গত তিন দিনের টানা ভারি বর্ষণে শেরপুর জেলার বিভিন্ন এলাকার ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) রাত থেকে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ায় আমন ধান নুয়ে পড়েছে এবং নিচু এলাকার জমি প্লাবিত হয়েছে।
এতে জেলার হাজারো কৃষক চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। বিশেষ করে শেরপুর সদরের চরাঞ্চলের নিচু এলাকা এখন বৃষ্টির পানিতে নিমজ্জিত।
কৃষকরা জানান, দীর্ঘ সময় ধরে টানা বৃষ্টির কারণে পাকা ও অর্ধপাকা আমন ধান, সবজি ও অন্যান্য ফসল পানির নিচে চলে গেছে। অনেক জায়গায় ধানের শীষ পচে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। মাঠের ফসল ঘরে তোলার আগেই এমন বর্ষণে তারা হতাশ হয়ে পড়েছেন।
লতারিয়া গ্রামের কৃষক ওয়াহেদ আলী বলেন, “ধান কাটার উপযুক্ত সময় ছিল। কিন্তু বৃষ্টির কারণে মাঠে নামতে পারছি না। অনেক জমির ধান একেবারে পানির নিচে ডুবে গেছে। এবার বড় ক্ষতির মুখে পড়লাম।”
কামারেরচর গ্রামের কৃষক আবদুল জলিল জানান, “আমরা সারা বছর পরিশ্রম করে ধান ফলাই, কিন্তু এই বৃষ্টিতে সব নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সরকার যদি সহায়তা না করে, তাহলে আমরা বড় বিপদে পড়ব।”
অন্যদিকে, শেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “ভারি বর্ষণে এখন পর্যন্ত জেলার কয়েক হাজার হেক্টর জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ চলছে। মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বেশ কিছু এলাকায় পাকা ও আধাপাকা ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহায়তার উদ্যোগ নেওয়া হবে।”
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামী এক-দুই দিন বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে। ফলে জলাবদ্ধতা আরও কিছুটা বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এদিকে, বৃষ্টির পানি নামার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় অনেক এলাকায় গ্রামীণ সড়ক ও খাল-বিলেও পানি জমে আছে। এতে চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয়দের।
স্থানীয় কৃষক সমাজের আশা— দ্রুত আবহাওয়া অনুকূলে ফিরবে এবং সরকার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহায়তার ব্যবস্থা নেবে।
একুশে সংবাদ/এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

