মাদারীপুরের উপজেলার বাজারগুলোতে শীতকালীন সবজি আসলেও দাম এখনও কমছে না। ফুলকপি, বাঁধাকপি, বেগুন, টমেটো, মুলা, শিমসহ নানা শীতকালীন সবজি বাজারে উঠতে শুরু করেছে। তবে পেঁয়াজের দাম ক্রেতাদের জন্য দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে ৭০ টাকার পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়।
বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, মজুত কমে যাওয়ায় এ দাম বেড়েছে। অন্য সবজিও এখনও ৭০ টাকার বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। শীতকালীন সবজি বাজারে ওঠলেও দাম চড়া। ব্যবসায়ীরা আশা করছেন, কিছুদিনের মধ্যে দাম কমতে পারে।
বুধবার (১২ নভেম্বর) সকালে শিবচর পৌর বাজারে গিয়ে দেখা যায়, বর্তমানে বেশির ভাগ সবজি প্রতি কেজি ৬০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কিছু সবজির দাম আরও বেশি। কাঁচামরিচ গত সপ্তাহে ১০০-১১০ টাকা কেজি বিক্রি হলেও এখন ১২০-১৬০ টাকা, শিম ৮০-৯০ টাকা, ফুলকপি ৭০-৮০ টাকা, বাঁধাকপি ৬০ টাকা, বেগুন ৭০-৮০ টাকা, করলা ৭০-৭৫ টাকা, বরবটি ৯০-১০০ টাকা, পাকা টমেটো ১০০-১১০ টাকা, পটোল ৪০-৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০-৭০ টাকা, মুলা ৩০-৩৫ টাকা, চিচিঙ্গা ২৫-৩০ টাকা, কাঁকরোল ১২০ টাকা, ধুন্দল ৭০ টাকা, শসা ৪৫-৫০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪৫-৬০ টাকা, আলু ২০-২৫ টাকা এবং গাজর ১৪০-১৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। লাউ ৪০-৮০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে।
সপ্তাহের ব্যবধানে সবজির দাম প্রতি কেজিতে ৩০-৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৩০ টাকায়, কিছু বাজারে ১১০ টাকাতেও মিলছে।
ক্রেতারা অভিযোগ করেছেন, পেঁয়াজের বাজারে কারসাজি চলছে। সরবরাহে তেমন ঘাটতি না থাকলেও কিছু চক্র বাজারে সংকট দেখিয়ে দামের অস্থিরতা তৈরি করছে। তারা সরকারের কাছে দ্রুত বাজার তদারকি জোর দাবি জানিয়েছেন।
পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, গত সপ্তাহে বৃষ্টি ও সরবরাহ কম থাকায় সবজির দাম বেড়েছে। এখন সবজি বাজারে এসেছে, দাম কিছুদিনের মধ্যে কমবে। তবে পাইকারি বাজার থেকে খুচরা বাজারে বিক্রেতারা কিছুটা বেশি দামে বিক্রি করছেন।
এদিকে, মুরগি ও মাছের দামও বেশ চড়া। ব্রয়লার মুরগি ১৬০-১৭০ টাকা, সোনালি মুরগি ২৯০-৩০০ টাকা কেজি, ফার্মের মুরগির ডিম প্রতি ডজন ১৩৫-১৪০ টাকা। গরুর মাংস ৭০০ টাকা এবং খাসির মাংস ১১০০ টাকা কেজি। মাছের বাজারে রুই ৪২০-৪৩০ টাকা, টেংরা ৫৫০-৬০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৩০-১৬০ টাকা, পাঙাশ ১৮০-২২০ টাকা, চিংড়ি ৮০০-১১০০ টাকা, পাবদা ৩০০-৩৫০ টাকা, বাইলা ১১০০ টাকা, ইলিশ ৭০০-১১০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
শিবচর পৌর বাজারের ক্রেতা ইদ্রিস ফকির বলেন, “আগে মাছ-মাংস বেশি হলে সবজি খেতাম। এখন সবজিও বিলাসপণ্য হয়ে গেছে। ৭০ থেকে ১০০ টাকার নিচে কোনো সবজিই নেই। শুধু পেঁপে ৩০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা।”
দিনমজুর জলিল হাওলাদার বলেন, “এক সময় শীতের শুরুতে তরতাজা সবজি সস্তায় পাওয়া যেত। এখন সেই দিন নেই। বছরের পর বছর দাম বেড়েই চলেছে, এবার আরও চড়া।”
কাঁচাবাজারের ক্রেতারা জানিয়েছেন, কিছুদিন আগেও সবজির দাম কমে সাধারণ মানুষ স্বস্তি পেত। এখন পেঁয়াজের দাম বেড়ে সেই স্বস্তি ম্লান হয়ে গেছে।
শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এইচ.এম. ইবনে মিজান বলেন, “বর্তমানে সবজির সরবরাহে তেমন ঘাটতি নেই। তবে বাজারে কেউ সুযোগ নিচ্ছে কি না, তা নজরদারিতে রয়েছে। অনিয়ম ধরা পড়লে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
একুশে সংবাদ/এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

