গত ১২ সেপ্টেম্বর থেকে খুলেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। মহামারি করোনার কারণে দীর্ঘ দেড় বছরের বেশি সময় বন্ধ থাকার পর সীমিত পরিসরে খুলেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। প্রতিদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসবে ২০২১ ও ২০২২ সালের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী এবং পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা।
আর প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ, ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম ও নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে একদিন যাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। যদিও আগামী রোববার (২৬ সেপ্টেম্বর) থেকে প্রাথমিকের তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির সপ্তাহে দুদিন করে ক্লাস নিতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই) থেকে নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। তবে সেই সিদ্ধান্তও পরিবর্তন হতে যাচ্ছে।
আগামী অক্টোবর থেকে দেশের সব স্কুল-কলেজে স্বাভাবিক ক্লাস কার্যক্রম শুরুর ঘোষণা আসতে পারে। এ জন্য আগামী বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুই মন্ত্রণালয়ের (শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের) বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানে বিষয়টি চূড়ান্ত হলে জাতীয় পরামর্শক কমিটির মতামত নিয়ে প্রাথমিক-মাধ্যমিক স্তরের সব শ্রেণির ক্লাস বাড়ানো হবে।
এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (ডিপিই) মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, স্বাভাবিক ক্লাস শুরুর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। আগামী সপ্তাহ থেকে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির সপ্তাহে একদিনের পরিবর্তে দুদিন করে ক্লাস নিতে বলা হয়েছে। আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। জাতীয় পরামর্শক কমিটির মতামত নিয়ে স্বাভাবিক ক্লাস কার্যক্রম শুরু করা হতে পারে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, আমরা চাই দ্রুত সময়ের মধ্যে স্কুল-কলেজগুলোতে ক্লাস কার্যক্রম স্বাভাবিক হোক। এক্ষেত্রে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও জাতীয় কমিটির মতামত নেওয়া হয়ে থাকে।
ধাপে ধাপে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান স্বাভাবিক করতে পরামর্শক কমিটির মতামত নিয়ে তা বাস্তবায়ন করা হবে বলেও জানান তিনি।
এ ছাড়া আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর সভার বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যমকে জানান, শিক্ষাক্রম উন্নয়ন, পরিমার্জন ও বাস্তবায়নসহ চলমান শিক্ষা কার্যক্রম স্বাভাবিক পর্যায়ে কীভাবে শুরু করা যায়, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বৈঠক ডাকা হয়েছে।
তিনি বলেন, সেখানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সভাপত্বিতে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এবং কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের দুই সচিব, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন ও সেই মন্ত্রণালয়ের সচিবের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
তিনি বলেন, ওই সভায় নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান কার্যক্রম কীভাবে নিয়মিত করা সম্ভব, সেসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। গৃহীত সিদ্ধান্তে জাতীয় পরামর্শক কমিটি সম্মতি দিলে তা বাস্তবায়ন করা হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব গোলাম মো. হাসিবুল আলম বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সব শ্রেণির ক্লাস নিয়মিত করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। যেহেতু করোনা সংক্রমণ পাঁচ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে, ফলে সব ধরনের পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৮ মার্চ দেশে করোনা সংক্রমণ দেখা দেয়ার পর ওই বছরের ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয় দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান এই ছুটি বাড়ানো হয় দফায় দফায়। এর মধ্যে কয়েকবার চেষ্টা করেও আর খোলা সম্ভব হয়নি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। সম্প্রতি দ্রুত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকেই সংশ্লিষ্টরা প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। দেশের সব স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়া হয় গত ১২ সেপ্টেম্বর।
একুশে সংবাদ/জা/তাশা
আপনার মতামত লিখুন :