দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সেতু টাঙ্গাইলের বঙ্গবন্ধু সেতু। এটি প্রমত্তা যমুনা নদীর ওপর নির্মিত। এ সেতুটি দিয়ে উত্তরবঙ্গ ও ময়মনসিংহ অঞ্চলের কমপক্ষে ২৩টি জেলার মানুষ প্রতিনিয়ত যাতায়াত করে থাকেন। এদিকে আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে সেতুটি উদ্বোধনের প্রায় ২৬ বছর পর টোল আদায়ে সর্বোচ্চ নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছে বঙ্গবন্ধু সেতু কর্তৃপক্ষ।
এনিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় অর্থাৎ একদিনে ৩ কোটি ৮০ লাখ ৬৩ হাজার ৪০০ টাকা আদায় করেছে সেতু কর্তৃপক্ষ এবং ৫৩ হাজার ৪০৭টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এ যাবতকালে এরচেয়ে বেশি উদ্বোধনের পর টোল আদায় হয়নি।
শনিবার (১৫ জুন) সকালে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব সাইট অফিস সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) রাত ১২টা থেকে শুক্রবার (১৪ জুন) রাত ১২টা পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় অর্থাৎ একদিনে ৩ কোটি ৮০ লাখ ৬৩ হাজার ৪০০ টাকা আদায় এবং এর বিপরীত ৫৩ হাজার ৪০৭টি যানবাহন পারাপার হয়েছে।
এরমধ্যে টাঙ্গাইলের বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব অংশের ঢাকা ও ময়মনসিংহের দিকে ৩৩ হাজার ২৫টি যানবাহন পারাপার হয়। এ থেকে টোল আদায় হয় ২ কোটি ৬৪ লাখ টাকা এবং সিরাজগঞ্জ সেতু পশ্চিম অংশে উত্তরবঙ্গের দিকে ২০ হাজার ৬৮৩ টি যানবাহন পারাপার হয়। এ থেকে টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৭৪ লাখ ২৩ হাজার ৪০০ টাকা।
এরমধ্যে সেতুর টাঙ্গাইলের পূর্ব ও সিরাজগঞ্জের পশ্চিম প্রান্তে মোটরসাইকেল পারাপারের সংখ্যা ১০ হাজার ১০৫টি, হালকা ছোট যানবাহনের সংখ্যা ১৯ হাজার ৯৭২টি, বাস পারাপারের সংখ্যা ১২ হাজার ৮৭১টি এবং ট্রাক পারাপার হয়েছে ১০ হাজার ৭৬০টি।
এরআগে শুক্রবার (১৪ জুন) গত ২৪ ঘণ্টায় বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে ৩ কোটি ২১ লাখ ৯৭ হাজার ৩০০ টাকা টোল আদায় করেছে এবং এর বিপরীত ৪০ হাজার ৯০৬ টি যানবাহন পারাপার হয়েছিল। তারমধ্যে কুরবানি পশু ও পণ্যবাহী পরিবহণ বেশি পারাপার হয়।
বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল জানান, এবারের ঈদ যাত্রায় গত ২৪ ঘণ্টায় অর্থাৎ একদিনে ৩ কোটি ৮০ লাখ ৬৩ হাজার ৪০০ টাকার টোল আদায় হয় এবং ৫৩ হাজার ৪০৭টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। যা সেতুটি উদ্বোধনের প্রায় ২৬ বছর পর এটিই সর্বোচ্চ টোল আদায় ও যানবাহন পারাপার হয়।
গত বছরের ২৮ জুন ২৪ ঘণ্টায় অর্থাৎ একদিনে ২৪ ঘণ্টায় সেতুর ওপর দিয়ে ৫৫ হাজার ৪৮৮টি যানবাহন পারাপার হয়েছিল। এসব যানবাহন থেকে টোল আদায় হয় ৩ কোটি ৫৮ লাখ ৪০ হাজার ২০০ টাকা। এটিই ছিল সর্বশেষ এ সেতুর টোল আদায়ের রেকর্ড।
সে বছর উত্তরবঙ্গের দিকে ৩৬ হাজার ৪৯১টি যানবাহন পার হয়। এতে টোল আদায় হয়েছিল ২ কোটি ৬ লাখ ৬৯ হাজার ৭৫০ টাকা। এ ছাড়া সেতু পশ্চিম (সিরাজগঞ্জ প্রান্ত) দিয়ে পার হয় ১৮ হাজার ৯৯৭টি যানবাহন। এতে টোল আদায়ের পরিমাণ ছিল ১ কোটি ৫১ লাখ ৭০ হাজার ৪৫০ টাকা।
১৯৯৮ সালের ২৩ জুন বঙ্গবন্ধু সেতু উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনের পর থেকেই ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়ক দিয়ে উত্তরবঙ্গের ২৩টি জেলার যানবাহন চলাচল করে। স্বাভাবিকভাবে গড়ে প্রতিদিন ১৩-১৫ হাজার যানবাহন সেতুটি দিয়ে পারাপার হয়। ঈদসহ বিভিন্ন উৎসবের ছুটিতে পরিবহনের সংখ্যা বেড়ে যায় কয়েকগুণ।
একুশে সংবাদ/যু.র/সা.আ
আপনার মতামত লিখুন :