২০২৩ সালের প্রথম ৯ মাস শেষে শক্তিশালী ব্যালেন্স শীট প্রবৃদ্ধির ফলে ব্র্যাক ব্যাংকের সমন্বিত (Consolidated) কর-পরবর্তী নিট মুনাফা (NPAT) ৫৩.১% বৃদ্ধি পেয়েছে। জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর ২০২৩-এ ব্যাংকটির অঙ্গপ্রতিষ্ঠানসহ সমন্বিত কর-পরবর্তী নিট মুনাফা দাঁড়িয়েছে ৫৮১.৪
কোটি টাকায়। ২০২২ সালের একই সময়ে এটির পরিমাণ ছিল ৩৭৯.৮ কোটি টাকা।
২০২৩ সালের প্রথম ৯ মাসে ব্র্যাক ব্যাংক এককভাবে ৫০৩.৪৭ কোটি টাকা কর-পরবর্তী নিট মুনাফা অর্জন করেছে,যার পরিমাণ গত বছরের একই সময়ে ছিল ৩৯২.৪ কোটি টাকা। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর শেষে ২০২২ সালের ডিসেম্বরের তুলনায় ব্যাংকটির একক (স্ট্যান্ডঅ্যালোন) ঋণ পোর্টফোলিওতে ১৮.৫% এবং গ্রাহক আমানতে ২০.৩% প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে।
৭ নভেম্বর ২০২৩ ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ব্র্যাক ব্যাংক ২০২৩ সালের প্রথম ৯ মাসের আার্থিক অর্জন এবং কার্যক্রমসমূহ উপস্থাপন করে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচারকৃত এই অনলাইন ইভেন্টে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিনিয়োগ বিশ্লেষক, পোর্টফোলিও ম্যানেজার এবং পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে ব্র্যাক ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও সেলিম রেজা ফরহাদ হোসেন এবং ব্যাংকের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ ব্যাংকের আর্থিক ফলাফল, উল্লেখযোগ্য অর্জন, অগ্রগামী অবস্থান ও ভবিষ্যতের ব্যবসায়িক কৌশল তুলে ধরেন এবং বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকের উল্লেখযোগ্য অর্জনসমূহ:
সমন্বিত শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) ২০২২ সালের একই সময়ের ২.৩৫ টাকার তুলনায় ২০২৩ সালের প্রথম ৯ মাসে ৩.২৬ টাকায় উন্নীত হয়েছে;
৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩- এ ব্যাংকের সমন্বিত নিট সম্পদ মূল্য (এনএভি) শেয়ার প্রতি ৪০.২২ টাকায় উন্নীত হয়েছে, যা ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ৩৮.০১ টাকা ছিল;
২০২৩ সালের প্রথম ৯ মাসে ব্র্যাক ব্যাংকের একক (স্ট্যান্ডঅ্যালোন) ঋণ পোর্টফোলিও এবং গ্রাহক আমানত ২০২২ সালের ডিসেম্বরের তুলনায় যথাক্রমে ১৮.৫% ও ২০.৩% বৃদ্ধি পেয়েছে, যা মূলত ব্যাংকটির দীর্ঘমেয়াদি প্রবৃদ্ধির কৌশল এবং গ্রাহকের আস্থার পরিচায়ক;
ব্যাংকটি খেলাপি ঋণের হার (NPL) উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়েছে, যা ২০২২ সালের ডিসেম্বরে থাকা ৩.৭২% থেকে কমে ২০২৩ সালের প্রথম ৯ মাসে ৩.৪০% হয়েছে। এটি মূলত কাস্টমার অ্যাকুইজেশন, প্রোডাক্ট ইনোভেশন ও অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের ওপর জোরদার নজরদারি নির্দেশ করে;
ভবিষ্যতের যেকোনো ধাক্কা সামাল দিতে ব্যাংকটি ১২২% খেলাপি ঋণ (NPL) কভারেজ বজায় রেখেছে;
ব্যাংকটির সমন্বিত রিটার্ন অন ইক্যুইটি (RoE) এবং রিটার্ন অন অ্যাসেটস (RoA) যথাক্রমে ১১.১৩% ও ০.৯৮% - এ দাঁড়িয়েছে;
ঋণ বিতরণে প্রবৃদ্ধির ফলে অধিক ইন্টারেস্ট আয়, দক্ষ তহবিল ব্যবস্থাপনা, অধিক নন-ফান্ডেড আয়ের কারণে ব্যাংকটির মোট সমন্বিত রাজস্ব আয় ২০২২ সালের প্রথম ৯ মাসের তুলনায় ২৫% বৃদ্ধি পেয়েছে;
কর্মীদের বেতন, অন্যান্য পরিচালন ব্যয়ের ওপর মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব এবং প্রবৃদ্ধি কৌশলের অংশ হিসেবে মানবসম্পদ, প্রযুক্তি ও অবকাঠামোতে বিনিয়োগের ফলে ২০২৩ সালে ব্যাংকটির সমন্বিত পরিচালন ব্যয় ২০২২ সালের প্রথম ৯ মাসের তুলনায় ১৮.৬৫% বৃদ্ধি পেয়েছে;
গ্রাহকদের কাছ থেকে অধিক পরিমাণে আমানত সংগ্রহের ফলে জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর ২০২৩ সময়ের জন্য সমন্বিত শেয়ার প্রতি নেট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো (NOCFPS) ৪.৪৬ টাকা থেকে ২৮.০২ টাকায় উন্নীত হয়েছে। ব্যাংকের আর্থিক ফলাফল সম্পর্কে ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও সেলিম রেজা ফরহাদ হোসেন বলেন, “ব্র্যাক ব্যাংকের ২০২৩ সালের প্রথম ৯ মাসের আর্থিক ফলাফল মূলত কঠিন সময়ে ব্যালেন্স শীট প্রবৃদ্ধি ও ক্রমবর্ধমান গ্রাহকদের আর্থিক সেবা প্রদানে আমাদের সক্ষমতা এবং ব্যাংকিং খাতের গড়পড়তা ব্যালেন্স শীট অবস্থার চেয়ে অধিকতর প্রসারিত ব্যালেন্স শীট অবস্থায় উন্নীত করার বিষয়ে আমাদের ব্যাংকের সক্ষমতা তুলে ধরে। ব্র্যাক ব্যাংক আজ বাংলাদেশ ব্যাংকিং খতে একটি রুল মডেল এবং এই লক্ষণীয় আর্থিক ফলাফল এসএমই, কর্পোরেট এবং রিটেইল গ্রাহক বেসের ওপর ভর করে টেকসই ব্যবসার সোপন সৃষ্টি করেছে, এবং তাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে ব্যাংকের সুশাসন, স্বচ্ছতা এবং নৈতিকতার চর্চা।
তিনি আরও বলেন, “আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি পুরো ব্র্যাক ব্যাংক টিমের প্রতি- তাদের নিরলস প্রচেষ্টার জন্য, আমাদের পরিচালনা পর্ষদের প্রতি- তাদের ধারাবাহিক দিকনির্দেশনার জন্য এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি- এই চ্যালেঞ্জিং সময়ে তাদের সময়োপযোগী রেগুলেটরি দিকনির্দেশনার জন্য। আমরা আমাদের গ্রাহক এবং স্টেকহোল্ডারদের কাছ থেকে যে অবিচল আস্থা এবং সমর্থন পাই, সেটিই আমাদের ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধির মূল হাতিয়ার।”
একুশে সংবাদ/এস কে
আপনার মতামত লিখুন :