারণ আবহসঙ্গীত বা বিজিএম। ‘জওয়ান’-এর সূচনাপর্ব থেকেই ক্যামেরার কাজ, ধীর গতির অ্যাকশন দৃশ্য, আলো-আঁধারির খেলা, বিজিএম— সব যেন এক নিমেষে দর্শককে মন্ত্রমুগ্ধ করে ফেলার জন্য যথেষ্ট। উচ্চবিত্ত এবং নিম্নবিত্ত সম্প্রদায়ের পার্থক্য থেকে শুরু করে নানা ধরনের সামাজিক বার্তাও ফুটে উঠেছে ‘জওয়ান’-এ।
সিদ্ধার্থ আনন্দের পরিচালনায় ‘পাঠান’-এর সঙ্গে যদি অ্যাকশন সিকোয়েন্সের তুলনা টানা যায়, তবে ‘জওয়ান’ সে ক্ষেত্রে হাজার ধাপ এগিয়ে। ছবিতে বিক্রম এবং আজাদের চরিত্রে অভিনয় করেছেন শাহরুখ। চিত্রনাট্যের প্রয়োজনে কখনও কেশহীন অবস্থায়, কখনও বয়স্কের সাজে পর্দায় ধরা দিয়েছেন অভিনেতা। প্রতিটি ‘লুক’-এই শাহরুখ অনবদ্য। কখনও শাহরুখের সঙ্গে জুটি বেঁধেছেন নয়নতারা, কখনও বা দীপিকা। কিন্তু অ্যাকশন ঘরানার ছবিতে চরিত্রদের এই প্রেমালাপ ‘জওয়ান’-এর ছন্দে তাল কাটেনি। দক্ষিণী অভিনেত্রী হিসাবে বলিউডে প্রথম কাজ করলেন নয়নতারা। অভিনয়ের ক্ষেত্রে ভাষাগত পার্থক্যের জন্য কোনও রকম জড়তা লক্ষ করা যায়নি তাঁর মধ্যে। বরং তাঁর সাবলীল অভিনয় সত্যিই প্রশংসনীয়।
খলনায়কের চরিত্রে যথাযথ বিজয় সেতুপতি। দক্ষিণী অভিনেতা হিসাবে বলিউডে প্রথম কাজ হলেও এর আগে হিন্দি ভাষায় অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে বিজয়কে। চলতি বছরে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পায় ওয়েব সিরিজ় ‘ফরজ়ি’। এই সিরিজ়ে অভিনয় করেছিলেন বিজয়। অভিনেতা হিসাবে তিনি যে প্রথম সারির, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। কিন্তু হিন্দি ভাষায় তিনি তেমন সড়গড় ছিলেন না বলে তা ধরা পড়েছিল ক্যামেরায়। ‘ফরজ়ি’তে বিজয়ের মধ্যে যে জড়তা দেখা গিয়েছিল, তা ‘জওয়ান’-এ কোথায় যেন উবে গিয়েছে। এই ছবিতে খলনায়কের চরিত্রে বিজয়ের মতো অভিনয় করেছেন বিজয়। তবে ছবির প্রথমার্ধের তুলনায় দ্বিতীয়ার্ধে যেন নিজেকে মেলে ধরলেন বিজয়।
একুশে সংবাদ/ন.ট.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :