“যারা বিএনপি ও আওয়ামী লীগকে এক করতে চায়, তারাই এই দেশের প্রকৃত ষড়যন্ত্রকারী”— এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও কেন্দ্রীয় নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম।
গত শুক্রবার নওগাঁর মান্দা উপজেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “বিএনপি ক্ষমতার জন্য নয়, গণতন্ত্র, ভোটাধিকার ও মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য বিগত ১৭ বছর ধরে আন্দোলন করছে। শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনের রেশ এখনো রয়ে গেছে, প্রশাসনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বসে থাকা তার অনুগতরা দেশ পরিচালনা করছে।”
আব্দুস সালাম আরও বলেন, “বর্তমান সরকার চায় না দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হোক। তারা নির্বাচনকালীন অরাজকতা সৃষ্টি করে গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করছে। তারা জানে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিএনপি-ই ক্ষমতায় আসবে।”
তিনি অভিযোগ করেন, “স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ক্ষমতা হারালেও তার স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থাপনা এখনো সক্রিয়। তারা সীমান্ত রক্ষা, অর্থনীতি পুনরুদ্ধার বা বেকারত্বের সমাধান দিতে পারছে না। রাজধানীর ট্রাফিক ব্যবস্থাও সামলাতে ব্যর্থ— অথচ দেশ চালানোর স্বপ্ন দেখে!”
জিয়াউর রহমানের আদর্শ তুলে ধরে তিনি বলেন, “জিয়াউর রহমান জন্মেছিলেন আধিপত্যবাদ ও আওয়ামী আধিপত্যের বিরুদ্ধে সংগ্রামের জন্য। তাই বিএনপিকে হাজার চেষ্টা করেও দমন করা যায়নি, যাবেও না।”
তিনি আরও বলেন, “তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিগত ১৭ বছর ধরে বিএনপি রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। অনেক নেতাকর্মী গুম, খুন ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তারপরও বিএনপি ধৈর্য ধরে এগিয়ে চলেছে।”
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আন্দোলনের পাশাপাশি আমাদের নির্বাচনমুখী প্রস্তুতিও নিতে হবে। ধানের শীষের প্রতীক নিয়ে যিনি নির্বাচন করবেন, আমরা সবাই তার পক্ষেই থাকব। নওগাঁর প্রতিটি আসনে ধানের শীষকে বিজয়ী করতে হবে।”
সম্মেলনের শুরুতে নওগাঁ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু বক্কর সিদ্দিক নান্নু উদ্বোধনী বক্তব্য দেন। প্রধান বক্তা ছিলেন রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আমিরুল ইসলাম আলিম।
বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব বায়েজিদ হোসেন পলাশ। এছাড়া বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় নেতা এম এ মতিন, সহ-সমবায় সম্পাদক নজমুল হক, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ধলু, সাবেক এমপি ডা. ছালেক চৌধুরীসহ আরও অনেকে।
সম্মেলনের শুরুতেই কাউন্সিলরদের ঐক্যমতের ভিত্তিতে এম এ মতিনকে সভাপতি এবং শফিকুল ইসলাম বাবুল চৌধুরীকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়।
সাংগঠনিক সম্পাদক পদে সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হন শামসুল আলম বাদল ও অ্যাড. কুমার বিশ্বজিৎ সরকার।
১৪টি ইউনিয়নের মোট ৯৯৪ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ৯৩০ জন ভোট দেন।
একুশে সংবাদ/ন.প্র/এ.জে